ইকোপার্ক (নিউটাউন), 16 ডিসেম্বর: শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সঙ্গে কোনও দ্বন্দ্বই নেই দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) ৷ শুক্রবার নিউটাউনের ইকোপার্কে এমনই দাবি করেছেন বিজেপির (BJP) জাতীয় সহ-সভাপতি ৷ বরং তিনি পুরো বিতর্কের দায় ঠেলে দিয়েছেন সংবাদমাধ্যমের উপর ৷ বলেছেন, ‘‘আপনাদের প্রয়োজনে আপনারা যে কোনও জিনিসকে বাড়ান বা কমান ৷ একই পার্টিতে একই আদর্শ নিয়ে কাজ করি । হতে পারে কোনও বিষয়ে দু’জনের মত আলাদা হয় । আর এটাই গণতন্ত্র । ভারতীয় জনতা পার্টির মধ্যে গণতন্ত্র আছে ৷ নিজের মনের কথা বলা যায় ৷ এটা তার প্রমাণ । তার মানে আলাদা হয়ে গিয়েছে নাকি ! তৃণমূলের মতো বন্দুক দিয়ে লড়াই হচ্ছে নাকি !’’
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গত সোমবার কলকাতার হাজরায় বিজেপির এক প্রতিবাদ সভা আয়োজন করা হয় ৷ সেখানে নাম না করে দিলীপ ঘোষের প্রাতঃভ্রমণের সময় করা বিভিন্ন মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তার পরই বাংলার রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয় যে দিলীপ ও শুভেন্দুর মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে ৷ সেটাই এবার প্রকাশ্যে চলে এল ৷
তার উপর বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষও আসানসোলে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় আয়োজকদের দুষেছিলেন ৷ বিজেপির আয়োজনে করা ওই অনুষ্ঠানে আবার উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু ৷ তিনি অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাটি ঘটে ৷ ফলে রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল যে আসলে শুভেন্দুকেই কটাক্ষ করলেন দিলীপ ৷
যদিও তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেন্দুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান দিলীপ ৷ শুভেন্দুও ধন্যবাদ দেন৷ এদিন সকালে দিলীপ জানান, পরে দলের এক বৈঠকে তাঁদের মুখোমুখি দেখা হয়েছিল ৷ সেখানে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ৷ কিন্তু সেই বৈঠকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা বি এল সন্তোষও উপস্থিত ছিলেন ৷ তিনি কি সন্ধি করতে এসেছিলেন বঙ্গ বিজেপির দুই শীর্ষনেতার মধ্যে ?
এই নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘মধ্যস্থতা কেন ? যে বৈঠক ছিল, সেখানে আমাদের যত পর্যবেক্ষক রয়েছেন, সবাই ছিলেন৷ প্রদেশের চার-পাঁচজন নেতা, তাঁরা ছিলেন । বাংলা আগামিদিনের ভবিষ্যতের । কার্যক্রম, নীতি নির্ধারণের বৈঠক হল ।’’ পাশাপাশি পঞ্চায়েত (Panchayat Elections 2023) ও লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর ৷
অন্যদিকে শুভেন্দুকেও দিলীপকে নেতা হিসেবে বলতে শোনা গিয়েছে ৷ যা নিয়ে মেদিনীপুরের সাংসদের বক্তব্য, ‘‘এটা বাস্তব৷ আপনাদের জন্য বলতে হচ্ছে ৷ এটা বলার দরকার নয় । একসঙ্গে লড়াই করে আমরা বাংলায় পরিবর্তন করব ৷ সেই লড়াই চলছে । এখন সংবাদমাধ্যম দেখাতে চায় বিজেপির মধ্যে খুব ঝগড়া । কিন্তু ওটা হবে না ।’’
তবে এদিন শুধু শুভেন্দু নয় ৷ স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে আরও অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলতে দেখা গিয়েছে দিলীপকে ৷ তার মধ্যে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে করা অমিতাভ বচ্চনের মন্তব্য থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মিঠুন চক্রবর্তীর ডাক না পাওয়ার প্রসঙ্গও রয়েছে ৷
এদিকে শুক্রবারই রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ৷ একটি সরকারি বৈঠকে যোগ দিতেই তিনি আসছেন বাংলায় ৷ এই নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘সরকারি বৈঠকে যোগ দিতে আসছেন ৷ বিজেপির লোকেরা হয়তো তাঁকে স্বাগত জানাতে যেতে পারেন ৷ এখানে পার্টির কোন অনুষ্ঠান নেই । পঞ্চায়েত নিয়ে কোনও কথা হলে, সেটা দিল্লিতে হতে পারে ৷ এখানে উনি কোনও পার্টির অনুষ্ঠানে আসছেন না ।’’
আরও পড়ুন: 'দিলীপ ঘোষ আমারও নেতা, তাঁর নেতৃত্বে বিজেপিতে যোগ দিই', শুভেন্দুর মুখে দিলীপের প্রশংসা