বারাসত, 24 অক্টোবর : জমি সংক্রান্ত লেনদেন নিয়ে বিরোধের পরপরই রাজারহাটে দুর্ঘটনায় রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছিল উত্তর 24 পরগনার শাসন এলাকার তৃণমূলের দাপুটে নেতা মতিয়ার সাঁপুইয়ের (TMC Leader Murder Case) । এই মৃত্যুর পরপরই পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে । এই নিয়ে অভিযোগও দায়ের করা হয় স্থানীয় রাজারহাট থানায় ।
সেই ঘটনায় এবার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত এক তৃণমূল (Trinamool Congress) কর্মী ধরা পড়ল পুলিশের জালে । ধৃতের নাম মিজানুর রহমান । এর আগে এই ঘটনায় সামসের আলি-সহ আরও পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । এদিকে, ধৃত মিজানুর রহমানের ফাঁসির দাবিতে সোমবার বারাসত আদালত (Barasat Court) চত্বরে প্ল্যাকার্ড ও দলীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় শাসকদলের নেতা-কর্মীরা । যার জেরে সরগরম হয়ে ওঠে আদালত চত্বর । যদিও নিহতের পরিবারের দাবি, অভিযুক্তরা বিজেপির কর্মী ৷
সূত্রের খবর, শাসনের কীর্তিপুর-2 পঞ্চায়েত এলাকায় গত আট বছর ধরে জমি বাড়ি কেনাবেচার রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠেছিল । যার মূল মাথা ছিলেন এই মিজানুর রহমান । মিজানুর আগে ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টি করলেও মাস ছয়েক আগে সে নাম লেখায় শাসকদলে । আরেক জমির কারবার সামসের আলিও সেই সময় যোগ দেন তৃণমূলে । এই নিয়ে আগে থেকেই শাসক শিবিরের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল । তাতে জমি কেনাবেচা সংক্রান্ত বিবাদ যুক্ত হওয়ায় দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়ে ওঠে ।
অভিযোগ, তৃণমূলের দাপুটে নেতা ও জেলা পরিষদ সদস্য মতিয়ার সাঁপুই এরই বিরোধিতা করেছিলেন ৷ তাতেই মিজানুর, সামসেরদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন তিনি । এসবের মধ্যেই গত 21 সেপ্টেম্বর পার্টি অফিস থেকে শাসনের বাড়িতে ফেরার পথে রাজারহাটে গাড়ি দুর্ঘটনায় আকস্মিক মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল নেতার । তার জেরেই খুনের অভিযোগ তুলে সরব হন মৃতের পরিবারের লোকেরা ।
এদিকে, ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই তার কড়া শাস্তির দাবিতে সোমবার দুপুরে বারাসত আদালত চত্বরে জড়ো হন শাসন অঞ্চলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা । তুমুল বিক্ষোভ-স্লোগানে সরগরম হয়ে ওঠে আদালত চত্বর । পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।
অন্যদিকে, ধৃতকে এদিন বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে 10 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় ।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় অনুদানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে