বারাসত, 23 অগস্ট : 9টি বগিতে হবে না ৷ 12 বগির ট্রেন দিতে হবে । অফিস টাইমে বাড়াতে হবে ট্রেনের সংখ্যা । এরকমই একাধিক দাবিতে সোমবার শিয়ালদা-হাসনাবাদ শাখার বহিরা কালীবাড়ি স্টেশনে ট্রেন আটকে অবরোধ করলেন যাত্রীরা । চলল বিক্ষোভও । এই আন্দোলনের জেরে সকাল থেকেই বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে একাধিক স্টাফ স্পেশাল ট্রেন । চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রী থেকে নিত্য যাত্রীদের । প্রায় পৌনে একঘণ্টা রেল অবরোধ চলার পর শেষে বারাসত জিআরপির আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় । তবে,দাবি মানা না হলে আগামীদিনে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যাত্রীরা ।
করোনা আবহে বাস সহ বিভিন্ন যানবাহন পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও এখনও রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালু হয়নি । পরিবর্তে শুধু চলছে স্টাফ স্পেশাল ট্রেন । যা নিয়ে আগেও বিভিন্ন স্টেশনে একাধিকবার অবরোধ বিক্ষোভও হয়েছে ৷ যার জেরে স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে সাধারণ যাত্রীদের ওঠার অনুমতি মিলেছিল । কিন্তু যাত্রীর তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা সীমিত বলে অভিযোগ । ফলে ভিড় ট্রেনেই গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । কোথাও করোনা বিধি মানতে দেখা যাচ্ছে না ৷ ভিড় ট্রেনে উঠতে গিয়ে অনেক সময় ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে । এই পরিস্থিতিতে রেল কর্তৃপক্ষ লোকাল ট্রেন চালু করতে চাইলেও এখনও সম্মতি মেলেনি রাজ্য সরকারের । খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন, যতক্ষণ না গ্রামাঞ্চলে পঞ্চাশ শতাংশ মানুষের ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ হচ্ছে,ততক্ষণ চালু করা হবে না লোকাল ট্রেন । তার আগে লোকাল ট্রেন চালু হলে করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা মুখ্যমন্ত্রীর । এসবের মধ্যেই এবার স্টাফ স্পেশাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নামলেন রেল যাত্রীরা । অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বহিরা কালীবাড়ি স্টেশনে । বিশেষ করে অফিস টাইমে স্টাফ স্পেশাল ট্রেনের বগির সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে এদিন সরব হয়েছেন আন্দোলনকারীরা ।
আরও পড়ুন, Mamata Banerjee : গ্রামাঞ্চলে 50 শতাংশ টিকাকরণ হলেই লোকাল ট্রেন চালুর অনুমতি, জানালেন মমতা
এই বিষয়ে মহম্মদ আসাদুল নবি নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, "সকালের দিকে 9টি বগির ট্রেন চলাচল করায় সাধারণ মানুষের খুব সমস্যা হচ্ছে । ঝুঁকি নিয়েই ভিড় ট্রেনে উঠতে হচ্ছে । অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটছে । এদিনও ভাসিলিয়া স্টেশনে ভিড় ট্রেনে উঠতে গিয়ে দু'জন পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন । তাই আমরা চাই,ভিড় এড়াতে স্টাফ স্পেশাল ট্রেনের বগির সংখ্যা বাড়ানো হোক । তাতে সামাজিক দূরত্ব যেমন বজায় থাকবে, তেমনই সংক্রমণে লাগাম টানা সম্ভব হবে ৷ "
একই সুর শোনা গিয়েছে শুভ পাল নামে অপর এক আন্দোলনকারীর গলাতেও । তিনি বলেন,"পেটের তাগিদে সাধারণ মানুষকে আজ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতে হচ্ছে । সেখানে কেন 9টি বগির ট্রেন চলাচল করবে ? সমস্ত ট্রেনই 12টি বগির করা হোক । তাহলেই সাধারণ মানুষের সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে আশা করি । ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতেই আজ এই আন্দোলন ৷" সমস্যার সমাধান না হলে অবিলম্বে জোরদার আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি ।
এদিকে,বারাসত জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্দোলনকারীদের দাবি রেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে । এরপর যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তারাই নেবেন ।