মধ্যমগ্রাম, 14 জুন: মনোনয়ন জমা দিতে এসে বুধবার বাধা ও হামলার মুখে পড়লেন আইএসএফের কর্মী সমর্থকদের একাংশ । চলল গাড়ি ভাঙচুরও ৷ এমনই অভিযোগ ঘিরে বুধবার সরগরম হয়ে উঠল মধ্যমগ্রামের কেমিয়া-খামারপাড়া এলাকা । আইএসএফের অভিযোগ, কেমিয়া-খামারপাড়া এলাকায় বহিরাগত দুষ্কৃতীদের জড়ো করে রেখেছে তৃণমূল ।তাঁদের প্রত্যেকের হাতেই রয়েছে বাঁশ, লাঠি । ফলে ফেরার পথে ফের হামলার আশঙ্কা করছেন আইএসএফ নেতৃত্ব । যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা আইএসএফের বিরুদ্ধেই কুৎসার অভিযোগ এনেছে শাসকশিবির ।
তবে বাধা বিপত্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশি নিরাপত্তায় আইএসএফ প্রার্থীরা এদিন মনোনয়ন জমা দেন বারাসত 2 নম্বর ব্লক বিডিও অফিসে ।
পঞ্চায়েত ভোটে উত্তর 24 পরগনা জেলায় বিরোধীরা যাতে নির্বিঘ্নে মনোনয়ন জমা দিতে পারে, সেই বিষয়ে দলীয় নেতাদের পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ।এমনকী বিরোধীদের মনোনয়নে কেউ বাধা দিলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করতেও দু'বার ভাববেন না তিনি । এমন কড়া বার্তাও দলের গোপন বৈঠকে অভিষেক দিয়েছেন বলে খবর তৃণমূল সূত্রে ।
কিন্তু তাঁর কড়া মনোভাবের পরও জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিরোধীদের মনোনয়নে সেই বাধা দেওয়ার চেনা ছবি ধরা পড়েছে । কোথাও কোথাও তো আবার হামলার মুখেও পড়তে হয়েছে বিরোধী প্রার্থীদের । যার জেরে রক্তও ঝরেছে । প্রতিক্ষেত্রেই অভিযোগের তির শাসকদলের দিকে । মঙ্গলবার মনোনয়ন তুলতে এসে বিডিও অফিসেই তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হতে হয় আইএসএফের এক মহিলা প্রার্থীকে । সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার ফের ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের প্রার্থীদের বাধার মুখে পড়তে হল বিডিও অফিসের ঠিক 200 মিটারের মধ্যে । এক্ষেত্রেও কাঠগড়ায় সেই তৃণমূল ।
জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে মধ্যমগ্রামের চণ্ডীগড়-রোহণ্ডা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আইএসএফ প্রার্থীরা গাড়ি করে কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে আসছিলেন বারাসত 2 নম্বর ব্লক বিডিও অফিসে । কেমিয়া-খামারপাড়ায় আসার পর কর্মী-সমর্থকরা গাড়ি থেকে নেমে বিডিও অফিসের দিকে যেতে শুরু করেন দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে ।
অভিযোগ, সেই সময় সুযোগ বুঝে গাড়ির উপর অতর্কিতে হামলা চালায় তৃণমূল দুষ্কৃতীরা । গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে দেওয়া হয় । মারধর করা হয় চালককেও । কোনওরকমে ভাঙা গাড়ি নিয়েই সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচেন আক্রান্ত চালক । শুধু তাই নয়, বিডিও অফিসের পাশেও তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়ে আইএসএফ কর্মীদের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ । যার জেরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে । যদিও, প্রশাসনের দাবি কোনও অশান্তি ছাড়াই এদিন সুষ্ঠুভাবে মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে বিডিও অফিসে ।
আরও পড়ুন : মনোনয়নপত্র পেশ করাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত আইএসএফের মহিলা প্রার্থী
এই ঘটনায় আইএসএফের মধ্যমগ্রাম বিধানসভার সভাপতি শেখ বাপি আলি বলেন,"ভোটে অশান্তি পাকানোর সবরকম চেষ্টা করছে তৃণমূল । তার মধ্যেও এদিন আমরা গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ মিলিয়ে 28টি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছি । এটা অবশ্য সম্ভব হয়েছে পুলিশের সহায়তায় ।"
যদিও আইএসএফের এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চায়নি শাসক শিবির । এই বিষয়ে চণ্ডীগড়-রোহণ্ডা অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি শাকিব আহমেদ বলেন,"বিরোধীদের কাজ শুধু কুৎসা করা । আইএসএফকে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি । আমরা অশান্তি করলে ওরা(আইএসএফ)তো এতো মনোনয়ন তুলতো পারত না ৷ ওরা নিজেরাই গাড়ি ভাঙচুর করে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে । ওদের অভিযোগের কোনও বাস্তবতা নেই ৷"