পুরুলিয়া, ৬ মার্চ: স্কুলের মিড ডে মিলের রান্না কারা করবে, তা নিয়ে বচসায় জড়াল দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তার জেরে স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে চলল বিক্ষোভ। তালাবন্ধ অবস্থায় স্কুলের ভেতরে আটকে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়ারা। ঘটনাটি পুরুলিয়ার ঝালদা ১ নম্বর চক্রের চাতামঘুটু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। আজ সকাল ১০টা থেকে বিক্ষোভ চলে। লাটে ওঠে স্কুলের মিড ডে মিলের রান্না ও পড়াশুনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছায় ঝালদা থানার পুলিশ। পুলিশ এসে আটকে পড়া শিক্ষক শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের উদ্ধার করে। প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা বিক্ষোভ চলে।
এলাকার মা গঙ্গা মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দলনেত্রী আরতি মাহাতর অভিযোগ, "এই এলাকায় মোট ১৬ টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। কিন্তু চাতামঘুটু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকেই একটি মাত্র গোষ্ঠী মিড ডে মিল রান্না করে আসছে। এটা বেআইনি।" তাঁদের দাবি, সব গোষ্ঠীকেই রান্না করার সুযোগ দেওয়া দরকার। প্রতিটি গোষ্ঠী ১ মাস করে রান্না করবে। তাতে প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যদের আয় হবে। এই দাবি তুলে মা গঙ্গা মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা আজ সকাল ১০টা থেকেই স্কুলে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় মিড ডে মিল রান্না। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আটকে রাখা হয় শ্রেণিকক্ষের ভেতরে।
অন্যদিকে চাতামঘুটু উন্নয়ন সমিতির স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠীর সদস্যা আদরি মাহাত বলেন, "বিগত ২০০৪ সাল থেকে মাত্র ৪০০ টাকা বেতনে আমরা মিড ডে মিল রান্না করে আসছি। এতদিন ওরা কোথায় ছিল? আজ যখন স্কুলের রাঁধুনিদের একটু বেতন বেড়েছে অমনি দল বেঁধে এসেছেন সকলে। এটা আমরা হতে দেব না। রান্না আমরাই করব।"
দুই গোষ্ঠীর এই বিতর্কের জেরে স্বভাবতই লাটে ওঠে পড়াশোনা। এই বিষয়ে স্কুলের শিক্ষিকা মধুমিতা মাহাত বলেন, "দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে আমরাও খুব আতঙ্কে রয়েছি। স্কুলে পড়াশুনা, শিশুদের খাওয়া-দাওয়া সব বন্ধ হয়ে গেছে। ওদের জন্য ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রান্নার সমস্যা মেটাতে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা দিতে BDO, শিক্ষাদপ্তর ও ঝালদা থানায় লিখিত ভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। এবার তাঁরা যা ব্যবস্থা নেবেন তাই হবে।" ঘটনাস্থানে পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।