ভাটপাড়া, 23 নভেম্বর: ভাটপাড়া আছে ভাটপাড়াতেই! তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদবের খুন নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে তৃণমূলের অন্দরে। ঠিক তখনই ভাটপাড়ার বিআরএস কলোনির একটি মাঠের পাশ থেকে 11টি কৌটো বোমা উদ্ধার করল পুলিশ। যা ঘিরে বৃহস্পতিবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ভাটপাড়া পৌরসভার 28 নম্বর ওয়ার্ডে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, এটি কোনও দুষ্কৃতী দলের কাজ। তবে, কোনও অপরাধ সংগঠিত করার জন্য বোমাগুলো সেখানে মজুত করা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে জগদ্দল থানার পুলিশ। উদ্ধার হওয়া 11টি কৌটো বোমা নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
মঙ্গলবার ভর সন্ধ্যায় ভাটপাড়ার জগদ্দলের পুরানী তালাব এলাকায় বাড়ির সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদব। অন্তত 11 রাউন্ড গুলি করা হয় তাঁকে লক্ষ্য করে। যার মধ্যে 9 রাউন্ড গুলি লাগে ভিকির শরীরে। সঙ্কটজনক অবস্থায় ওই তৃণমূল কর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি ভিকি-কে। মৃত্যু হয় হাসপাতালেই। সূত্রের খবর, নাম জিজ্ঞাসা করে ভিকি যাদবের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই দুষ্কৃতীরা টার্গেট করে তাঁকে।
নিখুঁত টার্গেটের পর খুনীরা বাইকে চেপে পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে। সিসিটিভি ফুটেজে হেলমেট পরা দুষ্কৃতীদের ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে ইতিমধ্যে। সেই সিসিটিভির ফুটেজ এবং পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে পলাতক দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে জগদ্দল থানার পুলিশ। তবে, 48 ঘণ্টা পরও দুষ্কৃতীদের কাউকেই গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। যার জেরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও খুনীদের ধরতে সবরকমের চেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
এদিকে, ভাটপাড়ায় তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদব খুনের দু'দিনও কাটেনি। তারই মধ্যে এ দিন বিকেলে সেই ভাটপাড়া থেকেই মিলল 11টি কৌটো বোমা।একটি মাঠের পাশে বোমাগুলো পড়ে ছিল বলে খবর স্থানীয় সূত্রে। সেই সময় মাঠে খেলাধুলা করছিলেন অনেকেই। তখনই স্থানীয়দের নজরে আসে কৌটো বোমাগুলো। পরে, খবর পেয়ে জগদ্দল থানার পুলিশ একটি বালতিতে বোমাগুলো রেখে নিয়ে যায় নিষ্ক্রিয় করার জন্য। ঘটনার জেরে আতঙ্ক বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
এলাকাবাসীর একটাই প্রশ্ন, এত বোমা আসছে কোথা থেকে। পুলিশই বা কী করছে? ভাটপাড়া কি ক্রমেই দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠছে? এমনও প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে স্থানীয়দের মনে। এই বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুকেশ বিশ্বাস বলেন, "এই মাঠে অনেকেই খেলাধুলো করেন। নিশ্চয় কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে বোমাগুলো রাখা হয়েছিল মাঠের পাশে। কোনও অঘটনও তো ঘটতে পারত! পুলিশের উচিত সঠিক তদন্ত করে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা। নইলে বাসিন্দাদের আতঙ্ক আরও বাড়বে।"
আরও পড়ুন: