বারাসত, 15 মে: কোরোনায় আক্রান্ত বায়ু সেনার কর্মী । সংক্রমণ ঠেকাতে বারাসত পৌরসভার 31 নম্বর ওয়ার্ডের আক্রান্তের এলাকা সিল করল পুলিশ । সেই সঙ্গে,আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা পরিবারের লোকজনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কোয়ারানটিন সেন্টারে । হোম কোয়ারানটিনে রাখা হয়েছে আক্রান্ত বায়ু সেনার কর্মীর ভাড়াটিয়াকেও । পৌরসভার তরফে আজ আক্রান্তের বাড়ি ও এলাকার রাস্তাঘাট স্যানিটাইজ়ড করা হয়েছে । সিল করা এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ার নিযুক্ত করেছে পুলিশ ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, বছর পঞ্চান্নর ওই ব্যক্তি পানাগড়ের বায়ু সেনায় কর্মরত । 5 মে সেখান থেকে বারাসতের হৃদয়পুরের বাড়িতে ফেরেন ।পরিবারে তাঁর স্ত্রী ছাড়াও এক ছেলে রয়েছে । অভিযোগ,জ্বর অবস্থায় বাড়ি ফেরার পরও তিনি নিয়মিত বাজার ও মর্নিং ওয়াক করেছেন । এরপর, 10 মে কোরোনার উপসর্গ নিয়ে তাঁকে ভরতি করা হয় ব্যারাকপুরের সেনা হাসপাতালে । সেখান থেকে তাঁর সোয়াব টেস্টের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় বেলঘাটা ID-তে । গতকাল সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । এরপরই, সেনা হাসপাতাল থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বেলেঘাটা ID হাসপাতালে । সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন তিনি ।
খবর জানার পরই, গতরাতে আক্রান্তের এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নেয় বারাসত থানার পুলিশ । সংক্রমণ ঠেকাতে এলাকার বিভিন্ন গলি বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে সিল করে দেওয়া হয় । সেই সঙ্গে, আক্রান্তের স্ত্রী ও ছেলেকে বারাসতের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ারানটিন সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ । সেখানেই এখন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁদের ।পাশাপাশি, বায়ু সেনার বাড়ির এক ভাড়াটিয়ার পরিবারকে হোম কোয়ারানটিনে থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে । এই বিষয়ে 31 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শুক্লা ঘোষ বলেন, "বায়ু সেনায় কর্মরত ওই ব্যক্তি যে কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তা চাপার চেষ্টা করেছিলেন পরিবারের লোকজন । স্বাস্থ্য কর্মীরা গতকাল আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে । এরপর তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি । তখন তাঁর পরিবারের তরফে বিষয়টি স্বীকার করা হয় । এরপর, রাতেই পুলিশ প্রশাসনের তরফে ওই এলাকা সিল করে দেওয়া হয়েছে । পৌরসভার তরফে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে ।"
এদিকে, আজ সকালে আক্রান্তের বাড়ি ও এলাকার রাস্তাঘাট স্যানিটাইজ়ড করার কাজে হাত দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ । হাইপোক্লোরাইড সলিউশন পদ্ধতিতে এলাকার রাস্তাঘাট ধুইয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয় । এতদিন কোরোনা মুক্ত ছিল ওই এলাকা । তাই পৌরসভা ও পুলিশ প্রশাসন যাবতীয় পদক্ষেপ নিলেও আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা । যদিও, তাঁদের আতঙ্ক না হওয়ার পরামর্শই দিচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ । অন্যদিকে, রেড জ়োন বারাসতে সংক্রমিতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে । দু'দিন আগেই কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এক চিকিৎসক । এবার আক্রান্ত হলেন বায়ু সেনার কর্মী । পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে জেলা প্রশাসনের । আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না সাধারণ মানুষেরও । এই অবস্থায় পরিস্থিতির মোকাবিলা করে সংক্রমণ ঠেকানোয় এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের কাছে ।