রায়গঞ্জ, 5 অক্টোবর: পুজোর ক'টা দিন মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ । উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ (Raiganj Durga Puja) শহরের সেনবাড়ির দুর্গাপুজোয় (Sen Family Puja) এটাই বিধান ৷ তিন শতাধিক বছর ধরে এটাই হয়ে আসছে । মন্দিরের বাইরে চাতালে দাঁড়িয়ে মায়ের দর্শন করতে হয় সেন বাড়ির মা-বোনেদের । আর সেই নিয়মই আজও মানা হয় একদা বাংলাদেশের জমিদার বাড়ির পুজোয় । পরিবারে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে, সে কারণেই নাকি পরিবারের সকলে এই রীতি মেনে চলছেন ।
উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রাচীন বনেদি বাড়ির পুজোর মধ্যে রায়গঞ্জ শহরের সুদর্শনপুরের সেন বাড়ির দুর্গাপুজো অন্যতম । ওপার বাংলার যশোরের জমিদার তারিণীমোহন সেনের পূর্ব পুরুষেরা এই দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন । এরপর তাঁদের বংশধর সুরেন্দ্রনাথ সেন পুজো করছেন বাংলাদেশেই । এখন আর বাংলাদেশে নেই জমিদারি প্রথা । সেখানকার সব পাট চুকিয়ে তাঁরা চলে এসেছেন এপার বাংলার রায়গঞ্জ শহরে ।
আরও পড়ুন: Durga Puja : সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে অনলাইনে টালা প্রত্যয়ের দুর্গাপুজো
রায়গঞ্জের সুদর্শনপুরের বাড়ির পুজোও এবার 76 বছরে পদার্পণ করল । সপ্তমী থেকে নবমী আজও বলি প্রথা চালু রয়েছে সেন বাড়ির দুর্গাপুজোয় । সেন বাড়ির পুজোয় অংশ নিতে পারেন না বাড়ির কোনও মহিলা । পূর্বপুরুষদের আমল থেকে চলা এই রীতিই আজও মেনে চলেছেন সবাই । কোনও এক সময় বলি চলাকালীন পরিবারের কোনও মহিলার অঘটন ঘটে । সেই থেকেই নাকি মহিলাদের বাড়ির দুর্গাপুজোর মণ্ডপে প্রবেশ নিষিদ্ধ ।
আরও পড়ুন : Mankundu Durga Puja: মানকুণ্ডুর খাঁ বাড়িতে অষ্টধাতুর দেবী ‘জয়দুর্গা’ রূপে পূজিত হন
যদিও সেন বাড়ির বর্তমান কর্ণধার ভজন সেন জানিয়েছেন, তাঁদের পুজোয় বলি হয় দেখেই মা-বোন-সহ বাড়ির মহিলারা পুজোর চারটে দিন মণ্ডপে থাকেন না । একান্নবর্তী এই সেন পরিবারের বহু সদস্যই কর্মসূত্রে এখন ভিনরাজ্যে এমনকী ভিনদেশেও থাকেন ৷ কিন্তু পুজো শুরু হলেই সকলে ছুটে আসেন রায়গঞ্জ সুদর্শনপুরের বাড়িতে । এই সেন বাড়ির পুজো তিনশো বছর পার হলেও একবারের জন্যও পুজো বন্ধ হয়নি । এমনকী পরিবারের কোনও সদস্যের মৃত্যু ঘটলেও কোনওদিন সেন বাড়ির দুর্গাপুজো বন্ধ থাকেনি বলে জানিয়েছেন পরিবারের কর্তা ভজন সেন ।
আরও পড়ুন : London Durga Puja : ফের মিলছে প্রবাসের বরাত, ছন্দে ফিরছে কুমোরটুলি