বারাসত (উত্তর 24 পরগনা), 21 এপ্রিল: খড়দার পর এবার বারাসত । ফের মাওবাদী পোস্টার পড়ল শহরের উপকণ্ঠে । মার্কসবাদী লেলিনবাদী মাওবাদী সংগঠনের তরফে ওই পোস্টার পড়েছে শিয়ালদা-বনগাঁ শাখার হৃদয়পুর স্টেশনে । শুক্রবার দুপুরে হঠাৎই এই পোস্টার নজরে আসে পথচলতি সাধারণ মানুষের । যা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে স্টেশন চত্বর এলাকায় । পরে বারাসত জিআরপি থেকে রেলের পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পোস্টারগুলি ছিঁড়ে দেন । কে বা কারা এই পোস্টারগুলি সেখানে সাঁটাল, তা খতিয়ে দেখছে রেল পুলিশ ।
সূত্রের খবর, হৃদয়পুর স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের বেশ কয়েকটি বন্ধ দোকানের টিনের গায়ে সাঁটানো ছিল মাওবাদী পোস্টারগুলি । পোস্টারের নিচে লেখা মার্কসবাদী লেলিনবাদী মাওবাদী সংগঠন । কিন্তু দিনেদুপুরে হৃদয়পুর স্টেশনের মতো জনবহুল এলাকায় কীভাবে এই পোস্টার পড়ল ? কারাই বা এর নেপথ্যে রয়েছে ? তাহলে কি আবার সেখানে মাওবাদীরা মাথাচাড়া দিচ্ছে ? এমনই সব প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে । 2008-09 সাল নাগাদ এই হৃদয়পুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকেই মাওবাদী নেতা সৌমেনকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স । তাহলে কি ধৃত মাওবাদী নেতা সৌমেনের ফলোয়াররা পোস্টারকাণ্ডের পিছনে রয়েছে ? সেই আতঙ্কই এখন তাড়া করে বেড়াচ্ছে হৃদয়পুরবাসীকে ।
এই বিষয়ে লাল্টু শূর নামে এক বাসিন্দা বলেন, "এখানে এসে দেখলাম মাওবাদীদের বেশকিছু পোস্টার পড়েছে । যেখানে বিভিন্ন দাবিদাওয়ার মাধ্যমে তাঁরা সমাজকে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন । ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাকও দিয়েছে ওরা । আমি মনে করি যেভাবে মানুষের ওপর বোঝা চাপছে । তাতে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে । পোস্টারের সেই দাবির সঙ্গে সহমত আমিও । সমাজ যে কায়দায় চলছে তার অবশ্যই পরিবর্তন হওয়া দরকার ৷"
এদিকে, মাওবাদী ও তৃণমূলকে এক সারিতে রেখে আক্রমণ শানিয়েছেন বারাসত পৌরসভার বিরোধী দলনেতা বরুণ ভট্টাচার্য । তাঁর কথায়, "তৃণমূল যখনই বেকায়দায় পড়ে, তখনই মাওবাদীদের প্রসঙ্গ সামনে চলে আসে । ক্ষমতায় আসার আগে আমরা তো দেখেছি কীভাবে কিষেণজি মুখ্যমন্ত্রী পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চেয়েছিলেন । আবার তৃণমূল সরকার রাজ্যে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর মাওবাদীদের একাংশ কীভাবে শাসকদলে নাম লিখিয়েছিল, সেটাও আমরা দেখেছি ।
তিনি আরও বলেন, ‘‘তাই, আমরা মনে করি মাওবাদী ও তৃণমূলের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই । যা মাওবাদী, তাই তৃণমূল । হৃদয়পুর স্টেশনে মাওবাদী পোস্টারে যে ইভিএম বর্জনের কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে সহমত নই ৷ ইভিএমের মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত ফলাফলই শেষ কথা । এর বাইরে কিছু নেই ৷" যদিও, শাসকদলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এই বিষয়ে ।