রায়গঞ্জ, 9 ডিসেম্বর : স্বামী ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী ৷ ব্যাঙ্ক আর ইনকাম ট্যাক্স দপ্তরের বেড়াজালে পড়ে প্রায় না খেয়েই দিন কাটছে বেলারানি মুখোপাধ্যায়ের ৷ অভিযোগ, স্বাধীনতা সংগ্রামীর বিধবা হিসেবে পাওয়া পেনশনের অধিকাংশ ভাগই প্রতিমাসে কেটে নিচ্ছে ইনকাম ট্যাক্স । বৃদ্ধা বারংবার অভিযোগ করেছেন ৷ মিলেছে আশ্বাসও ৷ তবে সুরাহা পাচ্ছেন না ৷ চার্টাড অ্যাকাউনটেন্ট শ্যাম আগরওয়ালের কথায়, এভাবে ইনকাম ট্যাক্সের টাকা কাটার কোনও নিয়ম নেই । তবুও কেন ইনকাম ট্যাক্স টাকা কাটছে তার কোনও জবাব নেই ৷
রায়গঞ্জের দক্ষিণ বীরনগর এলাকার প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী স্বদেশরঞ্জন মুখোপাধ্যায় ৷ উত্তর দিনাজপুর জেলার বেশিরভাগ মানুষই চেনেন তাঁকে । পেয়েছিলেন তাম্রফলক পুরস্কার ৷ 2003 সালের 11 অগাস্ট তিনি প্রয়াত হন । একমাসের মধ্যেই তাঁর পেনশন অ্যাকাউন্ট পারিবারিক পেনশন অ্যাকাউন্টে পরিবর্তিত হয় । এরপর তাঁর স্ত্রী বেলারানিদেবীর সরকারি অনুদান পাওয়া শুরু হয়ে যায় । সবকিছু ঠিকই চলছিল ৷ আচমকা 2019 সালের অক্টোবরে বেলারানিদেবীর পেনশন অ্যাকাউন্ট থেকে পেনশনের বেশিরভাগ টাকা ইনকাম ট্যাক্স বাবদ কাটা যেতে থাকে । ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর এই ঘটনা আর ঘটবে না বলে আশ্বাসও মেলে ৷ কিন্তু নভেম্বরেও ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে বলে অভিযোগ । ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি বিষয়টি ইনকাম ট্যাক্সের সমস্যা । ইনকাম ট্যাক্স দপ্তরেও ছুটে যান অশীতিপর বৃদ্ধা বেলারানিদেবী ৷ কিন্তু সেখান থেকে আবার ব্যাঙ্কের ঘাড়েই দোষ চাপানো হয় ৷ উলটে বলা হয় বিষয়টি ব্যাঙ্কের সমস্যা ৷ যা টাকা কাটা হয়েছে সেই টাকা এপ্রিলের মধ্যে অ্যাকাউন্টে ফেরতের আশ্বাস দেন ইনকাম ট্যাক্সের আধিকারিকরা । কিন্তু তারপরও ডিসেম্বরে একইভাবে বৃদ্ধার অ্যাকাউন্ট থেকে ইনকাম ট্যাক্স টাকা কেটে নিয়েছে বলে অভিযোগ ৷
বেলারানিদেবীর ছেলেও তেমন কিছু করে না ৷ টুকটাক ইলেকট্রিকের কাজ করেন ৷ তাও কখনও কাজ থাকে কখনও থাকে না ৷ 3 মাস ধরে বিনা চিকিৎসা ও বিনা ওষুধে দিনযাপন করছেন বলে মন্তব্য করেন বেলারানিদেবী ৷ সব মিলিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বেলারানিদেবী ও তাঁর পরিবার ৷ একজন তাম্রফলক পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামীর বৃদ্ধা স্ত্রীর এই অবস্থার দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে না কেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