হায়দরাবাদ: গ্রীষ্মের পরেই আসে বর্ষা ৷ গ্রীষ্মের গরম থেকে রেহাই মিললে, অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি হয় ৷ বিশেষত বর্ষা এলেই শুরু হয় যায় একগুচ্ছ শারিরীক সমস্যা ৷ শুধু যে শারিরীক সমস্যা হয় তা নয়, সেই সঙ্গে শুরু ত্বকের সমস্যাও ৷ বৃষ্টির তাই এই সময়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন ৷ বিশেষত যারা তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী এই ঋতু তাদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর ৷ বর্যায় বাতাসে আর্দ্রতা থাকে ৷ যাদের তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের সবসময়েই মুখের ত্বকে তৈলাক্ততা অনুভূত হয় ৷ তাই এই সময়ে ত্বকের সব থেকে বেশি যত্ন নেওয়া উচিত ৷ অনেকেই আছেন, যারা কেমিক্যাল এড়িয়ে যেতে চান ত্বকের যত্নের জন্য ৷ যদিও প্রতিদিনের রূপচর্চায় কেমিকালের জাতীয় দ্রব এড়িয়ে যাওয়া ভালো ৷ তবে কয়েকটি ঘরোয়া উপাদান ব্যাবহার করে আপনি পেতে পারেন মোহোময়ী ত্বক ৷
ঘরেতেই বানিয়ে ফেলুন দুধ ও মধুর ফেসওয়াশ
কী করে বানাবেন: একা চা-চামচ মধু এবং দুই টেবল চামচ দুধ একটি বাটিতে মিশিয়ে নিন ৷ মিশ্রণটি নিয়ে দু-তিন মিনিট মুখে ঘষুন ৷ এরপর ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন ৷ এই দু’য়ের সংমিশ্রণে তৈরি ফেসওয়াশ মুখের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব কমিয়ে দিয়ে, ত্বকের উজ্বল্য বাড়াবে ৷ বিশেষত যাদের সেনসেটিভ স্কিন তাদের জন্য এই ফেসওয়াশ অত্যন্ত উপকারী ৷
মুসুরডাল ও দুধের স্ক্রাব
কী করে বানাবেন: কাঁচা দুধ মুখের সবথেকে ভালো ক্লিনজার ৷ এটি সঙ্গে মুসুরডাল বাটা মেশালে সব থেকে ভালো স্ক্র্যাবার তৈরি হয় ৷ পরিমাণ মতো মুসুরডাল নিয়ে একটি বাটিতে সারারাত জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন ৷ এরপর দুধের সঙ্গে মুসুরডাল বাটা মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ বানিয়ে মুখ ও গলায় স্ক্রাব্য়ারের মতো ব্যবহার করা যেতে পারে ৷ মিশ্রণটি 10 মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে দিন ৷ সপ্তাহে দু‘তিন দিন অনায়াসেই ব্যাহার করতে পারেন মিশ্রণটি ৷ তাছাড়া মুসুরডাল এবং দুধ ত্বকের উজ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে ৷
শশা দিয়ে তৈরি ফেস প্যাক
কী করে বানাবেন: একটি শসা নিয়ে সেটি অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন ৷ একটিকে ফেস প্যাকের মতো মুখে লাগিয়ে 15 মিনিট ছেডে দিন ৷ শুকিয়ে গেলে ঈষদুষ্ণ দলে ধুয়ে পড়ুন ৷
উপকারিতা:
অ্যালোভেরা এবং শসায় থাকা ঠান্ডা উপাদান ত্বকের জ্বালা-পোড়া কমাত সাহায্য করে ৷ গ্রীষ্মের ট্যান পড়ে যাওয়া ত্বকে প্যাক অত্যন্ত উপকারী ৷ এই প্যাক ব্যবহারে স্কিন সজীব হয়ে ওঠে ৷
হাইড্রেশন: অ্যালোভেরা জেল ও শসায় থাকা জলীয় পদার্থ ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে ৷ ত্বকের উজ্বল্য বাড়তে থাকে ৷ প্রতিদিনের ঘরোয়া রূপচর্চায় ব্যবহার করতে পারেন এই উপাদানগুলি ৷
রূপ চর্চার উপকরণে ওটস ও মুসুর ডাল
কী কী লাগবে: আধ কাপ ওটস, এক কাপ মুসুর ডাল, চাল গুড়ি, 8-9টি আলমন্ড, এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো, প্রয়োজন মতো গোলাপ জল ৷
কী করে বানাবেন: সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে গোলাপজল দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন ৷ মুখ, গলা, হাত, ঘাড়ে ফেসপ্যাকের মতো লাগিয়ে রাখাতে পারেন ৷ প্যাকটি লাগিয়ে 15-20 মিনিট রেখে দিন ৷ শুকিয়ে গেলে ধুরে ফেলুনন ৷ হালকা হাত মুছে নিন ৷ বুজতে পারেন ত্বকের কোমলত্ব কতাট বেড়েছে ৷ প্রতিদিন ওটসের ব্যাবহারে কারণে ত্বক নরম নয় এবং উজ্বলতা বাড়ে ৷
গোলাপের পাপড়ি দিয়ে তৈরি ময়েশ্চারাইজার:
কী কী লাগবে: এককাপ গোলাপের পাপড়ি, এক কাপ গোলাপ জল ও অ্যালোভেরা জেল
কী করে বানাবেন: একটি কাঁটের বাটিতে সমস্ত উপকরণগুলি একসঙ্গে নিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে ৷ দু‘ চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিন মিশ্রণটিতে ৷ ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় মিশ্রণটি রেখে দিন ৷ মিশ্রণটি সাধারণ তাপমাত্রায় চলে এলে সেটি একটি কাচের জারে ভরে ফ্রিজে রাখতে পারেন ৷ প্রতিদিনের ময়েশ্চারাইজার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন ৷ ত্বকের কালো ছোপ দূর করতে অত্যন্ত উপরকারী ৷ এটি ময়েশ্চারাইজারটি 15-20 দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায় ৷
তাই আর দেরি করে আজ থেকেই শুরু করে দিন বর্ষা কালের বিশেষ রূপচর্চা ৷ আর পেয়ে যান মোহমোয়ী ত্বক ৷ মুখই মনের আয়না ৷ দাগহীন ত্বক পেতে একটু তো পরিশ্রম করতেই হবে!