ETV Bharat / state

অশোকনগরে ডেঙ্গি আক্রান্ত যুবকের মৃত্যু - হাবরা

অশোকনগর পৌরসভার 23টি ওয়ার্ডের কম-বেশি সব এলাকাতেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ । জ্বরের সঙ্গে কারও আবার ডেঙ্গির সংক্রমণও রয়েছে । গত কয়েকদিনে অশোকনগর হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা 150 ছুঁয়েছে । কয়েকদিন আগেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল একজনের । গতকাল গভীর রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল আরও এক যুবকের । তাঁর মৃত্যুর পর অশোকনগরে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই ।

মৃত যুবক
author img

By

Published : Aug 7, 2019, 10:27 PM IST

অশোকনগর, 7 অগাস্ট : হাবড়ার পর ডেঙ্গির আতঙ্ক এবার অশোকনগরে । ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের । মৃতের নাম জয়ন্ত পাল (26) । এলাকায় ডেঙ্গির আতঙ্কে নাজেহাল এলাকাবাসী । ঘটনায় পৌরসভাকে কাঠগড়ায় তুলেছে স্থানীয়রা । তাদের অভিযোগ, ভয়াবহ ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য যে ধরনের উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল, তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি পৌরসভার পক্ষ থেকে । নিকাশি নালা থেকে জমা জল, জঙ্গল পরিষ্কার না করায় ডেঙ্গির জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায় । ডেঙ্গি সচেতনতা ও তা প্রতিরোধ অনেক দেরি করে শুরু করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে পৌরসভা । অন্যদিকে, পৌরসভার ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা ।

অশোকনগর পৌরসভার 23টি ওয়ার্ডের কম-বেশি সব এলাকাতেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ । জ্বরের সঙ্গে কারও আবার ডেঙ্গির সংক্রমণও রয়েছে । গত কয়েকদিনে অশোকনগর হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা 150 ছুঁয়েছে । কয়েকদিন আগেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল একজনের । গতকাল গভীর রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল আরও এক যুবকের । তাঁর মৃত্যুর পর অশোকনগরে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই ।

অশোকনগর পৌরসভার 2 নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর বাইপাস এলাকায় কয়েক দিন আগেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন স্থানীয় 26 বছরের যুবক জয়ন্ত পাল । পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অশোকনগর স্টেট জেনেরাল হাসপাতালে । তাঁর রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছিল । বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার জয়ন্ত অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন । চিকিৎসা চলাকালীন রবিবার জয়ন্তর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে । স্থানান্তরিত করা বারাসাতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে । সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । গতকাল গভীর রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় । মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর বুধবার জয়ন্তর পরিবারের সাথে দেখা করেন পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার ।

2017 সালেও অশোকনগর-কল্যাণগড় পৌরসভায় ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল । বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন । কয়েকজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল । এলাকার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যানকে তলব পর্যন্ত করেছিলেন রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী । 2017 সালের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে 2018 সালের একেবারে শুরু থেকেই ডেঙ্গি সচেতনতা থেকে প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছিল পৌরসভা । ফলে 2018 সালে ডেঙ্গির প্রভাব দেখা যায়নি অশোকনগ পৌরসভায় । কিন্তু এই বছর ফের দেখা দিয়েছে ডেঙ্গি । সেকথা অবশ্য স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার । তিনি বলেন, "ভেবেছিলাম অশোকনগরকে ডেঙ্গি মুক্ত শহর করতে পারলাম ।" তিনি আরও বলেন এবার জুনের শুরুতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গির সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে । রাজ্য সরকারও সার্ভের লোকজন দিতে দেরি করেছে ।

