বেলঘড়িয়া, 11 জানুয়ারি: ফাঁকা সিলিন্ডার বাইরে বের করে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাকে ডেকে বলে গিয়েছিলেন গ্যাসের অফিস থেকে লোক এলে তাঁকে যেন সিলিন্ডারটি দিয়ে দেন ৷ এই বলে নিজের ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে আটকে বেরিয়ে পড়েন পেশায় আর্টিস্ট সজল চৌধুরী ৷ এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই স্থানীয় একটি পুকুর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ (Unnatural Death of 3 Siblings From Same Family in Belgharia) ৷
মঙ্গলবারের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় বেলঘড়িয়ার ছায়ানীড় অ্যাপার্টমেন্টে ৷ এই আবাসনেই একেবারে নিচের তলায় আড়াই বছর ধরে দাদা বিমল ও দিদি রানু চৌধুরীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন সজল চৌধুরী ৷ দাদা বিমল চৌধুরী তেমন কিছু করতেন না ৷ দিদিও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী ৷ পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন সজল ৷ প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, আর্টিস্টের কাজ করা সজল পাড়ার লোকের সঙ্গে কখনও খারাপ ব্যবহার করেননি ।
আরও পড়ুন : বাড়ির উপর উলটে গেল লরি, শিশু-সহ মৃত একই পরিবারের 3, আহত 2
এমনকী এই ঘটনার আগের দিন রাতে বাড়ির পরিচারিকার সমস্ত পয়সা মিটিয়ে দেন সজলবাবু ৷ ঘটনার দিন সকাল আটটা নাগাদ পাশের ঘরের বাসিন্দা রাধামাধব সাহাকে ডেকে বলে যান গ্যাসের অফিস থেকে লোক আসতে পারে । আপনি ফাঁকা সিলিন্ডারটা তাঁকে দিয়ে দেবেন ৷ এরপরই ঘরের ছিটকিনি বাইরে থেকে আটকে বেরিয়ে যান ৷ এরপরই বেলা 11টা নাগাদ পাশের একটি পুকুর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয় ৷
খবর পেয়ে পুলিশ এসে সজলবাবুর দেহ উদ্ধার করে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে আসার পর দেখতে পান বাকি দুই ভাইবোন বিছানায় শুয়ে রয়েছেন । অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায় সন্দেহ হয় ৷ এরপর দেখা যায় তাঁদের দেহ শক্ত হয়ে গিয়েছে । পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সোমবার রাতেই খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে অথবা শ্বাসরোধ করে মেরে মঙ্গলবার নিজে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন ৷ তবে পাড়ার লোকেদের কথায় জানা গিয়েছে, তিনি অনেক টাকা ধার করেছিলেন দিদির চিকিৎসার জন্য । কিন্তু তাতেও কোনও পরিবর্তন না হওয়ায় অবসাদে এই কাজ করেছেন তিনি ৷ যদিও পুলিশের বক্তব্য, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে ৷
আরও পড়ুন : শরীর-মন নিয়ে নাজেহাল ? ভরসা রাখুন মিউজিক থেরাপিতে