বারাসত, 28 অক্টোবর : একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে পদ্মশিবির ত্যাগ করলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার ৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি ৷ বাবু মাস্টার বলছেন, বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির সঙ্গে অভ্যস্ত হতে পারবেন না ৷ তাই বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৷ পাশাপাশি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি ৷
বিজেপির বুধবার বারাসতে সাংবাদিক বৈঠকে ফিরোজ কামাল গাজি বলেন, "বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করছে, যা বাংলার রাজনীতির পক্ষে অনুকূল নয় । বিভাজনের রাজনীতি কখনওই সফল হয়নি এই বাংলায় ৷" তাহলে কি পুরানো দল তৃণমূলের দিকে পা বাড়াচ্ছেন ? সেই সম্ভাবনা উসকে দিয়ে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে এভাবেই নিজের মতামত প্রকাশ করলেন বাবু মাস্টার ।
একইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাও শোনা গিয়েছে বাবু মাস্টারের গলায় । তাঁর কথায়, "বাংলার সংস্কৃতিতে তৃণমূলের কোনও বিকল্প নেই । এখনও পর্যন্ত রাজ্যের শাসকদলের মোকাবিলা করার মতো জায়গায় আসেনি কোনও দল । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দল হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত তৃণমূল কংগ্রেস । সেই দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা বাংলার দিদি হিসেবে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিরাজ করছেন । তিনি ছাড়া আর কেউ দেশের নেত্রী হতে পারবেন না ৷" এদিন আগাগোড়াই গেরুয়া শিবিরের সমালোচনায় মুখর ছিলেন বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এই নেতা ।
আরও পড়ুন : Krishna Kalyani : রায়গঞ্জের বিধায়কের তৃণমূলে ফেরায় আনন্দে মাতলেন কর্মী-সমর্থকরা
এদিকে, তৃণমূল ছাড়ার কারণ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কিছু না বলতে চাইলেও পরে সুযোগ পেলে যেখানে জানানো উচিত, সেখানে জানাবেন বিজেপি ত্যাগী ফিরোজ ৷ প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদের শিক্ষা ও ক্রীড়া কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেন তৃণমূল নেতা ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার । তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে বিজেপিতে নাম লেখান তিনি । সেই সময় পুরনো দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে জেলাপরিষদের দুর্নীতি নিয়েও সরব হতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে ।
এদিন অবশ্য সেই পুরনো দলেরই গুনগান গাইলেন বাবু মাস্টার । বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্তকে ভুল বলেছেন তিনি ৷ তাঁর কথায়, "দলের সর্বভারতীয় নেত্রী জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ৷" তিনি জানান, গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার পরেই বুঝতে পেরেছিলেন এই দল তাঁর জন্য নয় । নানা কারণে এতদিন বিজেপি ছাড়তে না পারলেও অবশেষে বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠে বিজেপি ছাড়ার বিষয়ে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেন ।তবে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে ফিরিয়ে নেবে কি না, সে বিষয়ে বাবু মাস্টার বলেন, "তা সময়ই বলবে !"
গেরুয়া শিবির ত্যাগের বিষয়টি এখনও মৌখিক ভাবে কাউকে কাউকে জানিয়েছেন ৷ এবার মেল করবেন ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে ৷ জানিয়েছেন তিনি ৷