রায়গঞ্জ (উত্তর দিনাজপুর), 22 মার্চ : আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী খুঁজতে পরোক্ষে তৃণমূলের উপরেই নির্ভর করতে হল কংগ্রেসকে । একাধিকবার অনুরোধ করার পরেও দলের কেউ প্রার্থী হতে রাজি হননি একদা কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি কালিয়াগঞ্জে ৷ অগত্যা পদত্যাগী তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রভাস সরকারকে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার প্রার্থী ঘোষণা করল কংগ্রেস । বাম-কংগ্রেস জোট তথা সংযুক্ত মোর্চার এমনই দুর্দশার ছবি উঠে এল 2021 বিধানসভা নির্বাচনে ৷ যদিও বাম-কংগ্রেস জোটের দাবি, প্রভাস সরকার তৃণমূলের কোনও সাংগঠনিক দায়িত্বে ছিলেন না।
প্রসঙ্গত, 2006-2016 পর্যন্ত বিধানসভা নির্বাচনে পর পর তিনবার বিধায়ক হয়েছিলেন প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী ঘনিষ্ঠ অধ্যাপক প্রমথনাথ রায়। 2018 সালে মারা যান কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায় । 2019 সালে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী করে প্রয়াত বিধায়ক কন্যা ধৃতশ্রী রায়কে। কিন্তু উপনির্বাচনে জয়ী হন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী । অনেকটা পেছনে থেকেই তৃতীয় স্থান পায় কংগ্রেস । এবার 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ মিলে সংযুক্ত মোর্চা নামে জোট করেছে। এই পরিস্থিতিতে রায়গঞ্জ বিধানসভা সহ জেলার অন্যান্য কেন্দ্রগুলিতে বেশ কিছুদিন আগেই কংগ্রেস প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়েছে ৷ কিন্তু, প্রার্থীর অভাবে কংগ্রেস কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনটি ফাঁকা ছিল ৷
সূত্রের খবর, কংগ্রেস বহু চেষ্টা করলেও গত উপনির্বাচনের প্রার্থী ধৃতশ্রী রায় ভোটে দাঁড়াতে রাজি হননি। ভোটে দাঁড়াতে রাজী হননি কালিয়াগঞ্জে প্রিয়রঞ্জন ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা তুলসী জয়সওয়ালও । হন্যে হয়ে প্রার্থী খুঁজছিল জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। অগত্যা তৃণমূল ছেড়ে সদ্য কংগ্রেসে আসা শিক্ষক প্রভাস সরকারকে সংযুক্ত মোর্চার কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রাক্তন তৃণমূল নেতাকে জোটের প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত বুমেরাং হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে উত্তর দিনাজপুরের রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন : পরিবার পিছু 5700 টাকা করে মাসিক আর্থিক প্যাকেজের প্রতিশ্রুতি অধীরের
বোচাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হলদিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় স্কুল শিক্ষক তথা কংগ্রেস প্রার্থী প্রভাস সরকার বলেন, ‘‘আমার বাবা 15 বছরে গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। আমি কংগ্রেস পরিবারের সদস্য। 2014 সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছিলাম । কালিয়াগঞ্জ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি ছিলাম। কংগ্রেস পরিবারের সদস্য হিসেবে আবারও কংগ্রেসেই ফিরে এলাম । মাসখানেক আগে তৃণমূলের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।’’ জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পবিত্র চন্দ জানিয়েছেন, প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। অন্যান্যদের থেকে বর্তমান প্রার্থী অনেক বেশি লড়াই দিতে পারবেন৷ তাই তাঁকে কংগ্রেস প্রার্থী নির্বাচিত করা হয়েছে ৷