ETV Bharat / state

Sayan Saha 11th in HS : জল বিক্রি করে পড়াশোনা, গাইঘাটার সায়ন উচ্চমাধ্যমিকে একাদশ স্থানাধিকারী

বাবা শয্যাশায়ী ৷ সংসারের হাল ধরতে মা ঝুমা সাহা বাদাম প্যাকিংয়ের কাজ করেন ৷ তাই নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই বহন করেছে গাইঘাটার চাঁদপাড়া বাণী বিদ্যাবিথী স্কুল উচ্চমাধ্যমিকে কমার্সের ছাত্র সায়ন সাহা ৷ জল বিক্রি করে সে ৷ সেই সায়ন এবার উচ্চমাধ্যমিকে একাদশ স্থান অধিকার করেছেন (Water Seller Sayan Saha from Gaighata Ranked 11th in Higher Secondary) ৷

Water Seller Sayan Saha from Gaighata Ranked 11th in Higher Secondary
Water Seller Sayan Saha from Gaighata Ranked 11th in Higher Secondary
author img

By

Published : Jun 12, 2022, 8:41 PM IST

গাইঘাটা (উত্তর 24 পরগনা), 12 জুন : মায়ের স্বপ্নপূরণ করতে হবে ৷ সেই লক্ষ্যে মনের জোরে নানাবিধ প্রতিকূলতা পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে একাদশ হয়েছেন উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটার চাঁদপাড়ার সায়ন সাহা (Sayan Saha 11th in HS) ৷ তাঁর প্রাপ্ত নম্বর 488 ৷ সায়ন চাঁদপাড়া বাণী বিদ্যাবিথী উচ্চবিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র ৷ বাড়ি বাড়ি জল বিক্রি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে সে ৷ সায়নের বাবা গত সাত বছর ধরে শয্যাশায়ী ৷ সংসারের হাল সামলাতে মা ঝুমা সাহা বাদাম প্যাকিংয়ের কাজ করেন ৷ সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে ভাল ফল করায় খুশি সায়নের পরিবার এবং তাঁর শিক্ষক-শিক্ষিকারা (Water Seller Sayan Saha from Gaighata Ranked 11th in Higher Secondary) ৷

সায়নের মা ঝুমা সাহা জানান, স্টোক হওয়ার পর তাঁর স্বামী প্রায় 7 বছর শয্যাশায়ী ৷ সংসারের হাল ধরতে বাদাম প্যাকিংয়ের কাজ শুরু করেছেন তিনি ৷ কিন্তু সেই আয়ে সংসার চালানো খুবই কঠিন ৷ তবে, ঝুমা সাহার শাশুড়ি তাঁদের খুবই সহযোগিতা করেন ৷ সায়নের পড়াশোনার খরচ তিনিই চালান ৷ কিন্তু, তিনিও সব ক্ষেত্রে পেরে ওঠেন না ৷ সেই কারণে নিজের পড়াশোনার খরচ ও সংসারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে সায়ন বাড়ি-বাড়ি জল দেওয়া শুরু করেন ৷ তার মাঝেও সময় করে পড়াশোনা করত সায়ন ৷

সায়নের স্কুল বাণী বিদ্যাবিথীর প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, "সায়নের জন্য আমরা গর্বিত ৷ এর মধ্যেও একটু আশাহত ৷ কারণ, কাউন্সিলের মেধাতালিকায় যাঁরা দশম হয়েছে তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর 489 ৷ আর সায়নের প্রাপ্ত নম্বর 488 অর্থাৎ, এক নম্বরের জন্য সে দশম স্থানে যেতে পারেনি ৷ তাই একটু খারাপ লাগা ৷ সায়নের আগামী ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হোক, তাঁর সাফল্য কামনা করি ৷ আমরা সব সময় সায়নের পাশে আছি ৷’’

জল বিক্রি করে পড়াশোনা চালিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে একাদশ গাইঘাটার সায়ন

আরও পড়ুন : Sundarbans Students in HS Merit List: উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় সুন্দরবন এলাকার 13 জন পড়ুয়া

আর যাকে নিয়ে এত আলোচনা সেই সায়ন সাহা কী বলছে ? সায়ন জানান, ‘‘মায়ের সামান্য আয়ের মধ্য থেকে প্রতিমাসে বাবার জন্য দেড় হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয় ৷ তাই, নিজের খরচ চালাতে পড়াশোনার ফাঁকে রাত দশটার পর লোকের বাড়িতে জল দিতে যেতাম ৷ ঠাকুমাও আমার পড়াশোনার জন্য অনেক সহযোগিতা করতেন ৷ বাবা যেহেতু কিছুই করেন না তাই মায়ের মুখে হাঁসি ফোটাতে গেলে আমাকে কিছু করতে হবে ৷ ছোট বোনের দায়িত্ব নিতে হবে ৷ এই ভাবনাই আমার মনোবল বাড়িয়ে দিত ৷ তাই আমি কোনও দিকে না তাকিয়ে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি ৷"

