মিনাখাঁ, 6 জুন : ত্রাণ বণ্টন নিয়ে দলবাজি বা দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না । শুক্রবারই দলের নেতা বিধায়কদের আমফানে ত্রাণ বণ্টন নিয়ে সাবধান করে ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গতকাল দলীয় নেতা ও বিধায়কদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন তিনি । ত্রাণ বণ্টন নিয়ে দলের একাংশ নেতা দুর্নীতি করার ফলে তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলেও তিনি সবাইকে সাবধান করে দেন । কিন্তু নেত্রীর কথা শুনছেন না অনেকে । শনিবার আমফানে দুর্গতদের ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের এক বুথ সভাপতির বাড়ি ভাঙচুর করল গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামাতে হল RAF। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার মিনাখাঁ ব্লকের আটপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উচিলদহ গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত 20 মে ঘূর্ণিঝড় আমফানে উত্তর 24 পরগণায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাতে বাদ যায়নি মিনাখাঁ ব্লকও। দুর্গত পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে 20 হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ক্ষতিপূরণের জন্য উপভোক্তাদের নামের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ, আটপুকুর পঞ্চায়েতের উচিলদহ বুথের তৃণমূল সভাপতি অখিল মিশ্র টাকা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকায় দুর্নীতি করেছেন। তাতে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন স্থানীয় উচিলডাঙার বাসিন্দারা। শনিবার দুপুরে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা অন্যকে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে দুর্গতরা অখিলবাবুর বাড়ি ঘেরাও করে। তারপর শুরু হয় বেপরোয়া ভাঙচুর। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তৃণমূল সভাপতি অখিলবাবু আমফানের প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নাম বাদ দিয়ে অন্যদের নাম তালিকায় ঢুকিয়েছেন। কাটমানির বিনিময়ে তিনি তালিকা তৈরি করেছেন বলে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা স্বজনপোষণের অভিযোগও তুলেছে। স্থানীয় বাসিন্দা নন্দদুলাল দাস বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্তদের নামের ষে তালিকা তৈরি হয়েছে, তাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। যাদের দোতলা বাড়ি, ঝড়ে কোনও ক্ষতিই হয়নি, তাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে। অথচ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা অনেকেই বাদ পড়েছে। আমরা চাই, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি টাকা পাক। আর ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা পড়ুক।'
শাসক দলের বুথ সভাপতির বাড়িতে হামলার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি পুলিশ ঘটনাস্থানে পৌঁছয়। কিন্তু বিক্ষোভের ব্যাপকতা দেখে নামানো হয় RAF । অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অখিলবাবু বলেন, 'অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শুধুমাত্র সন্দেহের বশে গ্রামবাসীরা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। ওদের কাছে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ নেই। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা কেউ বাদ যাবে না। তাঁরা ঘরের টাকা পাবেন।' পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।