বনগাঁ, 16 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, 2019-এর বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছে, তারাই আবার ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির জন্য জমি দিচ্ছে । বনগাঁয় দলীয় কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আজ একথা বলেন রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু । বনগাঁয় টাউনহলের মাঠে আজ NRC-র বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে । সেই সভা শেষে এই মন্তব্য করেন CPI(M)-এর বর্ষীয়ান নেতা । নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, 2019-এর পাশাপাশি হায়দরাবাদে সম্প্রতি ধর্ষণে অভিযুক্তদের এনকাউন্টার নিয়েও সোচ্চার হন তিনি ।
CPI(M)-এর দাবি, বনগাঁয় তৈরি হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্প । তারই প্রতিবাদে বনগাঁয় টাউনহলের মাঠে আজ সভা করে CPI(M) সহ বাম শরিক দলগুলি । সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিমান বসু । সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, "সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে । কিন্তু যারা আন্দোলন করছে, তারাই আবার ডিটেনশন ক্যাম্পের জন্য জমি দিচ্ছে । আমাদের কাছে খবর আছে, বনগাঁ ও রাজারহাটে দু'টি ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি হবে । তার জন্য জমি দিচ্ছে রাজ্য সরকারই । যদিও বনগাঁয় এখনও জায়গা ঠিক হয়নি ।" বনগাঁবাসীর কাছে এই ক্যাম্প ভেঙে দেওয়ার জন্যও আহ্বান জানান বিমান বাবু ।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে ঘিরে প্রতিবাদ আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আন্দোলনকে কখনও বিপথগামী করা উচিত নয় । নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে মানুষের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করা উচিত । এই আইন সংবিধান মেনে তৈরি হয়নি ।" ভারতের সংবিধানে সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলা আছে । কিন্তু এই আইনে তার কোনও উল্লেখ নেই বলেও তিনি দাবি করেছেন ।
আরও পড়ুন : নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাষ্ট্রপতিকে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখুন, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
পাশাপাশি হায়দরাবাদ এনকাউন্টারের নেপথ্যে বর্ণবৈষম্য আছে বলে অভিযোগ করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান । তিনি বলেন, "হায়দরাবাদে এক ডাক্তার মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হল । তারপর হায়দরাবাদ পুলিশ এনকাউন্টারের নামে অভিযুক্তদের খুন করেছে । তারা নিম্নবর্ণের না হলে সম্ভব হত না ।" উন্নাও প্রসঙ্গ টেনে বিমানবাবু বলেন, "সেখানে যারা ধর্ষণ করেছে, তারা উচ্চবর্ণের । তাই ওদের ক্ষেত্রে এনকাউন্টার হবে না ।"
বিমানবাবু ছাড়াও আজকের সভায় ছিলেন উত্তর 24 পরগনা জেলা বামফ্রন্টের অন্যান্য নেতারা । বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে বনগাঁ শহরে আজ একটি মিছিল করা হয় । মিছিল শেষে বনগাঁ মহকুমা শাসকের কাছে ডিটেনশন ক্যাম্পের বিষয়ে একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয় বামফ্রন্টের তরফে ।