ETV Bharat / sukhibhava

নিজের হার্ট ভাল রাখুন - কীভাবে হার্ট ভালো রাখবেন

প্রথমে যে যে কারণে হার্টের ঝুঁকি হতে পারে, অর্থাৎ রিস্ক ফ্যাক্টরগুলিকে চিহ্নিত করতে হবে । এই তালিকায় রয়েছে হাইপারটেনসন, ডায়াবিটিস, হার্টের রোগের পারিবারিক ইতিহাস, স্থুলতা প্রভৃতি ।

নিজের হার্ট ভাল রাখুন
নিজের হার্ট ভাল রাখুন
author img

By

Published : Aug 25, 2020, 12:36 PM IST

প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে যে যে স্বাস্থ্যসংকটে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃতু্য হয়, তার শীর্ষে রয়েছে কার্ডিওভাস্কুলার রোগব্যধি। কিন্তু আপনি কি আপনার হার্টের ঠিকমতো যত্ন নেন ? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 2016 সালে CVD-তে অন্তত 17.9 মিলিয়ন মানুষের মৃতু্য হয়েছিল, যা বিশ্বব্যপী মৃতু্যর নিরিখে 31 শতাংশ। এই মৃতু্যর মধে্য আবার 85 শতাংশই ছিল হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের কারণে।

আমাদের বিশেষজ্ঞ কার্ডিওলজিস্ট, ডা. এস এস মুখার্জি, MD, DM &, DNB, হায়দরাবাদের মেডিকভার হসপিটালস-এর অধিকর্তা (কার্ডিওলজি বিভাগ) এবং পালস হার্ট সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা-অধিকর্তা জানিয়েছেন,"যদিও নির্দিষ্টভাবে একে ব্যাখ্যা করা খুব কঠিন তবু আমরা বলতে পারি, সুস্থ হৃদয় সেটাই, যা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কাজ করে, যার কোনও গঠনগত বা কার্যগত অস্বাভাবিকতা নেই । সাধারণত, কোনও সুস্থ মানুষের হার্টবিট হল, কোনও অস্বাভাবিকতা ছাড়াই মিনিটে 60 থেকে 100 বার আর রক্তচাপ 120/80 (সিস্টোলিক/ডায়াস্টোলিক) । যদিও হার্টরেট দেখে হার্টের কিছু কিছু অস্বাভাবিকতা বোঝা সম্ভব নয় । সুতরাং, সেক্ষেত্রে উচিত উপসর্গ এবং বয়স বিচার করে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চেক আপ করানো ।"

হার্টের মৌলিক অবস্থাসমূহ

হার্টের ব্যধির সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক উপসর্গ বা অবস্থা রয়েছে এবং তার মধে্য কিছু ডা. মুখার্জি বর্ণনা করেছেন ।

1. ইসেমিক হার্ট ডিজিজ, যেখানে হার্টে নিজে থেকেই রক্তের সরবরাহ কমে আসে ।

2. ভালভিউলার হার্ট ডিজিজ, যেখানে হার্টের চারটি ভালভের (মিট্রাল, এওর্টিক, ট্রাইকাসপিড এবং পালমোনারি) মধে্য কোনও একটি বিকল হয়ে পড়ে ।

3. কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ, হার্টের এমন রোগ যা কারও দেহে জন্ম থেকেই থাকে ।

4. কার্ডিয়াক রিদম ডিসটার্বেন্সেস, যেখানে হার্ট গঠনগত দিক থেকে স্বাভাবিক বোধ হলেও হার্টবিট অনিয়ন্ত্রিতভাবে কখনও দ্রুত, কখনও আবার ধীর লয়ে চলে ।

5. পেরিকার্ডিয়াল ডিজিজেজ, যেখানে হার্টের আবরণী অর্থাৎ পেরিকার্ডিয়াম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে ।

6. এন্ডোকার্ডিটিস, হার্টের এক ধরনের সংক্রমণ, যা সাধারণত ভালভগুলির উপর হয় । তবে কখনও কখনও হার্টের আবরণীর উপরও হতে পারে ।

7. হার্ট ক্যানসার যা একটি বিরল ধরনের হার্টের ব্যধি ।

8. হার্টের মাংসপেশীর রোগ, যেখানে হার্টের মাংসপেশীগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে, যার ফলে একসময় হার্ট ফেলিওর হয়ে যায় ।

তাহলে কী করণীয়?

