বসিরহাট, 23 মে : ঘূর্ণিঝড় যশের মোকাবিলার চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করতে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন উত্তর 24 পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা । রবিবার বসিরহাট মহকুমাশাসকের দফতরে দুপুর থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা প্রশাসনিক বৈঠক চলে ৷ বৈঠকে পুলিশ প্রশাসন সহ সেচ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন । এছাড়াও ছিলেন বিডিও, মহকুমাশাসক সহ বিভিন্ন পৌরসভার প্রশাসকরাও ।
ঘূর্ণিঝড় যশের মোকাবিলায় কীভাবে সমস্ত বিভাগের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কাজ করা হবে তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর । এমনকি প্রাকৃতিক বিপর্যয় আছড়ে পড়ার পর যাতে কাজের ক্ষেত্রে কোনও শিথিলতা দেখা না দেয় তা নিয়েও স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে । আমফান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আগেভাগেই যশের মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার । সতর্ক করা হয়েছে উপকূলবর্তী তিন জেলা পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মানুষকে । সতর্ক করা হয়েছে ওই তিন জেলার প্রশাসনকেও । ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ইতিমধ্যে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে । সেই মত কাজে নেমে পড়েছে জেলা প্রশাসন ।
ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নদী বাঁধগুলোর উপরও বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে । এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যাধরী, কালিন্দী, বেতনী ও ইছামতি নদীর একাংশের বাঁধ মেরামতের কাজেও হাত দিয়েছে সেচ বিভাগ । বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ ও বিদ্যুৎ বিভাগকেও সজাগ থাকতে বলা হয়েছে । এসবের মধ্যেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করতে এদিন বসিরহাটে মহকুমাশাসকের দফতরে প্রশাসনিক বৈঠক সারেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা ।
আরও পড়ুন : কিছুটা কমল সংক্রমণ, বাড়ছে সুস্থতার হার; চিন্তা বাড়াচ্ছে মৃত্যু
বৈঠক শেষে তিনি বলেন, "ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে । দুর্গতদের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া, বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলে দ্রুততার সঙ্গে তার ব্যবস্থা করা । করোনা বিধি মেনে ফ্লাড শেল্টারে দুর্গতদের রেখে তাঁদের চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা । এরকমই সব ব্যবস্থা আমরা ইতিমধ্যে নিয়ে রেখেছি । বসিরহাট সহ অন্যান্য জায়গায় কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে । এছাড়াও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে । যাতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায় । আমরা আশা করছি এবার দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারব ।"
এদিন থেকেই বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা স্পিড বোটে সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে টহল দিতে শুরু করেছেন । যাতে কাজ করতে গিয়ে কোনও রকম অসুবিধার মুখে পড়তে না হয় সেই জন্য বিপর্যয়ের পর আপৎকালীন ভিত্তিতে কাজ চালাতে সন্দেশখালিতে টায়ার লাইটও বসানো হয়েছে ৷