ETV Bharat / state

বন্ধের মুখে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের অশোকনগর মাতৃসদন

তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছিল অশোকনগর মাতৃসদন হাসপাতাল । বলা হত, কম খরচে প্রসূতিদের চিকিৎসার জন্য জেলার অন্যতম সেরা হাসপাতাল এটি ৷ কিন্তু মাত্র 15 বছরেই সেই স্বপ্নের যবনিকা পতন ৷ বন্ধের মুখে সেই হাসপাতাল ৷

ছবি
ছবি
author img

By

Published : Sep 6, 2020, 7:57 AM IST

অশোকনগর, 5 সেপ্টেম্বর : অশোকনগর মাতৃসদন ৷ পোশাকী নাম প্রজ্ঞানন্দ সরস্বতী সেবা সদন ৷ উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছিলেন, অশোকনগরের মাতৃসদন হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের অন্যতম সূচক । কলকাতা থেকে 40 কিলোমিটার দূরের এই পৌর হাসপাতাল ঘিরে কম খরচে ভালো চিকিৎসার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন অনেকে । কিন্তু মাত্র 15 বছরেই সেই স্বপ্নের যবনিকা পতন । প্রায় বন্ধের মুখে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সেই স্বপ্নের হাসপাতাল।

তৎকালীন বাম সরকার 2005 সালে রাজ্যের প্রতিটি পৌরসভায় একটি করে অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় । সরকারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অশোকনগর কল্যাণগড় পৌরসভার 18 নম্বর ওয়ার্ডে গড়ে তোলা হয়েছিল এই হাসপাতালটি । প্রায় 32 বিঘা জমিতে এই হাসপাতাল গড়ে ওঠে । 2005 সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হাসপাতালের উদ্বোধন করতে আসেন । সেদিন উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, অশোকনগরের মাতৃসদন হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের অন্যতম সূচক। প্রথমে 25টি শয্যা নিয়ে হাসপাতাল শুরু হয়েছিল । কিন্তু পরে তা বেড়ে হয় 50 । প্রসূতিদের জন্য জেলার সবচেয়ে সেরা অপারেশন থিয়েটার ছিল এই মাতৃসদনে । 2011 সালে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের উদ্যোগে হাসপাতালে চালু হয় অত্যাধুনিক চক্ষু চিকিৎসা বিভাগও।

বন্ধের মুখ অশোকনগর মাতৃসদন হাসপাতাল

খাতায় কলমে আউটডোর বিভাগে 17 জন চিকিৎসক রয়েছেন । নার্স রয়েছেন 10 জন । আয়া রয়েছেন 11 জন । তা ছাড়া অন্য কাজকর্ম করার জন্য 36 জন কর্মী রয়েছেন । ইনডোর বিভাগের জন্য চিকিৎসক রয়েছেন আরও 9 জন। অশোকনগর-কল্যাণগড় পৌরসভার 23টি ওয়ার্ডের 1 লাখ 32 হাজার বাসিন্দার ভরসা এই মাতৃসদন । পাশাপাশি হাবড়া, গুমা, বিড়া সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসতেন । কিন্তু প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগে সেই হাসপাতাল আজ বন্ধের মুখে । ইনডোর বিভাগে রোগী ভরতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। আউটডোর বিভাগটিও টিমটিম করে চলছে ।

মে মাসে আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালের কিছুটা অংশ । হাসপাতালের মেঝে ফেটে গিয়েছে । এখনও মেরামত হয়নি । স্টোররুমে কয়েক লাখ টাকার ওষুধ নষ্ট হচ্ছে । বন্ধ অপারেশন থিয়েটার । স্থানীয় বাসিন্দা সুখদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের অশোকনগরের গর্ব ছিল এই মাতৃসদন । আজ সেটা বন্ধ হওয়ার মুখে । আমাদের ভালো চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা শেষের মুখে । আমরা চাই, হাসপাতালটার প্রতি সরকার নজর দিক।"

অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা CPI(M) নেতা সত্যসেবী কর বলেন, "বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই মাতৃসদন নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান তৃণমূল সরকার ও তৃণমূল পৌরবোর্ড সেদিকে নজর দেয়নি । হাসপাতালটা আজ বন্ধের মুখে । মাতৃসদনের আজকের এই পরিণতির জন্য বর্তমান সরকার ও পৌরবোর্ড দায়ি।"

যদিও অশোকনগর পৌরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অনুপ দাস বলেন, "হাসপাতালের ইনডোর বিভাগে রোগী ভরতি অনেক আগেই বন্ধ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি হাসপাতালকে পুনরুজ্জীবিত করতে। কিন্তু কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এখানে আসতে চাইছেন না । আমরা চিকিৎসকদের কাছে অনেক অনুরোধ করেছি । কিন্তু তাঁরা রাজি হননি । তাই মাতৃসদনের আজ এরকম অবস্থা হয়েছে । তবে আমরা আশাবাদী আবার এই হাসপাতাল আগের অবস্থায় ফিরবে।"

অশোকনগর, 5 সেপ্টেম্বর : অশোকনগর মাতৃসদন ৷ পোশাকী নাম প্রজ্ঞানন্দ সরস্বতী সেবা সদন ৷ উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছিলেন, অশোকনগরের মাতৃসদন হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের অন্যতম সূচক । কলকাতা থেকে 40 কিলোমিটার দূরের এই পৌর হাসপাতাল ঘিরে কম খরচে ভালো চিকিৎসার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন অনেকে । কিন্তু মাত্র 15 বছরেই সেই স্বপ্নের যবনিকা পতন । প্রায় বন্ধের মুখে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সেই স্বপ্নের হাসপাতাল।

তৎকালীন বাম সরকার 2005 সালে রাজ্যের প্রতিটি পৌরসভায় একটি করে অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় । সরকারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অশোকনগর কল্যাণগড় পৌরসভার 18 নম্বর ওয়ার্ডে গড়ে তোলা হয়েছিল এই হাসপাতালটি । প্রায় 32 বিঘা জমিতে এই হাসপাতাল গড়ে ওঠে । 2005 সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হাসপাতালের উদ্বোধন করতে আসেন । সেদিন উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, অশোকনগরের মাতৃসদন হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের অন্যতম সূচক। প্রথমে 25টি শয্যা নিয়ে হাসপাতাল শুরু হয়েছিল । কিন্তু পরে তা বেড়ে হয় 50 । প্রসূতিদের জন্য জেলার সবচেয়ে সেরা অপারেশন থিয়েটার ছিল এই মাতৃসদনে । 2011 সালে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের উদ্যোগে হাসপাতালে চালু হয় অত্যাধুনিক চক্ষু চিকিৎসা বিভাগও।

বন্ধের মুখ অশোকনগর মাতৃসদন হাসপাতাল

খাতায় কলমে আউটডোর বিভাগে 17 জন চিকিৎসক রয়েছেন । নার্স রয়েছেন 10 জন । আয়া রয়েছেন 11 জন । তা ছাড়া অন্য কাজকর্ম করার জন্য 36 জন কর্মী রয়েছেন । ইনডোর বিভাগের জন্য চিকিৎসক রয়েছেন আরও 9 জন। অশোকনগর-কল্যাণগড় পৌরসভার 23টি ওয়ার্ডের 1 লাখ 32 হাজার বাসিন্দার ভরসা এই মাতৃসদন । পাশাপাশি হাবড়া, গুমা, বিড়া সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসতেন । কিন্তু প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগে সেই হাসপাতাল আজ বন্ধের মুখে । ইনডোর বিভাগে রোগী ভরতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। আউটডোর বিভাগটিও টিমটিম করে চলছে ।

মে মাসে আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালের কিছুটা অংশ । হাসপাতালের মেঝে ফেটে গিয়েছে । এখনও মেরামত হয়নি । স্টোররুমে কয়েক লাখ টাকার ওষুধ নষ্ট হচ্ছে । বন্ধ অপারেশন থিয়েটার । স্থানীয় বাসিন্দা সুখদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের অশোকনগরের গর্ব ছিল এই মাতৃসদন । আজ সেটা বন্ধ হওয়ার মুখে । আমাদের ভালো চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা শেষের মুখে । আমরা চাই, হাসপাতালটার প্রতি সরকার নজর দিক।"

অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা CPI(M) নেতা সত্যসেবী কর বলেন, "বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই মাতৃসদন নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান তৃণমূল সরকার ও তৃণমূল পৌরবোর্ড সেদিকে নজর দেয়নি । হাসপাতালটা আজ বন্ধের মুখে । মাতৃসদনের আজকের এই পরিণতির জন্য বর্তমান সরকার ও পৌরবোর্ড দায়ি।"

যদিও অশোকনগর পৌরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অনুপ দাস বলেন, "হাসপাতালের ইনডোর বিভাগে রোগী ভরতি অনেক আগেই বন্ধ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি হাসপাতালকে পুনরুজ্জীবিত করতে। কিন্তু কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এখানে আসতে চাইছেন না । আমরা চিকিৎসকদের কাছে অনেক অনুরোধ করেছি । কিন্তু তাঁরা রাজি হননি । তাই মাতৃসদনের আজ এরকম অবস্থা হয়েছে । তবে আমরা আশাবাদী আবার এই হাসপাতাল আগের অবস্থায় ফিরবে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.