ডা. মুখার্জির পরামর্শ অনুযায়ী, প্রথমে যে যে কারণে হার্টের ঝুঁকি হতে পারে, অর্থাৎ রিস্ক ফ্যাক্টরগুলিকে চিহ্নিত করতে হবে । এই তালিকায় রয়েছে হাইপারটেনসন, ডায়াবিটিস, হার্টের রোগের পারিবারিক ইতিহাস, স্থুলতা প্রভৃতি ।

  • যে খাবার খাচ্ছেন, তাতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টরলের পরিমাণ হ্রাস করতে হবে ।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেটস, মিষ্টি এবং অ্যালকোহল সেবন করা যাবে না ।
  • তাজা ফলমূল এবং শাকসবজি, হোলগ্রেনস, ডাল এবং ড্রাইফ্রুটস খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে ।
  • ডিম খাওয়া যেতে পারে ।
  • "ডার্ক মিট"-এর (পাঁঠার মাংস) বদলে "লিন মিট" (মুরগির মাংস) খাওয়া যেতে পারে ।
  • রান্নায় তেল, ঘি, মাখনের পরিমাণ হ্রাস করতে হবে কারণ তাতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটজাতীয় পদার্থ থাকে । এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে নুন খাওয়া ত্যাগ করতে হবে । ধূমপান একেবারেই বর্জন করতে হবে ।
  • প্রতিদিন শরীরচর্চা করতে হবে, সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন তো বটেই । তা না হলে 30-45 মিনিটের মৃদু হাঁটাও উপকারী হবে ।
  • নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন । বডি মাস ইনডেক্স (BMI) 25—এর নিচে থাকলে ভালো ।
  • যথাযথ মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখুন । মানসিক চাপ বাড়লে তার প্রভাব হার্টের উপর নেতিবাচক ভাবে পড়ে ।

সুতরাং, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাস থাকলে হার্টও সুস্থ থাকবে । তাছাড়াও শরীর কখনও কোনও রকম বিপদসঙ্কেত দিলে, তা কখনও এড়িয়ে যাবেন না । সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন ।

প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে যে যে স্বাস্থ্যসংকটে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃতু্য হয়, তার শীর্ষে রয়েছে কার্ডিওভাস্কুলার রোগব্যধি। কিন্তু আপনি কি আপনার হার্টের ঠিকমতো যত্ন নেন ? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 2016 সালে CVD-তে অন্তত 17.9 মিলিয়ন মানুষের মৃতু্য হয়েছিল, যা বিশ্বব্যপী মৃতু্যর নিরিখে 31 শতাংশ। এই মৃতু্যর মধে্য আবার 85 শতাংশই ছিল হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের কারণে।

আমাদের বিশেষজ্ঞ কার্ডিওলজিস্ট, ডা. এস এস মুখার্জি, MD, DM &, DNB, হায়দরাবাদের মেডিকভার হসপিটালস-এর অধিকর্তা (কার্ডিওলজি বিভাগ) এবং পালস হার্ট সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা-অধিকর্তা জানিয়েছেন,"যদিও নির্দিষ্টভাবে একে ব্যাখ্যা করা খুব কঠিন তবু আমরা বলতে পারি, সুস্থ হৃদয় সেটাই, যা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কাজ করে, যার কোনও গঠনগত বা কার্যগত অস্বাভাবিকতা নেই । সাধারণত, কোনও সুস্থ মানুষের হার্টবিট হল, কোনও অস্বাভাবিকতা ছাড়াই মিনিটে 60 থেকে 100 বার আর রক্তচাপ 120/80 (সিস্টোলিক/ডায়াস্টোলিক) । যদিও হার্টরেট দেখে হার্টের কিছু কিছু অস্বাভাবিকতা বোঝা সম্ভব নয় । সুতরাং, সেক্ষেত্রে উচিত উপসর্গ এবং বয়স বিচার করে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চেক আপ করানো ।"

