বারাসত, 20 ডিসেম্বর : মেদিনীপুর জেল থেকে পালিয়েও শেষ রক্ষা হল না রাজীব দাস খুনে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মূল আসামি মিঠুন দাসের । 20 দিনের মাথায় সেই বারাসত থেকেই পাকড়াও করা হল তাঁকে । গতকাল গভীর রাতে বারাসতের ম্যান্ডেলা কলোনির বাড়ি সংলগ্ন এলাকা থেকে মিঠুনকে হাতেনাতে ধরে পুলিশ । রাতেই তাকে নিয়ে আসা হয় বারাসত থানায় ।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে মিঠুনকে তুলে দেওয়া হবে তাদের হাতে । বারাসতের রাজীব দাস হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে মিঠুন দাস ও মনোজিৎ বিশ্বাসকে সম্প্রতি আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে স্থানান্তরিত করা হয় মেদিনীপুর জেলে । সেখান থেকেই 30 নভেম্বর গাছ বেয়ে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায় তারা । যা ঘিরে শোরগোল পড়ে বিভিন্ন মহলে ।
পলাতক ওই আসামিদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি । 2 ডিসেম্বর ব্যারাকপুরের বীজপুর এলাকা থেকে মনোজিৎ-কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তবে অপর সাজাপ্রাপ্ত আসামি মিঠুন ছিল পুলিশের নাগালের বাইরে । কিছুতেই তাকে ধরা যাচ্ছিল না । অবশেষে গতকাল রাতে সূত্র মারফত পুলিশের কাছে খবর আসে, বাড়ির কাছেই ঘোরাঘুরি করছে সে । দেরি না করে বারাসত থানার পুলিশের একটি টিম অভিযান চালায় সেখানে । আর তাতেই মেলে সাফল্য । হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় মিঠুন দাসকে । গ্রেপ্তারের পরই তাকে সোজা নিয়ে আসা হয় বারাসত থানায় । রাতে সেখানেই রাখা হয় মিঠুনকে ।
আরও পড়ুন : হাবরায় জোড়া খুনে মূল অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি রিঙ্কু দাসের
2011 সালের 14 ফেব্রুয়ারি দিদির সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে বারাসতে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব দাস । যা ঘিরে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি । এরপর খুনের ঘটনায় জড়িত তিন দুষ্কৃতী মিঠুন দাস, মনোজিৎ বিশ্বাস ও বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । শুরু হয় মামলার শুনানি ও বিচার প্রক্রিয়া । 2015 সালের 12 ফেব্রুয়ারি ওই তিন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে বারাসত আদালত । পরের দিন তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক । এরপরই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামির ঠাঁই হয়েছিল আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে । সম্প্রতি সেখান থেকে মিঠুন ও মনোজিৎকে মেদিনীপুর জেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল । তারপরই ঘটে এই বিপত্তি ।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ধৃত মিঠুন দাসকে । সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে ।