ETV Bharat / state

ভাষা স্মারক তৈরির আগে মৃত্যু কাউন্সিলরের, স্বপ্নপূরণের অঙ্গীকার বারাসতের ওয়ার্ডে

author img

By

Published : Feb 21, 2020, 11:38 PM IST

Updated : Feb 21, 2020, 11:54 PM IST

ভাষা দিবসের গুরুত্ব নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়ের কাছে পৌঁছে দিতে ভাষা দিবসের স্মারক গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন । কাজের প্রতিনিয়ত তত্ত্বাবধানও করতেন তিনি । কিছুদিন আগে এক পথ দুর্ঘটনায় এই তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যুতে থমকে যায় স্মারক গড়ার কাজ । ভাষা দিবস উদযাপনও ছিল সাদামাটাই । সকলের মুখে একই কথা, প্রদ্যুত দেখে যেতে পারল না স্মারকটা ।

International Mother language day
ভাষা দিবস

বারাসত, 20 ফেব্রুয়ারি : ভাষা দিবসের নির্মীয়মাণ স্মারকের পাশে এখনও জ্বলজ্বল করছে তাঁর ছবি দেওয়া ব্যানার । তিনি চেয়েছিলেন,ভাষা দিবসের গুরুত্ব নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়ের কাছে পৌঁছে দিতে। সেই জন্য নিজের ওয়ার্ডেই উদ্যোগ নিয়ে ভাষা দিবসের স্মারক গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন । ভাষা দিবসের স্মারক তৈরি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ভাষা দিবস উদযাপনের আনন্দ হারিয়ে ফেলেছে বারাসতের মানুষ । কারণ, পৌরসভার 3 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্যের অকালপ্রয়াণ । কিছুদিন আগেই এক পথ দুর্ঘটনায় এই তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হয় ।

প্রদ্যুৎবাবু সচেষ্ট হয়েছিলেন ভাষা দিবসের স্মারক গড়ে তুলতে । সেই মতো বারাসতের ন'পাড়ায় 34 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে স্মারক গড়ে তোলার কাজ শুরু হয় । কাজের প্রতিনিয়ত তত্ত্বাবধানও করতেন তিনি । কিন্তু, আচমকাই দুর্ঘটনায় তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যুতে যেন সব ওলোটপালোট হয়ে গেছে । যার হাত ধরে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে ওই স্মারক উন্মোচন হওয়ার কথা ছিল, তিনিই আজ সকলের থেকে অনেক দূরে চলে গেছেন । ফলে,স্মারকের কাজের গতিও অনেকটা শ্লথ হয়ে গেছে । তবে, তাঁর শুভাকাঙ্খীরা তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার কোনও কসুর করছেন না । আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ভাষা দিবসের স্মারকের মাধ্যমে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে । এরই সঙ্গে বাংলা ভাষার প্রতি নতুন প্রজন্মের আগ্রহ বাড়াতে ভাষা দিবসের স্মারককেই এখন তুলে ধরতে চাইছেন প্রদ্যুতের শুভাকাঙ্খীরা ।

এবিষয়ে বাবু দাস নামে এক এলাকাবাসী বলেন, ''দাদার হাত ধরেই 21 ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের দিনে ভাষা দিবসের স্মারক উন্মোচন হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু, তাঁর অকালপ্রয়াণে সেই কাজ অনেকটাই পিছিয়ে গেল । এককথায় ভাষা দিবসের ভাষায় আমরা হারিয়ে ফেলেছি । তবে, দাদার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য । তাঁরই মতো কাউন্সিলরের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন সঞ্জয় দে-ও । তাঁর কথায়, প্রদ্যুত ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে ওয়ার্ডের সকলের মন থেকেই ভাষা হারিয়ে গেছে । বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে ও ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরতে তাঁর প্রচেষ্টাকে সার্থক করায় এখন লক্ষ্য আমাদের । স্মারক গড়ার কাজ কিছুটা থমকে গেলেও আমরা সেই কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি । যাতে দাদা, যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন পূরণ করা যায় ।''

