হাবড়া, 22 অক্টোবর : হাবড়া হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে । বিশেষ করে রাতের দিকে । রোগীর পরিবারের অভিযোগ ছিল, রাতে জরুরি বিভাগে চিকিৎসক থাকেন না । নার্সরা আলো বন্ধ করে রাখেন । কেউ কেউ ঘুমিয়েও পড়েন । মেলে না উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা । হাসপাতালে সুপার পদে সদ্য যোগ দিয়েছেন বিবেকানন্দ বিশ্বাস । রোগীদের পরিবারের অভিযোগ শোনার পর গতকাল গভীর রাতে আচমকা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন সুপার । রাত 2 টো নাগাদ আচমকা হাসপাতালে ঢুকে বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে দেখেন ।
প্রথমে তিনি ঢোকেন জরুরি বিভাগে । সেখানে অবশ্য চিকিৎসক ছিলেন । তিনি মাঝরাতে সুপারকে হাসপাতালে দেখে অবাক হয়ে যান । তারপর তিনি ঢোকেন পুরুষ বিভাগে । সেটা অবশ্য স্বাভাবিকই ছিল । গোল বাধল মহিলা ওয়ার্ডে । ভিতর থেকে মহিলা ওয়ার্ডের দরজা বন্ধ । সুপার দু'জন আয়াকে ডেকে দরজা খুলতে বললেন । ওই দুই আয়া ডেকে ডেকে ক্লান্ত । ভিতর থেকে সাড়া নেই । মিনিট কয়েক পরে চোখ কচলাতে কচলাতে এক আয়া দরজা খুলে দেখেন, সামনে দাঁড়িয়ে হাসপাতাল সুপার । তিনি চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন । মহিলা ওয়ার্ডের ভিতরে তখন কোনও আলো নেই । নাক টেনে ঘুমোচ্ছেন নার্সরাও । তড়িঘড়ি সব আলো জ্বালানো হল । সুপার ওই নার্স ও আয়াদের সতর্ক করে দিলেন । ভবিষ্যতে এমন ঘটনা চোখে পড়লে রেয়াত করা হবে না, তাও তাঁদের সমঝে দিলেন ।
পরে সুপার বিবেকানন্দবাবু সাংবাদিকদের বলেন, "দিনের বেলা চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে তেমন সমস্যা নেই । সমস্যা রাতেই । তাই রাতে দেখে গেলাম । কিছু ত্রুটি চোখে পড়েছে । সাবধান করে দেওয়া হয়েছে ।"
কেন এমন মাঝরাতে পরিদর্শন ? জবাবে তিনি বললেন, "রাতে হাসপাতালের পরিবেশটা কেমন থাকে সেটা বুঝে নিতে চাইছিলাম। সঙ্গে যারা ভালো কাজ করেন, তাঁদের উৎসাহ দিতে আমি রাতে হাসপাতালে ঘুরে গেলাম। পরেও আসব।"
মাঝরাতে হাসপাতাল সুপারের পরিদর্শন অবশ্য খুশি রোগীর পরিবারের লোকেরা । গোবরডাঙার বাসিন্দা আবদুল গলিবের পুত্রবধূ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তিনি বলেন, "রাতের দিকে হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। সুপার যদি মাঝেমাঝে এমন রাতের দিকে হাসপাতালে ঢু মারেন, তাহলে খুব ভালো হবে। ডাক্তার ও নার্সরা সাবধান হবে। আমরা ভালো চিকিৎসা পাব।"
অশোকনগরের বাসিন্দা পুতুল বিশ্বাস নামে আরও এক রোগীর আত্মীয় বলেছেন, "রাতে নার্সরা ঘুমিয়ে থাকেন। সুপার মাঝেমধ্যে এমন রাতের দিকে হাসপাতালে ঘুরে গেলে হাসপাতালের কর্মীরা শুধরে যাবেন। আমরা ভালো চিকিৎসা পাব।"