হাবরা, 25 ফেব্রুয়ারি: বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে ইউক্রেনের উপর হামলা শুরু করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ৷ উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে কিয়েভে অবতরণ না করেই মাঝ আকাশ থেকে বৃহস্পতিবার ফিরে আসতে হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার উদ্ধারকারী বিমানকে ৷ এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে আটকে পড়েছেন এরাজ্যের বেশ কয়েকজন, যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই পড়ুয়া (Several students of West Bengal stuck in Ukraine) ৷
উত্তর 24 পরগনার গোবরডাঙার স্বাগতা সাধুখাঁ, হাবররার নিশা বিশ্বাস ও অশোকনগরের তারিকুল রহমান মণ্ডল এই মুহূর্তে ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন ৷ তাঁরা মেডিক্যাল পড়তে সেখানে গিয়েছিলেন । তাঁদের আটকে পড়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা ৷ উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাঁদের ৷ পড়ুয়াদের যাতে সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরিয়ে আনা যায় তার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা ।
জানা গিয়েছে, গোবরডাঙার লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা দেবাশিস সাধুখাঁর মেয়ে স্বাগতা সাধুখাঁ 2019 সালে ইউক্রেন চিফ মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়তে যান । বর্তমানে তিনি ইউক্রেনের কিয়েভে কলেজ হোস্টেলে রয়েছেন । গত বছর ডিসেম্বরে হাবরা কাশিপুর দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা নিশা বিশ্বাসও ওই ইউনিভার্সিটিতে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছেন । অন্যদিকে অশোকনগরের ভাতাশালার বাসিন্দা তারিকুর রহমান মণ্ডল 2020 তে এমবিবিএস পড়ার জন্য ইউক্রেনে গিয়েছেন । ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় সেখানে আটকে পড়েছেন তাঁরা ।
আরও পড়ুন : "পুতিনের সঙ্গে আর কথা নয়, রাশিয়াকে ফল ভুগতে হবে", আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে ঘোষণা বাইডেনের
ইউক্রেন থেকে গোবরডাঙার স্বাগত এক বার্তায় বলেন, "আজ ভোরের দিকে একটা আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় । হস্টেলের ওয়ার্ডেনার কাছ থেকে জানতে পারি ইউক্রেনের উপর হামলা হয়েছে । তারপর থেকে হস্টেলের সকলের মধ্যের আতঙ্ক ছড়িয়েছে । আমাদের বাইরে বেড়তে দেওয়া হচ্ছে না । কিছু খাবার মজুত আছে । তাতে দিন কয়েক চলবে । এই সময়ের মধ্যে দেশে ফিরতে না পারলে কি হবে বুঝে উঠতে পারছি না ।" তিনি আরও জানান, ওখানে তিনি একা নন । তাঁর মত প্রায় এক হাজার ভারতীয় পড়ুয়া সেখানে আটকে পড়েছে । ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁদের । তারাও ঠিক ভাবে কিছুই জানাতে পারছেন না । স্বাগত আরও বলেন, " দূতাবাসের পক্ষ থেকে আমাদের ব্যাগ গুছিয়ে রাখতে বলা হয়েছে । আমরা বাড়ি ফেরার জন্য ব্যাগ গোছাচ্ছি । ভারত সরকারের কাছে আবেদন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন ।"
অন্যদিকে, তারিকুলের রহমানের বাবা মাহমুদ রহমান মণ্ডল বলেন, "ছেলে বলছে ওরা ওখানে ভাল আছে । কিন্তু ওর হাতে খুব বেশি টাকা নেই, এটিএম কাজ করছে না । ছেলে যতই বলুক ভাল আছে । কিন্তু ছেলেকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি । সরকারের কাছে আবেদন সমস্ত ভারতীয়দের বাড়ি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক ।"