মধ্যমগ্রাম, 19 জুন : পথ ভুলে মধ্যমগ্রামে গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে পড়েছিলেন অসুস্থ প্রৌঢ় । ফিরেও সেদিকে তাকায়নি কেউ ।অথচ সেই দৃশ্য দেখে মুখ ফিরিয়ে নেননি মহিলা চিকিৎসক পর্ণা কুণ্ডু (sick old man was admitted to hospital)৷ নিজের উদ্যোগে অসুস্থ প্রৌঢ়কে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন তিনি । চিকিৎসার পর এখন অনেকটাই সুস্থ স্বপন ভৌমিক নামে বছর ষাটের ওই প্রৌঢ় । যেখানে চিকিৎসার নামে এক শ্রেণির চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বহু ক্ষেত্রেই ভুড়িভুড়ি অভিযোগ ওঠে । সেখানে মধ্যমগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকের এমন মানবিকতায় মুগ্ধ সকলে । হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় ওই প্রৌঢ় ।
উত্তর 24 পরগনার বাগুইআটির জ্যাংড়া এলাকায় বাড়ি প্রৌঢ় স্বপন ভৌমিকের । সেখানে দাদা, বউদির সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি । স্ত্রী কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন । নিঃসন্তান ওই বৃদ্ধ শনিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন মধ্যমগ্রামের বাদুতে গুরুদেবের আশ্রমে আসার জন্য । সেখানে আসার পথ ভুলে হেঁটে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করতে থাকেন । একসময় অসুস্থ বোধ করায় মধ্যমগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে শুয়ে পড়েন তিনি । সেখানেই রাত থেকে সকাল অবধি পড়েছিলেন অসুস্থ ওই প্রৌঢ় । পাশ দিয়ে অনেকেই গিয়েছেন । কিন্তু কেউই একবারের জন্য ফিরেও তাকায়নি তাঁর দিকে । রবিবার সকালে ডিউটি করতে গ্রামীণ হাসপাতালে আসেন চিকিৎসক পর্ণা কুণ্ডু । তখনই তিনি লক্ষ্য করেন, হাসপাতালের চাতালে এক প্রৌঢ় পড়ে রয়েছেন । দেরি না করে নিজেই অসুস্থ প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে । সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতালের সার্জিকাল ওয়ার্ডে ভর্তি করেন তাঁকে । আপাতত সুস্থ হওয়ার পথে অসুস্থ ওই প্রৌঢ় ।
আরও পড়ুন : কসবা গ্রামে মানবিক রূপ, অসহায় বৃদ্ধাকে অন্ন জোগাচ্ছেন পুলিশ কর্মীরা
এই বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক পর্ণা কুণ্ডু বলেন, "ওই প্রৌঢ়কে যখন উদ্ধার করা হয়, তখন তাঁর সুগার এবং প্রেসার যথেষ্ট বেশি ছিল । দেখে মনেই হচ্ছিল তিনি অসুস্থ । সেই সময় বাড়ির ঠিকানাও তিনি বলতে পারছিলেন না । কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর এখন নিজের পরিচয় ঠিকমতো দিতে পেরেছেন । আমরা স্থানীয় থানায় বিষয়টি জানিয়েছি । এখন ওনারাই প্রৌঢ়কে বাড়ি ফেরাতে যা করার করবেন ৷"
এদিকে সুস্থ হওয়ার পরও এখনও জড়তা কাটেনি প্রৌঢ় স্বপন ভৌমিকের । তিনি বলেন, "হেঁটে বাগুইআটি থেকে মধ্যমগ্রামে চলে এসেছিলাম, গুরুদেবের আশ্রমে যাব বলে । তারপর জানিনা ঠিক কি হয়েছে । উনি (পর্ণা কুণ্ডু) খুব ভাল । ওনার জন্যই আজ সুস্থ হতে পারলাম ৷"