ব্যারাকপুর, 23 ডিসেম্বর :গান্ধিজি বলেননি । কিন্তু তৃণমূলকে পালটা মারের নিদান দিতে গিয়ে গান্ধিজিকে টেনে আনলেন BJP-র ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং । তিনি বলেন, "গান্ধিজি বলেছেন এক গালে থাপ্পড় মারলে অন্য গালও বাড়িয়ে দিতে । তবে দ্বিতীয় বার মারলে কী করতে হবে সেটা উনি বলেননি। আমি দ্বিতীয়বারটা বলে দিলাম ৷" রবিবার বিকেলে উত্তর 24 পরগনার নিউ ব্যারাকপুরে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির সমর্থনে দলীয় এক জনসভায় যোগ দিতে গিয়ে এই কথা তিনি বলেন । সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্জুন সিং বলেন, "আমরা শুধু পড়ে পড়ে মার খাব এটা তো বেশিদিন চলতে পারে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের লোকদের হাতে মার খেতে খেতে পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তাই এবার মারের বদলা মার হবে ৷"
নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে রাজ্যজুড়ে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে । বিক্ষোভ, মিছিল বিভিন্ন জায়গায় অগ্নি সংযোগ ঘটনা ঘটে । BJP-র অভিযোগ, আন্দোলনকারীরা তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করে, মারধর করে । এর ফলে বেশ কয়েকজন BJP কর্মী-সমর্থক আহত হন । এই ঘটনার সমালোচনায় কর্মী-সমর্থকদের পালটা মারের উপদেশ দিতে গিয়ে গান্ধিজির প্রসঙ্গ তোলেন সাংসদ অর্জুন সিং । তিনি বলেন, BJP কর্মীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের লোকেদের হাতে মার খেতে খেতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে । তাই এবার মারের বদলা মার হবে । সাংসদ হিসেবে তিনি এভাবে আইন তুলে নেওয়ার কথা বলতে পারেন কি না সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে অর্জুন সিং বলেন , "আমি সংবিধানের মধ্যেই কথা বলছি । এই কথাটা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে বলে দেবেন ৷" এ প্রসঙ্গে গান্ধিজির প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন অর্জুন সিং । তিনি বলেন, "গান্ধিজি বলেছেন এক গালে থাপ্পড় মারলে অন্য গালও বাড়িয়ে দিতে । তবে দ্বিতীয়বার মারলে কী করতে হবে সেটা উনি বলেননি। আমি দ্বিতীয়বারটা বলে দিলাম ৷" দ্বিতীয়বারটা কী করবেন জিজ্ঞাসা করা হলে অর্জুন সিং বলেন, " দ্বিতীয়বার তার জবাব ও উত্তর দেওয়া হবে । থাপ্পড় মারব । মারের বদলা পালটা মার হবে । শুধু মার খাব, আর হাতজোড় করে তৃণমূলকে সম্মান জানাব, এটা বেশিদিন হতে পারে না। তাই এবার মার দিলে পালটা মার হবে ৷"
এই প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি, " সংবিধানে সেল্ফ ডিফেন্সের কথা আছে। সেটা সংবিধানে দেখলেই জানা যাবে ৷" খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে আক্রমণ করে অর্জুন সিং বলেন, "জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের খাদ্য দপ্তর থেকে তাঁর সাগরেদরা ২০০ বেশি ভুয়ো কো অপারেটিভ বানিয়েছে। সেখানে কেনার নামে তারা ভুয়ো চেক নেয়। নগদ টাকা দিয়ে দেয় ।কিন্তু কোনও জিনিস কেনা হয় না ৷" তাঁর অভিযোগ, "রেশন দোকানে গ্রাহকের সঙ্গে রেশন কার্ডের বিস্তর অমিল রয়েছে। জিনিসপত্র চুরি করে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। সেটা হচ্ছে FCI গোডাউন থেকেই । এই দুর্নীতি ধরে ফেলায় এক IAS অফিসারকে অপমান করায় তিনি কেন্দ্রে পোস্টিং নিতে বাধ্য হয়েছেন। খাদ্য দপ্তরের সেই দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। CBI তা প্রমাণ করে দেবে ৷"
রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত নিয়ে তিনি রাজ্যপালের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে অর্জুন সিং বলেন, "সাংবিধানিক পদকে অপমান করে মুখ্যমন্ত্রী নিজের ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা করছেন।"