স্বরূপনগর (উত্তর 24 পরগনা), 9 জানুয়ারি: পড়শি কিশোরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল । সেই সুযোগে নাবালিকা প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে লাগাতার তাঁকে ব্লাকমেল করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ । শুধু তাই নয়, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে কিশোর প্রেমিকের বিরুদ্ধে । তার জেরে অপমানে আত্মঘাতী হলেন দশম শ্রেণির ছাত্রী । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার স্বরূপনগরে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর 15-র কিশোর স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল । ওই কিশোরী প্রতিবেশী এক কিশোরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল । মাঝেমধ্যে দেখাও করত প্রেমিক-প্রেমিকা । অভিযোগ, সেই সময় নাবালিকা প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি মোবাইল বন্দি করে রাখে ওই কিশোর ।
সম্প্রতি, প্রেমের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসে পড়াশুনায় মন দিতে চেয়েছিল নাবালিকা । সেই কারণে প্রেমিকের সঙ্গে দেখাও করা বন্ধ করে দিয়েছিল । যা মেনে নিতে পারেনি ওই কিশোর । তারই বদলা নিতে সে নাবালিকা প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে তাঁকে লাগাতার ব্ল্যাকমেল করত বলে অভিযোগ । কিন্তু, তাতেও দমে যায়নি ওই নাবালিকা ।
অভিযোগ, শেষে ওই কিশোর তাঁর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেয় । মুহূর্তে সেই ছবি পরিচিতদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ । সে কথা জানতে পেরে বুধবার রাতে ওই নাবালিকা গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে শেষে করে দেয় নিজেকে । বৃহস্পতিবার এই ঘটনা জানাজানি হয় ।
এদিকে, এদিন সকালে দরজা ভেঙে পরিবারের লোকেরা ওই নাবালিকাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায় । যদিও, চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, অনেক আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে । এরপরই এদিন দুপুরে মৃত নাবালিকার পরিবারের লোকেরা ওই কিশোরের বিরুদ্ধে স্বরূপনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই ফেরার অভিযুক্ত কিশোর এবং তার পরিবারের লোকেরা । তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে ।
এই বিষয়ে মৃত নাবালিকার কাকা বলেন, "গ্রামেরই এক কিশোরের সঙ্গে ভাইঝির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল । ওই কিশোর তার কিছু অশ্লীল ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করছিল । পরে সেই সব ছবি সে ছড়িয়ে দেয় সোশাল মিডিয়ায় । সে কথা জানতে পেরে অপমানে গলায় ফাঁস লাগিয়েছে ভাইঝি ।"
অন্যদিকে, স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা বলেন, "ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক । মেয়েটি নাবালিকা ছিল । শুনেছি, ওর সঙ্গে যার প্রেমের সম্পর্ক ছিল, সেই নাকি এই ঘটনার জন্য দায়ী । পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক, সেটাই চাই আমরা ।"