সায়নের ইচ্ছে আগামী দিনে কমার্স নিয়ে গোয়েঙ্কা কলেজ পড়ার ৷ তবে, উচ্চশিক্ষার জন্য আর্থিক সমস্যা তাঁকে ভাবাচ্ছে ৷ তাই সায়ন এবং তাঁর পরিবারের দাবি, প্রশাসন যদি তাঁদের পাশে দাঁড়ায়, তা হলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে উপকার হবে ৷ সায়নের পড়াশোনায় সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস ৷ তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করব এবং ছেলেটার পড়াশোনার সাহায্যের জন্য আবেদন জানাব ৷’’

গাইঘাটা (উত্তর 24 পরগনা), 12 জুন : মায়ের স্বপ্নপূরণ করতে হবে ৷ সেই লক্ষ্যে মনের জোরে নানাবিধ প্রতিকূলতা পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে একাদশ হয়েছেন উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটার চাঁদপাড়ার সায়ন সাহা (Sayan Saha 11th in HS) ৷ তাঁর প্রাপ্ত নম্বর 488 ৷ সায়ন চাঁদপাড়া বাণী বিদ্যাবিথী উচ্চবিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র ৷ বাড়ি বাড়ি জল বিক্রি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে সে ৷ সায়নের বাবা গত সাত বছর ধরে শয্যাশায়ী ৷ সংসারের হাল সামলাতে মা ঝুমা সাহা বাদাম প্যাকিংয়ের কাজ করেন ৷ সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে ভাল ফল করায় খুশি সায়নের পরিবার এবং তাঁর শিক্ষক-শিক্ষিকারা (Water Seller Sayan Saha from Gaighata Ranked 11th in Higher Secondary) ৷

সায়নের মা ঝুমা সাহা জানান, স্টোক হওয়ার পর তাঁর স্বামী প্রায় 7 বছর শয্যাশায়ী ৷ সংসারের হাল ধরতে বাদাম প্যাকিংয়ের কাজ শুরু করেছেন তিনি ৷ কিন্তু সেই আয়ে সংসার চালানো খুবই কঠিন ৷ তবে, ঝুমা সাহার শাশুড়ি তাঁদের খুবই সহযোগিতা করেন ৷ সায়নের পড়াশোনার খরচ তিনিই চালান ৷ কিন্তু, তিনিও সব ক্ষেত্রে পেরে ওঠেন না ৷ সেই কারণে নিজের পড়াশোনার খরচ ও সংসারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে সায়ন বাড়ি-বাড়ি জল দেওয়া শুরু করেন ৷ তার মাঝেও সময় করে পড়াশোনা করত সায়ন ৷

সায়নের স্কুল বাণী বিদ্যাবিথীর প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, "সায়নের জন্য আমরা গর্বিত ৷ এর মধ্যেও একটু আশাহত ৷ কারণ, কাউন্সিলের মেধাতালিকায় যাঁরা দশম হয়েছে তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর 489 ৷ আর সায়নের প্রাপ্ত নম্বর 488 অর্থাৎ, এক নম্বরের জন্য সে দশম স্থানে যেতে পারেনি ৷ তাই একটু খারাপ লাগা ৷ সায়নের আগামী ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হোক, তাঁর সাফল্য কামনা করি ৷ আমরা সব সময় সায়নের পাশে আছি ৷’’

জল বিক্রি করে পড়াশোনা চালিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে একাদশ গাইঘাটার সায়ন

আরও পড়ুন : Sundarbans Students in HS Merit List: উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় সুন্দরবন এলাকার 13 জন পড়ুয়া

আর যাকে নিয়ে এত আলোচনা সেই সায়ন সাহা কী বলছে ? সায়ন জানান, ‘‘মায়ের সামান্য আয়ের মধ্য থেকে প্রতিমাসে বাবার জন্য দেড় হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয় ৷ তাই, নিজের খরচ চালাতে পড়াশোনার ফাঁকে রাত দশটার পর লোকের বাড়িতে জল দিতে যেতাম ৷ ঠাকুমাও আমার পড়াশোনার জন্য অনেক সহযোগিতা করতেন ৷ বাবা যেহেতু কিছুই করেন না তাই মায়ের মুখে হাঁসি ফোটাতে গেলে আমাকে কিছু করতে হবে ৷ ছোট বোনের দায়িত্ব নিতে হবে ৷ এই ভাবনাই আমার মনোবল বাড়িয়ে দিত ৷ তাই আমি কোনও দিকে না তাকিয়ে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি ৷"

সায়নের ইচ্ছে আগামী দিনে কমার্স নিয়ে গোয়েঙ্কা কলেজ পড়ার ৷ তবে, উচ্চশিক্ষার জন্য আর্থিক সমস্যা তাঁকে ভাবাচ্ছে ৷ তাই সায়ন এবং তাঁর পরিবারের দাবি, প্রশাসন যদি তাঁদের পাশে দাঁড়ায়, তা হলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে উপকার হবে ৷ সায়নের পড়াশোনায় সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস ৷ তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করব এবং ছেলেটার পড়াশোনার সাহায্যের জন্য আবেদন জানাব ৷’’

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.