আমডাঙা, 23 নভেম্বর: আমডাঙার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডল খুনে সাতদিন অতিক্রান্ত ৷ একজন গ্রেফতার হলেও বাকি তিন অভিযুক্তের কোনও হদিশ নেই । পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন নিহত তৃণমূল নেতার আত্মীয়-স্বজনেরা। সোনাডাঙায় 34 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলল বিক্ষোভ । সেই বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে যথেষ্ট হিমশিম খেতে হল পুলিশকে। শেষ পর্যন্ত হাবরার এসডিপিও রোহিত শেখের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।
এ ব্যাপারে হাদিজা বিবি নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, "পুলিশের ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়! একজন নিরীহ, ভালো মানুষকে খুন করা হল । খুনের পর সাতদিন কাটতে চলল । অথচ একজন বাদে বাকি তিন অভিযুক্তের এখনও নাগাল পাওয়া গেল না । তাহলে কি পুলিশ টাকা খেয়ে দোষীদের আড়াল করতে চাইছে? তা না হলে কেন তাদের ধরা যাচ্ছে না ! আমরা চাই দোষী প্রত্যেকেরই ফাঁসি হোক । তাহলেই আমাদের মন শান্ত হবে ৷" যদিও আমডাঙা থানার পুলিশ জানিয়েছে, "খুনের ঘটনায় বাকি তিন অভিযুক্তের হদিশ পেতে সবরকমের চেষ্টা চালানো হচ্ছে । আশা করা যায় দ্রুত তাদের নাগাল পাওয়া সম্ভব হবে ৷"
প্রসঙ্গত, গত 17 নভেম্বর আমডাঙার কামদেবপুর হাটে বাজার করতে গিয়ে ভর সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমার আঘাতে খুন হন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও তৃণমূল নেতা রূপচাঁদ মণ্ডল । ভরা বাজারে জনবহুল এলাকায় শাসকদলের দাপুটে এই নেতার খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে এলাকা । চলে দফায় দফায় অবরোধ ও পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ । সবকিছুই হয়েছিল ঘটনার পরপরই । খুনের ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল কর্মী তোয়েব আলি মণ্ডল, তাঁর ছেলে আনোয়ার হোসেন মণ্ডল এবং তাঁদের দুই সহযোগী পাপ্পু,আফতাবের নামে অভিযোগ দায়ের হয় আমডাঙা থানায় ।
সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ 24 ঘণ্টার মধ্যেই অন্যতম অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে । তবে বাকি তিন অভিযুক্ত এখনও অধরা । খুনের ঘটনার চারদিনের মাথায় সোনাডাঙায় নিহত তৃণমূল নেতার বাড়িতে গিয়ে রূপচাঁদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল দলেরই বিধায়ক রফিকুর রহমানকে । ক্ষোভের জেরে শেষে আমডাঙা থানার আইসির সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বাধ্য হন তিনি । ফোনের মধ্যেই আইসিকে তিন দিনের মধ্যে বাকি অভিযুক্তদের ধরতে আল্টিমেটাম দেন বিধায়ক ।
তিন দিনের সেই সময়সীমাও কাটতে চলেছে । পলাতক তিন অভিযুক্ত অধরাই রয়েছে পুলিশের। তাই পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের সদস্যরা । সেটা বারবার তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে । বৃহস্পতিবারও নিহত নেতার ছবি হাতে নিয়ে পথে নেমেছেন রূপচাঁদের পরিবারের লোকজন । সঙ্গে ছিলেন গ্রামবাসীরাও । আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি, বাকি তিন অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে । সাতদিন পরও কেন পলাতক অভিযুক্তরা ধরা পড়ল না । তা নিয়েও পুলিশের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা । এ নিয়ে আমডাঙা থানার পুলিশের ভূমিকায় যে তাঁরা যথেষ্ট ক্ষুব্ধ, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন এদিন ।
আরও পড়ুন: