ভাটপাড়া, 3 ডিসেম্বর: ভাটপাড়া আছে ভাটপাড়াতেই । খুন, রাহাজানি এবং ধর্ষণ যেন রোজকার নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে । তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদব খুনের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও খুন ভাটপাড়াতে । এবার পানীয় জল নিয়ে সামান্য বচসার জেরে দাদার হাতে খুন হতে হল ভাইকে । মৃতের নাম মহেন্দ্র সাউ । বয়স 45 । অভিযোগ, বচসা চলাকালীন ভাই মহেন্দ্রকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে দাদা বিনোদ সাউ । সেই আঘাতের জেরে মাথায় রক্তক্ষরণ শুরু হয় মহেন্দ্রর । হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে মাথায় অস্ত্রোপচার করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে রবিবার মৃত্যু হয় তাঁর ।
এই মৃত্যুর খবর রবিবার ভাটপাড়ার কাঁকিনাড়ার শান্তিনগর এলাকায় পৌঁছাতেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় । খুনিকে গ্রেফতারের দাবিতে পথে নামেন স্থানীয় লোকজন । চলে অবরোধও । পরে, পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায় । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে । পলাতক বিনোদ সাউয়ের খোঁজে তল্লাশি চলছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,দাদা-ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক বিবাদ রয়েছে । এনিয়ে মাঝেমধ্যেই গন্ডগোল বাঁধত দুই পরিবারের সঙ্গে । দু'জনেই পাশাপাশি থাকতেন। দাদা-ভাইয়ের বিবাদ চরমে পৌঁছায় 29 নভেম্বর । সেদিন বাড়ির সামনে কলের জল নিয়ে মহেন্দ্রর সঙ্গে বিনোদের স্ত্রীর ঝামেলা শুরু হয় । সেই সময় স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে গন্ডগোল বাঁধিয়ে দেয় বিনোদ । অভিযোগ, গন্ডগোলের মাঝেই ঘর থেকে একটি লোহার রড নিয়ে এসে বিনোদ আঘাত করে ভাইয়ের মাথাতে । রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন মহেন্দ্র । সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা চললেও শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি আহত ব্যাক্তির । পরে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । সেখান থেকে সঙ্কটজনক অবস্থায় ফের তাঁকে কলকাতার এমআর বাঙুর হাসপাতালে ৷ সেখানেই অস্ত্রোপচার হয় আহত ব্যক্তির । তারপরও দিনদিন তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল । রবিবার সকালে মৃত্যু হয় মহেন্দ্রের ।
এদিন তাঁর মৃত্যুর খবর কাঁকিনাড়ার শান্তিনগর এলাকায় পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রতিবেশীরা। অভিযুক্ত বিনোদের বিরুদ্ধে এলাকায় দাদাগিরির অভিযোগ তুলে এদিন শান্তিনগরের 29 নম্বর রেলগেট সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান তারা । খুনি বিনোদকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি ওঠে ৷ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ৷
আরও পড়ুন: