বারাসত, 11 এপ্রিল: বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের জেলা পরিষদ অভিযান ঘিরে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল উত্তর 24 পরগনা জেলার সদর শহর বারাসতে । ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশকে মারধর, ভাঙচুর এবং পালটা পুলিশের লাঠিচার্জ ঘিরে অশান্ত হয়ে ওঠে এলাকা । অশান্তির জেরে একসময় জেলা পরিষদ ভবনে প্রবেশ পথে শাটার পর্যন্ত নামিয়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ । জেলা পরিষদ ভবনের ভিতরে ঢুকতে না পেরে বাইরে 'চোর চোর'-স্লোগান দিতে থাকেন বাম ও ছাত্র-যুব কর্মীরা । আন্দোলনে অশান্তি পাকানোর অভিযোগে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ ৷
দুর্নীতি, 100 দিনের কাজের বকেয়া টাকা মেটানো-সহ একাধিক দাবিতে মঙ্গলবার উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের তরফে । দুপুর থেকেই বারাসতের হেলাবটতলা মোড়ের মিলনী মাঠে বাম ছাত্র-যুব কর্মীরা জমায়েত হতে শুরু করেন । এরপর সেই মিছিল শুরু হয়ে 34 নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কলোনি মোড়, কোর্ট চত্বর হয়ে এসে পৌঁছায় জেলা পরিষদের সামনে । যদিও মিছিল আটকাতে আগে থেকেই বাঁশ এবং লোহার ব্যারিকেড করা হয়েছিল সেখানে । মিছিল পৌঁছতেই সেই ব্যারিকেড ভেঙে জেলা পরিষদ ভবনের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা । পুলিশ বাধা দিলে নিমেষে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে । শুরু হয় বচসা, বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি । আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তাঁদের ওপর পুলিশ রীতিমতো লাঠিচার্জ করেছে । পালটা পুলিশের কয়েকজনকে মারধর করারও অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারীদের একাংশের বিরুদ্ধে । গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় জেলা পরিষদ ভবন চত্বরে । সূত্রের খবর, এদিনের আন্দোলন ঠেকাতে প্রয়োজনের তুলনায় পুলিশের সংখ্যা কম ছিল । সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছে আন্দোলনকারীরা । পরবর্তীতে বাড়তি ফোর্স এনে গোটা পরিস্থিতির সামাল দিতে হয় পুলিশকে । ঘটনায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের অনেকেই জখম হয়েছেন । যদিও এই বিষয়ে পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ।
আরও পড়ুন: রেলের অনুষ্ঠানে ফের জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে বিতর্ক, গুরুত্ব দিতে নারাজ দিলীপ ঘোষ
ডিওয়াইএফআইয়ের উত্তর 24 পরগনা জেলার সভাপতি সফিকুল সর্দার বলেন, "পুলিশ এখন তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে । সেই কারণেই ছাত্র-যুবদের বাধা দেওয়া হয়েছে । আমরা তৃণমূল এবং তাঁর দলদাস পুলিশকে বলে দিতে চাই, এভাবে বাধা সৃষ্টি করে ছাত্র-যুবদের আন্দোলন রোখা যাবে না । আগামীদিনে শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-যুবদের স্বার্থে আমাদের আন্দোলন আরও জোরদার হবে । দুর্নীতিগ্রস্ত এই সরকারকে আমরা উৎখাত করবোই রাজ্য থেকে ।"
যদিও এদিনের আন্দোলনকে গুরুত্ব দিতে চায়নি শাসক শিবির । এই বিষয়ে জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ একে এম ফারহাদ বলেন, "বামেদের এই রাজ্যে কোনও অস্তিত্ব নেই । তাই আন্দোলনে নেমে এদিন তাঁরা কার্যত গুন্ডামি করেছেন । ভাঙচুর চালিয়েছেন । মারধর করেছেন পুলিশকে । ওঁদের এই সমস্ত দাবির কোনও যৌক্তিকতা নেই । বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছেন ।"