বারাসত ন'পাড়া আদর্শ বিদ্যাপীঠের টিচার ইন-চার্জ সহেলি চক্রবর্তী বলেন, ভাষা কখনও হারায় না । তবে, বাংলা ভাষার মাহাত্ম্য অনেক জায়গায় কমে যাচ্ছে । সেই জায়গায় প্রাধান্য পাচ্ছে ইংরেজি ভাষা । উনি (প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য ) স্কুলের সামনে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই কাজের তদারকি করেছিলেন । যাতে ভাষা দিবসের স্মারকের মধ্যে দিয়ে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো যায়।ওনার এই উদ্যোগ কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল তাঁর অকাল প্রয়াণে । এতে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হল বলেই আমি মনে করি ।

দেখুন কী বললেন স্থানীয় স্কুলের টিচার ইন-চার্জ

এদিকে, কাউন্সিলরের মৃত্যুতে তাঁর স্বপ্ন কোথাও ধাক্কা খেল কি না, সেবিষয়ে পৌরসভার উপ-পৌর প্রধান অশনি মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ''ও (প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য) যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন আমরা পূরণ করবই । প্রদ্যুৎ চেয়েছিল 21 ফেব্রুয়ারিই ভাষা দিবসের স্মারক উন্মোচিত হোক । তাই, ভাষা দিবসের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে আমরা পৌরসভার তরফে অনুরোধ জানিয়েছি, তাঁরা যেন সকলে একত্রিত হয়ে ভাষা দিবসের ওই স্মারক উন্মোচন করুক । তবে, তা অনাড়ম্বর ভাবেই হবে বলে ঠিক হয়েছে । ওর মতো একজন দক্ষ কাউন্সিলরকে আমরা হারালাম । দ্বিতীয় আর কোনও প্রদ্যুৎ বারাসতে হবে না । দুর্ঘটনার দিনও ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল কিভাবে স্মারকের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় । তাড়াহুড়ো করে আসতে গিয়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওর গাড়ি । প্রদ্যুতের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে আমরা বদ্ধপরিকর ।''

এদিকে, আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের সকালে প্রদ্যুতবাবুর ইচ্ছাকে সম্মান দিয়ে ভাষা দিবসের স্মারক উন্মোচন হয় । এই অনুষ্ঠান ছিল একেবারে প্রাণহীন । যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা কোথাও যেন ভাষা দিবসের ভাষায় হারিয়ে ফেলেছেন প্রদ্যুতের মৃত্যুতে ।

বারাসত, 20 ফেব্রুয়ারি : ভাষা দিবসের নির্মীয়মাণ স্মারকের পাশে এখনও জ্বলজ্বল করছে তাঁর ছবি দেওয়া ব্যানার । তিনি চেয়েছিলেন,ভাষা দিবসের গুরুত্ব নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়ের কাছে পৌঁছে দিতে। সেই জন্য নিজের ওয়ার্ডেই উদ্যোগ নিয়ে ভাষা দিবসের স্মারক গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন । ভাষা দিবসের স্মারক তৈরি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ভাষা দিবস উদযাপনের আনন্দ হারিয়ে ফেলেছে বারাসতের মানুষ । কারণ, পৌরসভার 3 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্যের অকালপ্রয়াণ । কিছুদিন আগেই এক পথ দুর্ঘটনায় এই তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হয় ।

প্রদ্যুৎবাবু সচেষ্ট হয়েছিলেন ভাষা দিবসের স্মারক গড়ে তুলতে । সেই মতো বারাসতের ন'পাড়ায় 34 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে স্মারক গড়ে তোলার কাজ শুরু হয় । কাজের প্রতিনিয়ত তত্ত্বাবধানও করতেন তিনি । কিন্তু, আচমকাই দুর্ঘটনায় তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যুতে যেন সব ওলোটপালোট হয়ে গেছে । যার হাত ধরে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে ওই স্মারক উন্মোচন হওয়ার কথা ছিল, তিনিই আজ সকলের থেকে অনেক দূরে চলে গেছেন । ফলে,স্মারকের কাজের গতিও অনেকটা শ্লথ হয়ে গেছে । তবে, তাঁর শুভাকাঙ্খীরা তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার কোনও কসুর করছেন না । আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ভাষা দিবসের স্মারকের মাধ্যমে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে । এরই সঙ্গে বাংলা ভাষার প্রতি নতুন প্রজন্মের আগ্রহ বাড়াতে ভাষা দিবসের স্মারককেই এখন তুলে ধরতে চাইছেন প্রদ্যুতের শুভাকাঙ্খীরা ।

এবিষয়ে বাবু দাস নামে এক এলাকাবাসী বলেন, ''দাদার হাত ধরেই 21 ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের দিনে ভাষা দিবসের স্মারক উন্মোচন হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু, তাঁর অকালপ্রয়াণে সেই কাজ অনেকটাই পিছিয়ে গেল । এককথায় ভাষা দিবসের ভাষায় আমরা হারিয়ে ফেলেছি । তবে, দাদার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য । তাঁরই মতো কাউন্সিলরের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন সঞ্জয় দে-ও । তাঁর কথায়, প্রদ্যুত ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে ওয়ার্ডের সকলের মন থেকেই ভাষা হারিয়ে গেছে । বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে ও ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরতে তাঁর প্রচেষ্টাকে সার্থক করায় এখন লক্ষ্য আমাদের । স্মারক গড়ার কাজ কিছুটা থমকে গেলেও আমরা সেই কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি । যাতে দাদা, যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন পূরণ করা যায় ।''

বারাসত ন'পাড়া আদর্শ বিদ্যাপীঠের টিচার ইন-চার্জ সহেলি চক্রবর্তী বলেন, ভাষা কখনও হারায় না । তবে, বাংলা ভাষার মাহাত্ম্য অনেক জায়গায় কমে যাচ্ছে । সেই জায়গায় প্রাধান্য পাচ্ছে ইংরেজি ভাষা । উনি (প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য ) স্কুলের সামনে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই কাজের তদারকি করেছিলেন । যাতে ভাষা দিবসের স্মারকের মধ্যে দিয়ে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো যায়।ওনার এই উদ্যোগ কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল তাঁর অকাল প্রয়াণে । এতে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হল বলেই আমি মনে করি ।

দেখুন কী বললেন স্থানীয় স্কুলের টিচার ইন-চার্জ

এদিকে, কাউন্সিলরের মৃত্যুতে তাঁর স্বপ্ন কোথাও ধাক্কা খেল কি না, সেবিষয়ে পৌরসভার উপ-পৌর প্রধান অশনি মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ''ও (প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য) যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন আমরা পূরণ করবই । প্রদ্যুৎ চেয়েছিল 21 ফেব্রুয়ারিই ভাষা দিবসের স্মারক উন্মোচিত হোক । তাই, ভাষা দিবসের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে আমরা পৌরসভার তরফে অনুরোধ জানিয়েছি, তাঁরা যেন সকলে একত্রিত হয়ে ভাষা দিবসের ওই স্মারক উন্মোচন করুক । তবে, তা অনাড়ম্বর ভাবেই হবে বলে ঠিক হয়েছে । ওর মতো একজন দক্ষ কাউন্সিলরকে আমরা হারালাম । দ্বিতীয় আর কোনও প্রদ্যুৎ বারাসতে হবে না । দুর্ঘটনার দিনও ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল কিভাবে স্মারকের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় । তাড়াহুড়ো করে আসতে গিয়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওর গাড়ি । প্রদ্যুতের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে আমরা বদ্ধপরিকর ।''

এদিকে, আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের সকালে প্রদ্যুতবাবুর ইচ্ছাকে সম্মান দিয়ে ভাষা দিবসের স্মারক উন্মোচন হয় । এই অনুষ্ঠান ছিল একেবারে প্রাণহীন । যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা কোথাও যেন ভাষা দিবসের ভাষায় হারিয়ে ফেলেছেন প্রদ্যুতের মৃত্যুতে ।

Last Updated : Feb 21, 2020, 11:54 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.