হার্টের মৌলিক অবস্থাসমূহ

হার্টের ব্যধির সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক উপসর্গ বা অবস্থা রয়েছে এবং তার মধে্য কিছু ডা. মুখার্জি বর্ণনা করেছেন ।

1. ইসেমিক হার্ট ডিজিজ, যেখানে হার্টে নিজে থেকেই রক্তের সরবরাহ কমে আসে ।

2. ভালভিউলার হার্ট ডিজিজ, যেখানে হার্টের চারটি ভালভের (মিট্রাল, এওর্টিক, ট্রাইকাসপিড এবং পালমোনারি) মধে্য কোনও একটি বিকল হয়ে পড়ে ।

3. কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ, হার্টের এমন রোগ যা কারও দেহে জন্ম থেকেই থাকে ।

4. কার্ডিয়াক রিদম ডিসটার্বেন্সেস, যেখানে হার্ট গঠনগত দিক থেকে স্বাভাবিক বোধ হলেও হার্টবিট অনিয়ন্ত্রিতভাবে কখনও দ্রুত, কখনও আবার ধীর লয়ে চলে ।

5. পেরিকার্ডিয়াল ডিজিজেজ, যেখানে হার্টের আবরণী অর্থাৎ পেরিকার্ডিয়াম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে ।

6. এন্ডোকার্ডিটিস, হার্টের এক ধরনের সংক্রমণ, যা সাধারণত ভালভগুলির উপর হয় । তবে কখনও কখনও হার্টের আবরণীর উপরও হতে পারে ।

7. হার্ট ক্যানসার যা একটি বিরল ধরনের হার্টের ব্যধি ।

8. হার্টের মাংসপেশীর রোগ, যেখানে হার্টের মাংসপেশীগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে, যার ফলে একসময় হার্ট ফেলিওর হয়ে যায় ।

তাহলে কী করণীয়?

ডা. মুখার্জির পরামর্শ অনুযায়ী, প্রথমে যে যে কারণে হার্টের ঝুঁকি হতে পারে, অর্থাৎ রিস্ক ফ্যাক্টরগুলিকে চিহ্নিত করতে হবে । এই তালিকায় রয়েছে হাইপারটেনসন, ডায়াবিটিস, হার্টের রোগের পারিবারিক ইতিহাস, স্থুলতা প্রভৃতি ।

  • যে খাবার খাচ্ছেন, তাতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টরলের পরিমাণ হ্রাস করতে হবে ।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেটস, মিষ্টি এবং অ্যালকোহল সেবন করা যাবে না ।
  • তাজা ফলমূল এবং শাকসবজি, হোলগ্রেনস, ডাল এবং ড্রাইফ্রুটস খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে ।
  • ডিম খাওয়া যেতে পারে ।
  • "ডার্ক মিট"-এর (পাঁঠার মাংস) বদলে "লিন মিট" (মুরগির মাংস) খাওয়া যেতে পারে ।
  • রান্নায় তেল, ঘি, মাখনের পরিমাণ হ্রাস করতে হবে কারণ তাতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটজাতীয় পদার্থ থাকে । এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে নুন খাওয়া ত্যাগ করতে হবে । ধূমপান একেবারেই বর্জন করতে হবে ।
  • প্রতিদিন শরীরচর্চা করতে হবে, সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন তো বটেই । তা না হলে 30-45 মিনিটের মৃদু হাঁটাও উপকারী হবে ।
  • নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন । বডি মাস ইনডেক্স (BMI) 25—এর নিচে থাকলে ভালো ।
  • যথাযথ মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখুন । মানসিক চাপ বাড়লে তার প্রভাব হার্টের উপর নেতিবাচক ভাবে পড়ে ।

সুতরাং, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাস থাকলে হার্টও সুস্থ থাকবে । তাছাড়াও শরীর কখনও কোনও রকম বিপদসঙ্কেত দিলে, তা কখনও এড়িয়ে যাবেন না । সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.