পৌরসভার মূলত ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি ছড়িয়েছে কল্যাণগড় এলাকায় । কল্যাণগড়ের দিকে 1,2,3,13 ও 23 নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি প্রভাব বেশি । অশোকনগর পৌরসভার 23টি ওয়ার্ডের কম বেশি সব এলাকাতেই ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে । পৌরসভার পরিসংখ্যান বলছে গত জুনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র দুই জন । সেই সংখ্যাটাই জুলাইয়ে বেড়ে হয়েছে 58 জন । অগাস্টে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে । পৌরসভার পরিসংখ্যান থেকে বাস্তবের ছবিটা আরও ভয়াবহ । অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে । হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মণ্ডল অবশ্য চিকিৎসাধীন ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা জানাতে নারাজ । তিনি বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা অনেক ।

অশোকনগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রথম থেকে কোনও ব্যবস্থাই করেনি । জমা জল, নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয়নি । এলাকায় ঘুরে মশা মারার তেল ও ব্লিচিং ছড়ানো কিছুই হয়নি । ওয়ার্ডে জঙ্গল পরিষ্কার করার উদ্যোগও নজরে আসেনি । যদিও পৌরপ্রধান প্রবোধ সরকার জানান, কিছুটা দেড়ি হলেও প্রতিটি ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্য দপ্তরের ছয় সাত জনের একটা দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি মোকাবিলায় কাজ করছেন । সাধারণ মানুষকে সজাগ হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে । ডেঙ্গি মোকাবিলায় দেরিতে কাজ শুরু করার জন্য পৌরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভও রয়েছে সাধারণ মানুষের । ডেঙ্গির সার্ভে করতে যাওয়া পৌরকর্মীদেরও বিভন্ন জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ।

পৌরসভার বিরোধী দলনেতা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গি দমনে সদর্থক কোনও ব্যবস্থাই শুরুর দিকে নেয়নি পৌরসভা । বোর্ড মিটিংয়ে এই নিয়ে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছিল । কিন্তু চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নেননি । চিত্তরঞ্জন বলেন, "23 টি ওয়ার্ডের জঙ্গল পরিষ্কারের জন্য বেশ কয়েকটি টোটো গাড়ি কিনেছিল পৌরসভা । এলাকার জঙ্গল পরিষ্কারের পর সেগুলো ওই গাড়িতে করেই নিয়ে যাওয়া কথা । কিন্তু গাড়িগুলো পৌরসভার গ্যারেজেই পড়ে রয়েছে ।"

অশোকনগর, 7 অগাস্ট : হাবড়ার পর ডেঙ্গির আতঙ্ক এবার অশোকনগরে । ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের । মৃতের নাম জয়ন্ত পাল (26) । এলাকায় ডেঙ্গির আতঙ্কে নাজেহাল এলাকাবাসী । ঘটনায় পৌরসভাকে কাঠগড়ায় তুলেছে স্থানীয়রা । তাদের অভিযোগ, ভয়াবহ ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য যে ধরনের উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল, তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি পৌরসভার পক্ষ থেকে । নিকাশি নালা থেকে জমা জল, জঙ্গল পরিষ্কার না করায় ডেঙ্গির জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায় । ডেঙ্গি সচেতনতা ও তা প্রতিরোধ অনেক দেরি করে শুরু করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে পৌরসভা । অন্যদিকে, পৌরসভার ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা ।

অশোকনগর পৌরসভার 23টি ওয়ার্ডের কম-বেশি সব এলাকাতেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ । জ্বরের সঙ্গে কারও আবার ডেঙ্গির সংক্রমণও রয়েছে । গত কয়েকদিনে অশোকনগর হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা 150 ছুঁয়েছে । কয়েকদিন আগেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল একজনের । গতকাল গভীর রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল আরও এক যুবকের । তাঁর মৃত্যুর পর অশোকনগরে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই ।

অশোকনগর পৌরসভার 2 নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর বাইপাস এলাকায় কয়েক দিন আগেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন স্থানীয় 26 বছরের যুবক জয়ন্ত পাল । পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অশোকনগর স্টেট জেনেরাল হাসপাতালে । তাঁর রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছিল । বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার জয়ন্ত অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন । চিকিৎসা চলাকালীন রবিবার জয়ন্তর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে । স্থানান্তরিত করা বারাসাতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে । সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । গতকাল গভীর রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় । মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর বুধবার জয়ন্তর পরিবারের সাথে দেখা করেন পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার ।

2017 সালেও অশোকনগর-কল্যাণগড় পৌরসভায় ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল । বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন । কয়েকজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল । এলাকার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যানকে তলব পর্যন্ত করেছিলেন রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী । 2017 সালের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে 2018 সালের একেবারে শুরু থেকেই ডেঙ্গি সচেতনতা থেকে প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছিল পৌরসভা । ফলে 2018 সালে ডেঙ্গির প্রভাব দেখা যায়নি অশোকনগ পৌরসভায় । কিন্তু এই বছর ফের দেখা দিয়েছে ডেঙ্গি । সেকথা অবশ্য স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার । তিনি বলেন, "ভেবেছিলাম অশোকনগরকে ডেঙ্গি মুক্ত শহর করতে পারলাম ।" তিনি আরও বলেন এবার জুনের শুরুতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গির সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে । রাজ্য সরকারও সার্ভের লোকজন দিতে দেরি করেছে ।

পৌরসভার মূলত ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি ছড়িয়েছে কল্যাণগড় এলাকায় । কল্যাণগড়ের দিকে 1,2,3,13 ও 23 নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি প্রভাব বেশি । অশোকনগর পৌরসভার 23টি ওয়ার্ডের কম বেশি সব এলাকাতেই ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে । পৌরসভার পরিসংখ্যান বলছে গত জুনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র দুই জন । সেই সংখ্যাটাই জুলাইয়ে বেড়ে হয়েছে 58 জন । অগাস্টে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে । পৌরসভার পরিসংখ্যান থেকে বাস্তবের ছবিটা আরও ভয়াবহ । অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে । হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মণ্ডল অবশ্য চিকিৎসাধীন ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা জানাতে নারাজ । তিনি বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা অনেক ।

অশোকনগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রথম থেকে কোনও ব্যবস্থাই করেনি । জমা জল, নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয়নি । এলাকায় ঘুরে মশা মারার তেল ও ব্লিচিং ছড়ানো কিছুই হয়নি । ওয়ার্ডে জঙ্গল পরিষ্কার করার উদ্যোগও নজরে আসেনি । যদিও পৌরপ্রধান প্রবোধ সরকার জানান, কিছুটা দেড়ি হলেও প্রতিটি ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্য দপ্তরের ছয় সাত জনের একটা দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি মোকাবিলায় কাজ করছেন । সাধারণ মানুষকে সজাগ হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে । ডেঙ্গি মোকাবিলায় দেরিতে কাজ শুরু করার জন্য পৌরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভও রয়েছে সাধারণ মানুষের । ডেঙ্গির সার্ভে করতে যাওয়া পৌরকর্মীদেরও বিভন্ন জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ।

পৌরসভার বিরোধী দলনেতা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গি দমনে সদর্থক কোনও ব্যবস্থাই শুরুর দিকে নেয়নি পৌরসভা । বোর্ড মিটিংয়ে এই নিয়ে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছিল । কিন্তু চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নেননি । চিত্তরঞ্জন বলেন, "23 টি ওয়ার্ডের জঙ্গল পরিষ্কারের জন্য বেশ কয়েকটি টোটো গাড়ি কিনেছিল পৌরসভা । এলাকার জঙ্গল পরিষ্কারের পর সেগুলো ওই গাড়িতে করেই নিয়ে যাওয়া কথা । কিন্তু গাড়িগুলো পৌরসভার গ্যারেজেই পড়ে রয়েছে ।"

Intro:হাবড়ার পর ডেঙ্গুর থাবা অশোকনগরে, মৃত্যু যুবকের

অশোকনগরঃ হাবড়ার পর ডেঙ্গুর থাবা অশোকনগরে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক যুবকের মৃত্যু হল। মৃতের নাম জয়ন্ত পাল (26)।

অশোকনগর পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের কম-বেশি সব এলাকাতেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। জ্বরের সঙ্গে কারও কারও ডেঙ্গুর সংক্রমণও রয়েছে। গত কয়েক দিনে অশোকনগর হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেড়শো ছুঁয়েছে। দিনে দিনে সেই সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে। কয়েক দিন আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল একজনের। মঙ্গলবার গভীর রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল অারও এক যুবকের। মৃতের নাম জয়ন্ত পাল (২৬)। জয়ন্তর মৃত্যুর পর অশোকনগরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই। অশোকনগরে জ্বর ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য পুরসভাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ভয়াবহ ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য যে ধরনের উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল, তার ছিটেফোঁটাও চলতি দেখা যায়নি পুরসভার পক্ষ থেকে। নিকাশি নালা থেকে জমা জল জঙ্গল পরিষ্কার না করায় ডেঙ্গুর জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। ডেঙ্গ সচেতনতা ও তা প্রতিরোধে পুরসভা অনেক দেরি করে শুরু করা হয়েছে বলেই স্বীকার করে নিয়েছে পুরসভা। পরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চললেও পরিস্থিতি অনেকটাই নাগালের বাইরে চলে গেছে।ফলে সাধারণ মানুষও ডেঙ্গু আতঙ্কে নাজেহাল হচ্ছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে অশোকনগর পুরসভার ভুমিকা নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধীরা।

অশোকনগর পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর বাইপাস এলাকা। কয়েক দিন আগেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন স্থানীয় ২৬ বছরের যুবক জয়ন্ত পাল। পরিবার সুত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। তাঁর রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গুরের জীবাণু ধরা পড়েছিল। বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার জয়ন্ত অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসা চলাকালীন রবিবার জয়ন্তর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। স্থানান্তরিত করা হলে পরিবারের লোকজন তাঁকে বারাসাতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার গভীর রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর বুধবার জয়ন্তর পরিবারের সাথে দেখা করেন পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার।

২০১৭ সালে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভায় ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল। বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। কয়েক জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। এলাকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যানকে তলব পর্যন্ত করেছিলেন রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী। ২০১৭ সালের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০১৮ সালের একেবারে শুরু থেকেই ডেঙ্গু সচেতনতা থেকে প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছিল পুরসভা। ফলে ২০১৮ সালে ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা যায়নি অশোকনগ পুরসভায়। কিন্তু এই বছর ফের দেখা দিয়েছে ডেঙ্গি। আত্মতুষ্টিই কাল হল ২০১৯ সালে। সেকথা অবশ্য স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম অশোকনগরকে ডেঙ্গি মুক্ত শহর করতে পারলাম। প্রবোধের কথায় এবার জুনের শুরুতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গির সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে।রাজ্য সরকারও সার্ভের লোকজন দিতে দেরি করেছে।

পুরসভার মুলত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ছড়িয়েছে কল্যানগড় এলাকায়। কল্যানগড়ের দিকে ১,২,৩,১৩ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি প্রভাব বেশি। অশোকনগর পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের কম বেশি সব এলাকাতেই ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে।পুরসভার পরিসংখ্যান বলছে গত জুনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র দুই জন। সেই সংখ্যাটাই জুলাইয়ে বেড়ে হয় ৫৮ জন। অগস্টে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে। পুরসভার পরিসংখ্যান থেকে বাস্তবের ছবিটা অারও ভয়াবহ। অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে। হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মণ্ডল অবশ্য চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা জানাতে নারাজ। তিনি বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা অনেক।

অশোকনগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রথম থেকে কোনও ব্যবস্থাই করেনি। জমা জল, নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয়নি। এলাকায় ঘুরে মশা মারার তেল ও ব্লিচিং ছড়ানো কিছুই হয়নি। ওয়ার্ডে জঙ্গল পরিষ্কার করার উদ্যোগও নজরে অাসেনি। যদিও পৌরপ্রধান প্রবোধ সরকার জানান, কিছুটা দেড়ি হলেও প্রতিটি ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্য দপ্তরের ছয় সাত জনের একটা দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করছেন। সাধারণ মানুষকে সজাগ হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দেরিতে কাজ শুরু করার জন্য পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভও রয়েছে সাধারণ মানুষের। ডেঙ্গুর সার্ভে করতে যাওয়া পুরকর্মীদেরও বিভন্ন জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গু দমনে সদর্থক কোনও ব্যবস্থাই শুরুর দিকে নেয়নি পুরসভা। বোর্ড মিটিংয়ে এই নিয়ে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছিল।কিন্তু চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নেননি। চিত্তরঞ্জন বলেন, '২৩ টি ওয়ার্ডের জঙ্গল পরিষ্করের জন্য বেশ কয়েকটি টোটো গাড়ি কিনেছিল পুরসভা। এলাকার জঙ্গল পরিষ্কারের পর সেগুলো ওই গাড়িতে করেই নিয়ে যাওয়া কথা। কিন্তু গাড়িগুলো পুরসভার গ্যারেজেই পড়ে রয়েছে।Body:হাবড়ার পর ডেঙ্গুর থাবা অশোকনগরে, মৃত্যু যুবকের

অশোকনগরঃ হাবড়ার পর ডেঙ্গুর থাবা অশোকনগরে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক যুবকের মৃত্যু হল। মৃতের নাম জয়ন্ত পাল (26)।

অশোকনগর পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের কম-বেশি সব এলাকাতেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। জ্বরের সঙ্গে কারও কারও ডেঙ্গুর সংক্রমণও রয়েছে। গত কয়েক দিনে অশোকনগর হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেড়শো ছুঁয়েছে। দিনে দিনে সেই সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে। কয়েক দিন আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল একজনের। মঙ্গলবার গভীর রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল অারও এক যুবকের। মৃতের নাম জয়ন্ত পাল (২৬)। জয়ন্তর মৃত্যুর পর অশোকনগরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই। অশোকনগরে জ্বর ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য পুরসভাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ভয়াবহ ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য যে ধরনের উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল, তার ছিটেফোঁটাও চলতি দেখা যায়নি পুরসভার পক্ষ থেকে। নিকাশি নালা থেকে জমা জল জঙ্গল পরিষ্কার না করায় ডেঙ্গুর জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। ডেঙ্গ সচেতনতা ও তা প্রতিরোধে পুরসভা অনেক দেরি করে শুরু করা হয়েছে বলেই স্বীকার করে নিয়েছে পুরসভা। পরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চললেও পরিস্থিতি অনেকটাই নাগালের বাইরে চলে গেছে।ফলে সাধারণ মানুষও ডেঙ্গু আতঙ্কে নাজেহাল হচ্ছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে অশোকনগর পুরসভার ভুমিকা নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধীরা।

অশোকনগর পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর বাইপাস এলাকা। কয়েক দিন আগেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন স্থানীয় ২৬ বছরের যুবক জয়ন্ত পাল। পরিবার সুত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। তাঁর রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গুরের জীবাণু ধরা পড়েছিল। বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার জয়ন্ত অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসা চলাকালীন রবিবার জয়ন্তর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। স্থানান্তরিত করা হলে পরিবারের লোকজন তাঁকে বারাসাতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার গভীর রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর বুধবার জয়ন্তর পরিবারের সাথে দেখা করেন পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার।

২০১৭ সালে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভায় ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল। বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। কয়েক জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। এলাকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যানকে তলব পর্যন্ত করেছিলেন রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী। ২০১৭ সালের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০১৮ সালের একেবারে শুরু থেকেই ডেঙ্গু সচেতনতা থেকে প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছিল পুরসভা। ফলে ২০১৮ সালে ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা যায়নি অশোকনগ পুরসভায়। কিন্তু এই বছর ফের দেখা দিয়েছে ডেঙ্গি। আত্মতুষ্টিই কাল হল ২০১৯ সালে। সেকথা অবশ্য স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম অশোকনগরকে ডেঙ্গি মুক্ত শহর করতে পারলাম। প্রবোধের কথায় এবার জুনের শুরুতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গির সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে।রাজ্য সরকারও সার্ভের লোকজন দিতে দেরি করেছে।

