হায়দরাবাদ : এপ্রিলের শুরু থেকে ভারতে কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া মোটের উপর নিয়ন্ত্রণেই ছিল কোভিড ৷ দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কম বেশি ছিল 1000 বা তার আশেপাশে ৷ এরই মাঝে সোমবার হঠাৎই কোভিড কেস বেড়ে গিয়ে পৌঁছেছে 2,183-তে ৷ যা এ মাসে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৷ মঙ্গলবারের এই বৃদ্ধির হার 90 শতাংশ ৷ কোচির অমৃতা হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ দীপু টিএস-এর মতে, এই বৃদ্ধির কারণ হল কোভিডের ওমিক্রন স্ট্রেনের BA.2 উপ-ভ্যারিয়েন্ট । ইতিমধ্য়েই চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে শুরু করেছে (Fourth Covid Wave in India ) ৷
ডাঃ দীপু টিএস বলেন, "গত তিনদিনে, বিশেষ করে বড় মেট্রোপলিটান শহরগুলিতে আমরা সংক্রমিতের সংখ্যায় বড় বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি । এটা পরবর্তী ঢেউয়ের সূচনার ইঙ্গিত হতে পারে । মহামারির বিভিন্ন গাণিতিক মডেল ইতিমধ্যেই মে জুন মাসে সম্ভাব্য বৃদ্ধি সম্পর্কে আমাদের সতর্ক করেছে । আমার দৃঢ় বিশ্বাস সবচেয়ে খারাপ সময়টা শেষ হয়ে গিয়েছে এবং পরবর্তী তরঙ্গটি অবশ্যম্ভাবী হলেও তীব্রতা এবং মাত্রায় হালকা হবে ৷ তাই আতঙ্কের চেয়ে প্রতিরোধের মূল বিষয়গুলি নিয়ে সতর্ক হলেই সবচেয়ে ভাল হবে ৷"
কোভিড কেসের সংখ্য়া বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই বৃদ্ধি মোটেই সম্পূর্ণ অযৌক্তিক নয় ৷ কারণ স্কুল কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে এবং মাস্ক পরার নিয়মও তুলে দেওয়া হয়েছে অনেক জায়গায় ৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ সম্প্রতি মহারাষ্ট্র, কেরালা, মিজোরাম, দিল্লি এবং হরিয়ানা সরকারকে চিঠিও লিখেছেন ৷ যে রাজ্যগুলি বৃদ্ধি হয়েছে তাদের সতর্ক থাকতে, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে এবং এই উদ্বেগের এলাকাগুলিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
ফোর্টিস হাসপাতাল মুম্বইয়ের ডিরেক্টর-ক্রিটিকাল কেয়ার তথা জাতীয় কোভিড -19 টাস্কফোর্সের সদস্য ডক্টর রাহুল পণ্ডিত অবশ্য় বলেন, "গত কয়েকদিনে করোনা যেভাবে লাফিয়ে বেড়েছে তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ৷ তবে মূলত এটা কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ৷ বিশেষত দু'-তিনটে রাজ্য যেমন দিল্লি এনসিআর এবং হরিয়ানা ৷ আমি মনে করি না এটাকে আমাদের আরেকটি নতুন ঢেউ বলে মনে করা উচিত ৷ কারণ এটা একেবারেই স্থানীয় কিছু বৃদ্ধি ৷"
আরও পড়ুন :ছোট বাচ্চাদের কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ওমিক্রন
আইআইটি কানপুরের অধ্যাপক মণীন্দ্র আগরওয়াল, যাঁর গাণিতিক মডেল রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তিনিও জানান, আপাতত চতুর্থ ঢেউয়ের কোনও সম্ভবনা তিনি দেখছেন না ৷ মেদান্ত হাসপাতালের গুরগাঁওয়ের ইন্টারনাল মেডিসিনের সিনিয়র ডিরেক্টর ডাঃ সুশীলা কাটারিয়া অবশ্য় একেবার ভিন্নমত প্রকাশ করেন ৷ তাঁর দাবি, "চতুর্থ তরঙ্গ শুরু হয়েছে, কেস বাড়ছে এবং আগামী তিন সপ্তাহে বাড়তে থাকবে। আমরা ক্রমাগতভাবে চতুর্থ শিখরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি । আমরা ধারণা কেসের সংখ্যা আরও বাড়বে । ঠিক যেমন জানুয়ারিতে বেড়েছিল ৷ তবে বিষয়টি ততখানি গুরুতর হবে না ৷" তাই এবারের ঢেউয়ে হাসপাতালে ভর্তির পরিমাণও কম থাকবে বলেই মত দিয়েছেন তিনি ৷