আমডাঙা, 11 ডিসেম্বর: বসিরহাটের পর আমডাঙা। মিষ্টির দোকানে গুলি চালানোর ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই এবার ব্যবসায়ীর গাড়ি লক্ষ্য করে চলল গুলি! ঘটনার ঠিক আগে বাড়িতে ঢুকে যাওয়ায় বরাত জোরে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন শেখ ফরিদ হাসান নামে ওই ব্যবসায়ী। তবে, তাঁর এসইউভি গাড়িতে বুলেটের চিহ্ন স্পষ্ট। গাড়ির ভিতর থেকে মিলেছে একটি গুলির খোলও। অর্থাৎ ব্যবসায়ীর গাড়ি লক্ষ্য করে যে গুলি চালানো হয়েছিল তা কিন্তু পরিষ্কার।
কী কারণে গুলি চালানো হল তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। এনিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন ওই ব্যবসায়ীও। তবে, ঘটনার পিছনে ব্যবসায়িক সংক্রান্ত পুরনো কোনও শত্রুতা থাকতে পারে বলে অনুমান আমডাঙা থানার পুলিশের। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, শেখ ফরিদের বাড়ি আমডাঙার চণ্ডিগড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিকিরা গ্রামে। তিনি জমি এবং প্রমোটিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। রবিবার রাত পৌনে 12টা নাগাদ ওই ব্যবসায়ী একটি বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে সিকিরা গ্রামের বাড়িতে ফেরেন।
এর কিছুক্ষণ বাদেই তিনি বাড়ির বাইরে বিকট আওয়াজ শুনতে পান। অন্যকিছু ঘটনা ভেবে তখন আর বাড়ির বাইরে বেরোননি ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ।সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি লক্ষ্য করেন, বাড়ির সামনে থাকা তাঁর এসইউভি গাড়ির পিছনে বুলেটের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। অর্থাৎ গুলিতে গাড়ির পিছনের দিকের অংশে ফুটো হয়ে গিয়েছে। এই দৃশ্য দেখার পর গাড়ির পিছনের দরজা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় জমি ব্যবসায়ীর ৷ সেখানে সিটের তলায় পড়ে থাকতে দেখেন একটি গুলির খোল।
এরপরই তিনি আমডাঙা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাড়ির ভিতর থেকে গুলির খোলটি বাজেয়াপ্ত করে। সেই সঙ্গে ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে তথ্য আদায়েরও চেষ্টা করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ব্যবসায়ী আগে তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে, ইদানিং প্রত্যক্ষ রাজনীতির থেকে দূরে রয়েছেন। যদিও, ব্যবসা নিয়ে কারোর সঙ্গে তাঁর কোনও ঝামেলা নেই বলে দাবি করেছেন শেখ ফরিদ হাসান। তিনি বলেন, "তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত থাকাকালীন তাঁকে লক্ষ্য করে আগেও দু'বার গুলি চালানো হয়েছিল। এবারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। আমি চাই, যারাই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকুক তাদের যেন দ্রুত গ্রেফতার করা হয়।"
এদিকে, সোমবার দুপুরে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আমডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ী। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, এই আমডাঙাতেই গত 17 নভেম্বর বোমা মেরে খুন করা হয়েছিল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডলকে। তদন্তে নেমে সেই খুনের পিছনেও জমি ব্যবসা সংক্রান্ত বিবাদ উঠে এসেছিল পুলিশের হাতে। এবারও সেই গুলি চালানোর ঘটনাতে এই ধরনের পুরনো কোনও বিবাদ রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: