কলকাতা, 25 জুলাই : হালিশহর পৌরসভায় অনাস্থা বৈঠকের উপর স্থগিতাদেশ বাড়াল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আজ বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, 2 অগাস্ট পর্যন্ত কোনও অনাস্থা বৈঠক ডাকা যাবে না ৷ সেইসঙ্গে সোমবারের (29 জুলাই) মধ্যে হলফনামা দিয়ে রাজ্যকে সব নথিপত্র জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ৷
হালিশহর পৌরসভার 21টি ওয়ার্ডে জিতেছিল তৃণমূল । একটি করে ওয়ার্ডে জেতেন BJP ও নির্দল প্রার্থী । লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর বদলায় ছবি । 17 জন তৃণমূল কাউন্সিলর BJP-তে যোগ দেন । ফলে BJP-র কাউন্সিলর সংখ্যা বেড়ে হয় 18 । স্বাভাবিকভাবেই হালিশহর পৌরসভা দখল করে তারা । ইতিমধ্যে 9 জুলাই ফের বদলায় সেখানকার ছবি ৷ পৌরসভার চেয়ারম্যান অংশুমান রায় সহ 9 কাউন্সিলর ফের তৃণমূলে যোগ দেন ৷ ফলে 13 জন কাউন্সিলর নিয়ে ফের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তৃণমূল ৷
এরপর অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসে তৃণমূল ৷ 19 জুলাই ডাকা হয় বৈঠক৷ BJP-র অভিযোগ, অনৈতিকভাবে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে ৷ কারণ, একবার অনাস্থা আনলে পরের 6 মাস সেই প্রস্তাব আনা যাবে না ৷ আর তৃণমূল এই সুযোগটাই নিতে চাইছে ৷ বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে যান BJP কাউন্সিলরের বন্ধু গোপাল সাহা ৷ শুক্রবার (১৯ জুলাই) শুনানিতে মামলাকারীর তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "১৯ জুলাই বিকেল তিনটের সময় অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত মিটিং ডাকা হল ৷ আর সেই চিঠি আমার মক্কেল পাচ্ছেন 19 জুলাই ৷ সেটাও আবার হোয়াটসঅ্যাপে । আইনত ডিজিটাল সার্ভিস গ্রহণযোগ্য নয় । চিঠি দিতে হবে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে । এছাড়া, অনাস্থা সংক্রান্ত মিটিংয়ের অন্তত সাত থেকে 15 দিন আগে চিঠি দিতে হয় । এক্ষেত্রে সেটাও মানা হয়নি । চেয়ারম্যান নিজেই নিজের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনছেন, সেটাও সম্ভব নয় । এখানে অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে । আসলে কোনওভাবে এই অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত মিটিং একবার যদি হয়ে যায় তাহলে আগামী ছ'মাস আর কোনও মিটিং ডাকা যাবে না । সেজন্যই তড়িঘড়ি করে মিটিং ডাকা হয়েছে । " রাজ্যের AG কিশোর দত্ত বলেন, "17 তারিখ চিঠি পেয়ে 19 জুলাই একেবারে শেষ মুহূর্তে কেন কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন? তাঁদের মধ্যে কোনও একজন কাউন্সিলর (অনাস্থা) প্রক্রিয়াকে বাতিল করতে পারেন না । "এরপর বিচারপতি 19 জুলাইয়ের বৈঠকের উপর স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি৷ নির্দেশ দেন, 23 জুলাই পর্যন্ত কোনও অনাস্থা বৈঠক ডাকা যাবে না ৷
আজ শুনানিতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী বলেন, "নিয়ম মতো পোস্ট অফিসের মাধ্যমে স্পিড পোস্টে চিঠি পাঠানো হয়েছিল ৷ কিন্তু, সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর সেই চিঠি গ্রহণ করেননি । এরপর 16 জুলাই মোবাইলের মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপে চিঠি পাঠানো হয় । যেটা উনি দেখেছেন 17 জুলাই । আসলে পুরো ব্যাপারটাই মিথ্যা । সমস্ত প্রমাণপত্র রয়েছে । " এরপর বিচারপতি নির্দেশ দেন, 29 জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে সমস্ত নথিপত্র জমা দিতে হবে । আর 2 অগাস্ট পর্যন্ত পর্যন্ত কোনও অনাস্থা বৈঠক ডাকা যাবে না ৷