পুরসভার মুলত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ছড়িয়েছে কল্যানগড় এলাকায়। কল্যানগড়ের দিকে ১,২,৩,১৩ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি প্রভাব বেশি। অশোকনগর পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের কম বেশি সব এলাকাতেই ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে।পুরসভার পরিসংখ্যান বলছে গত জুনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র দুই জন। সেই সংখ্যাটাই জুলাইয়ে বেড়ে হয় ৫৮ জন। অগস্টে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে। পুরসভার পরিসংখ্যান থেকে বাস্তবের ছবিটা অারও ভয়াবহ। অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে। হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মণ্ডল অবশ্য চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা জানাতে নারাজ। তিনি বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা অনেক।

অশোকনগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রথম থেকে কোনও ব্যবস্থাই করেনি। জমা জল, নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয়নি। এলাকায় ঘুরে মশা মারার তেল ও ব্লিচিং ছড়ানো কিছুই হয়নি। ওয়ার্ডে জঙ্গল পরিষ্কার করার উদ্যোগও নজরে অাসেনি। যদিও পৌরপ্রধান প্রবোধ সরকার জানান, কিছুটা দেড়ি হলেও প্রতিটি ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্য দপ্তরের ছয় সাত জনের একটা দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করছেন। সাধারণ মানুষকে সজাগ হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দেরিতে কাজ শুরু করার জন্য পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভও রয়েছে সাধারণ মানুষের। ডেঙ্গুর সার্ভে করতে যাওয়া পুরকর্মীদেরও বিভন্ন জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গু দমনে সদর্থক কোনও ব্যবস্থাই শুরুর দিকে নেয়নি পুরসভা। বোর্ড মিটিংয়ে এই নিয়ে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছিল।কিন্তু চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নেননি। চিত্তরঞ্জন বলেন, '২৩ টি ওয়ার্ডের জঙ্গল পরিষ্করের জন্য বেশ কয়েকটি টোটো গাড়ি কিনেছিল পুরসভা। এলাকার জঙ্গল পরিষ্কারের পর সেগুলো ওই গাড়িতে করেই নিয়ে যাওয়া কথা। কিন্তু গাড়িগুলো পুরসভার গ্যারেজেই পড়ে রয়েছে।Conclusion:হাবড়ার পর ডেঙ্গুর থাবা অশোকনগরে, মৃত্যু যুবকের

অশোকনগরঃ হাবড়ার পর ডেঙ্গুর থাবা অশোকনগরে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক যুবকের মৃত্যু হল। মৃতের নাম জয়ন্ত পাল (26)।

অশোকনগর পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের কম-বেশি সব এলাকাতেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। জ্বরের সঙ্গে কারও কারও ডেঙ্গুর সংক্রমণও রয়েছে। গত কয়েক দিনে অশোকনগর হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেড়শো ছুঁয়েছে। দিনে দিনে সেই সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে। কয়েক দিন আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল একজনের। মঙ্গলবার গভীর রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল অারও এক যুবকের। মৃতের নাম জয়ন্ত পাল (২৬)। জয়ন্তর মৃত্যুর পর অশোকনগরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই। অশোকনগরে জ্বর ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য পুরসভাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ভয়াবহ ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য যে ধরনের উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল, তার ছিটেফোঁটাও চলতি দেখা যায়নি পুরসভার পক্ষ থেকে। নিকাশি নালা থেকে জমা জল জঙ্গল পরিষ্কার না করায় ডেঙ্গুর জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। ডেঙ্গ সচেতনতা ও তা প্রতিরোধে পুরসভা অনেক দেরি করে শুরু করা হয়েছে বলেই স্বীকার করে নিয়েছে পুরসভা। পরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চললেও পরিস্থিতি অনেকটাই নাগালের বাইরে চলে গেছে।ফলে সাধারণ মানুষও ডেঙ্গু আতঙ্কে নাজেহাল হচ্ছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে অশোকনগর পুরসভার ভুমিকা নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধীরা।

অশোকনগর পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর বাইপাস এলাকা। কয়েক দিন আগেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন স্থানীয় ২৬ বছরের যুবক জয়ন্ত পাল। পরিবার সুত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। তাঁর রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গুরের জীবাণু ধরা পড়েছিল। বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার জয়ন্ত অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসা চলাকালীন রবিবার জয়ন্তর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। স্থানান্তরিত করা হলে পরিবারের লোকজন তাঁকে বারাসাতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার গভীর রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর বুধবার জয়ন্তর পরিবারের সাথে দেখা করেন পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার।

২০১৭ সালে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভায় ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল। বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। কয়েক জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। এলাকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যানকে তলব পর্যন্ত করেছিলেন রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী। ২০১৭ সালের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০১৮ সালের একেবারে শুরু থেকেই ডেঙ্গু সচেতনতা থেকে প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছিল পুরসভা। ফলে ২০১৮ সালে ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা যায়নি অশোকনগ পুরসভায়। কিন্তু এই বছর ফের দেখা দিয়েছে ডেঙ্গি। আত্মতুষ্টিই কাল হল ২০১৯ সালে। সেকথা অবশ্য স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম অশোকনগরকে ডেঙ্গি মুক্ত শহর করতে পারলাম। প্রবোধের কথায় এবার জুনের শুরুতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গির সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে।রাজ্য সরকারও সার্ভের লোকজন দিতে দেরি করেছে।

পুরসভার মুলত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ছড়িয়েছে কল্যানগড় এলাকায়। কল্যানগড়ের দিকে ১,২,৩,১৩ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি প্রভাব বেশি। অশোকনগর পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের কম বেশি সব এলাকাতেই ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে।পুরসভার পরিসংখ্যান বলছে গত জুনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র দুই জন। সেই সংখ্যাটাই জুলাইয়ে বেড়ে হয় ৫৮ জন। অগস্টে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে। পুরসভার পরিসংখ্যান থেকে বাস্তবের ছবিটা অারও ভয়াবহ। অশোকনগর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে। হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মণ্ডল অবশ্য চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা জানাতে নারাজ। তিনি বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা অনেক।

অশোকনগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রথম থেকে কোনও ব্যবস্থাই করেনি। জমা জল, নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয়নি। এলাকায় ঘুরে মশা মারার তেল ও ব্লিচিং ছড়ানো কিছুই হয়নি। ওয়ার্ডে জঙ্গল পরিষ্কার করার উদ্যোগও নজরে অাসেনি। যদিও পৌরপ্রধান প্রবোধ সরকার জানান, কিছুটা দেড়ি হলেও প্রতিটি ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্য দপ্তরের ছয় সাত জনের একটা দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করছেন। সাধারণ মানুষকে সজাগ হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দেরিতে কাজ শুরু করার জন্য পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভও রয়েছে সাধারণ মানুষের। ডেঙ্গুর সার্ভে করতে যাওয়া পুরকর্মীদেরও বিভন্ন জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গু দমনে সদর্থক কোনও ব্যবস্থাই শুরুর দিকে নেয়নি পুরসভা। বোর্ড মিটিংয়ে এই নিয়ে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছিল।কিন্তু চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নেননি। চিত্তরঞ্জন বলেন, '২৩ টি ওয়ার্ডের জঙ্গল পরিষ্করের জন্য বেশ কয়েকটি টোটো গাড়ি কিনেছিল পুরসভা। এলাকার জঙ্গল পরিষ্কারের পর সেগুলো ওই গাড়িতে করেই নিয়ে যাওয়া কথা। কিন্তু গাড়িগুলো পুরসভার গ্যারেজেই পড়ে রয়েছে।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.