হাবড়া, 11 জুন: বেজে গিয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা ৷ সময় যত এগোচ্ছে ততই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ ৷ ঠাকুরনগরের পর এবার হাবড়ার জনসভা থেকেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে একহাত নিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । রবিবার বিকেলে হাবড়ার শিমুলপুর নবীনচন্দ্র জিএসএফপি স্কুল মাঠের জনসভা থেকে শান্তনু ঠাকুরকে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক ৷
জনসভা থেকে অভিষেক বলেন, "কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা জুতো পড়ে ঠাকুরবাড়ির মন্দিরে প্রবেশ করেছে । ছবি দিয়ে আমি তার টুইটও করেছি । কেন্দ্রীয় বাহিনী শান্তনু ঠাকুরের নিরাপত্তা রক্ষায় আছেন । তাঁকে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে আজ মতুয়াদের পবিত্র ভূমিকে অপমান করল বিজেপি সরকার । এদের কখনওই ক্ষমা করবেন না । মতুয়াদের কাছে সেই আবেদন রইল আমার ।"
এদিনের জনসভা থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেও সুর চড়ান অভিষেক । তিনি বলেন, "ভোটের আগে এরা যা বলে ভোটে জিতে ঠিক তার উলটোটা করে । মানুষের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর দিল্লির তল্পিবাহকতা করতে গিয়ে বিজেপি নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলছে । এদের আপনারা জবাব দেবেন না ? 100 দিনের টাকা বন্ধ । আবাস যোজনার 11 লক্ষ 35 হাজার কোটি টাকা বকেয়া । রাস্তা, পানীয় জল, সর্বশিক্ষা মিশন, মিড-ডে মিলের টাকাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । রাজনৈতিকভাবে লড়াই করতে না পেরে বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার । এর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি অভিযান করব আমরা ।"
এদিকে, পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "খুব গায়ে জ্বালা হয়েছে ওদের পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়ায় । তাই, কীভাবে পঞ্চায়েত ভোট আটকানো যায় তা নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে । তৃণমূল আছে মানুষের দরবারে । আর বিজেপি রয়েছে হাইকোর্টের করিডোরে । প্রার্থী দিতে পারছে না । পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী আপনি (বিজেপি)খুঁজুন না ! মনোনয়ন জমা করার দায়িত্ব আমার ।" তিনি আরও বলেন, "বিজেপির কাছে তৃণমূলের মতো গুণ্ডা নেই । ক্ষমতা কিংবা কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই । সিবিআই, ইডি, ইনকাম ট্যাক্স-ও নেই । তৃণমূলের কাছে আছে জনসাধারণ । যেদিন থেকে তৃণমূলের জনজোয়ার শুরু হয়েছে সেদিন থেকে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে বিজেপি নেতাদের । তৃণমূলের জনজোয়ার এখন মানুষের জোয়ারে পরিণত হয়েছে । যত কুৎসা করবেন ততই গর্তে ঢুকে যাবেন ।"
আরও পড়ুন: ঠাকুরবাড়িতে সংঘর্ষ চরমে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের; আক্রান্ত শান্তনু ঠাকুরও
অন্যদিকে, কয়লা-গরু পাচার মামলা হোক কিংবা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ড, নিজের স্বচ্ছতা প্রমাণ করতে এদিনও ফাঁসির মঞ্চে ঝুলে পড়ার দাবি করেছেন অভিষেক । তিনি বলেন, "সারদা, নারদা থেকে শুরু করে কয়লা, গরু পাচার, এমনকী নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এতটুকুও যদি প্রমাণ জনসমক্ষে আসে তাহলে সিবিআই কিংবা ইডির দরকার হবে না । আমি নিজেই ফাঁসির মঞ্চে ঝুলে পড়ব ।" তাঁর মতো এভাবে প্রকাশ্যে এমন কথা কি বলতে পারবেন শুভেন্দু, সুকান্ত এবং দিলীপ ঘোষের মতো বিজেপি নেতারা, জনসভা থেকে প্রশ্ন তোলেন অভিষেক ৷