বারাসত , 30 মার্চ : বাইক দুর্ঘটনায় আহত যুবকের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল । কাঠগড়ায় বারাসতের এক বেসরকারি হাসপাতাল । বেড না থাকার অজুহাতে মঙ্গলবার আহত যুবককে ভর্তি না নেওয়ায় 20 থেকে 25 জন ছেলে ওই হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ । নথিপত্র তছনছ করার পাশাপাশি আসবাবপত্র, কম্পিউটার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে । পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতির সামাল দেয় । যদিও গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
জানা গেছে, মৃত অরিন্দম দে (22) তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একজন সক্রিয় কর্মী । বাড়ি মধ্যমগ্রাম পৌরসভার 19 নম্বর ওয়ার্ডে । বাবা, মা ছাড়াও বাড়িতে তাঁর ছোট বোন রয়েছে । সংগঠনের প্রতি নিষ্ঠাবান ওই যুবক এদিন সকালে তৃণমূল প্রার্থী রথীন ঘোষের ভোট প্রচারে পৌরসভার 1 নম্বর ওয়ার্ডে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন । বাদু রোডের হুমাইপুর মোড়ে আচমকাই তাঁর বাইকের হ্যান্ডেল লক হয়ে যায় । নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ওই যুবকের বাইক । মাথায় গুরুতর চোট লাগে তাঁর । এরপর স্থানীয় লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে মধ্যমগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সিটি স্ক্যানের জন্য আহত যুবককে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় ।
আরও পড়ুন : ‘বেচারা’ মুকুল শুভেন্দুর মতো খারাপ নয়, সার্টিফিকেট মমতার
সেই মত এদিন বারাসতের যশোর রোডের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে আহত যুবককে নিয়ে যান পরিবার ও তাঁর সহকর্মীরা । বেড না থাকার অজুহাতে সেখানে বেশ কিছুক্ষণ ফেলে রাখা হয় তাঁকে । করা হয়নি কোনও চিকিৎসা । এমনই অভিযোগ তুলেছে যুবকের সহকর্মীরা । পরে, সেখান থেকে আহত যুবককে ভর্তি করা হয় বারাসত হাসপাতালে । কিছুক্ষণ পর সেখানেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের ।
এই ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা দীপঙ্কর দত্ত বলেন, "সঠিক সময়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে যদি অরিন্দমের চিকিৎসা হত, তাহলে এভাবে মরতে হত না । হাসপাতালে কোনও ভাঙচুর করা হয়নি । কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগ করছে তা সঠিক নয় ৷"
মৃতের অপর সহকর্মী শুভজিৎ পাল বলেন, "আমরা কেন হাসপাতালে ঝামেলা করতে যাবো । ঝামেলা করলে তো আর ওকে ফিরে পাব না । আমার একটাই অনুরোধ, চিকিৎসার করার পর যেন বেসরকারি হাসপাতাল গুলো টাকা চায় । না হলে অরিন্দমের মতো আরও অনেকে এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে "।
এদিকে গণ্ডগোলের খবর পেয়ে বেসরকারি ওই হাসপাতালে আসে বারাসত থানার পুলিশ ।
ভাঙচুরের বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী সুশান্ত ঘোষ বলেন,"নিহতের পরিবারের লোকজন যে অভিযোগ করছে তা ঠিক নয় । হঠাৎ 20 থেকে 25 জন ছেলে এসে ভাঙচুর করতে শুরু করে । বাঁধা দিতে গেলে মারধর করা হয় এক নিরাপত্তারক্ষীকে । ভেঙে দেওয়া হয় হাসপাতালের আসবাবপত্র সহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস । পুলিশ আসার আগেই সেখান থেকে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা "।