পানিহাটি, 22 মে : শেষ রক্ষা হল না ৷ প্রথম থেকেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছিলেন পরিবার ৷ একাধিকবার খড়দা থানায় জানিয়েও লাভ হল না ৷ নিখোঁজ হওয়ার 21 দিনের মাথায় শ্রীরামপুরের একটি জলাশয় থেকে মিলল পানিহাটির প্রিন্টিং ব্যবসায়ী শুভজ্যোতি বোসের গলাকাটা দেহ (body of Panihati businessman recovered after 21 days missing) ৷ ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় পানিহাটি (Panihati News) পৌরসভার 5 নম্বর ওয়ার্ডে । মৃত ব্যবসায়ীর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন পরিবারের লোকেরা । সেইসঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছেন তাঁরা ।
পরিবারের অভিযোগ, "নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ যদি সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হত, তাহলে এভাবে শুভজ্যোতিকে খুন হতে হত না । কিন্তু সবকিছু জেনেও খড়দা থানার পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি । তাঁদের নিষ্ক্রিয়তার জন্যই খুন করার সাহস পেয়েছে দোষীরা ।" খুনে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবিও জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে ।
সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে হুগলির উত্তরপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে আনতে গিয়ে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান পানিহাটির নেতাজি সুভাষচন্দ্র রোডের বাসিন্দা শুভজ্যোতি বোস । 1 মে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় শুভজ্যোতি বলে যান পরের দিনই ফিরে আসবেন । কিন্তু বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও ছেলে বাড়িতে ফিরে না আসায় দুশ্চিন্তায় পড়ে যান বৃদ্ধ বাবা-মা । খোঁজ পেতে ছেলের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন বাবা ধ্রুবজ্যোতি বোস । কিন্তু মোবাইল সুইচ অফ থাকে ৷ এরপর হঠাৎ একদিন শুভজ্যোতি ফোন করে বাড়িতে জানায়, স্ত্রী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে জোর করে আটকে রেখেছে । সে ভাল নেই । এমন কথার পরই মোবাইল আবারও সুইচ অফ হয়ে যায় । এরপর থেকে যতবার ছেলের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন বাবা-মা ততবার সুইচ অফ বলেছে শুভজ্যোতির মোবাইল ।
বিপদ বুঝে ছেলের সন্ধান পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হন ধ্রুবজ্যোতি বাবু । খড়দা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন । কিন্তু তারপরও পুলিশ শুভজ্যোতির খোঁজ পেতে সেভাবে কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ তাঁর । তারই মধ্যে ছেলে নিখোঁজ হওয়ার 21 দিনের মাথায় শনিবার রাতে খড়দা থানা থেকে পরিবারের কাছে খবর আসে শ্রীরামপুরের একটি পানশালার পিছনে জলাশয় থেকে নিখোঁজ শুভজ্যোতির গলাকাটা দেহ মিলেছে । খবর পেয়েই রবিবার শ্রীরামপুর হাসপাতালে ছুটে যান পরিবারের লোকেরা । দেহ পেতে যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় থানার সঙ্গেও । ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ।
এদিকে এই ঘটনা চাউর হতেই নিহত ব্যাবসায়ীর পানিহাটির বাড়িতে ভিড় বাড়তে থাকে প্রতিবেশীদের । তাঁরাও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন । যদিও এই বিষয়ে পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ।
আরও পড়ুন : Businessman Missing : স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে 16 দিন ধরে নিখোঁজ পানিহাটির ব্যবসায়ী