কাশীপুর (পুরুলিয়া), 17 জুলাই : বাবাকে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টা ৷ দ্বারকেশ্বরের তীর থেকে উদ্ধার 72 বছরের বৃদ্ধের দেহ ৷ কীর্তিমান ছেলের নৃশংসতায় হতবাক প্রতিবেশীরা ৷ অভিযুক্ত যুবক ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ পুরুলিয়ার কাশীপুর থানা এলাকার ঘটনা ৷
গত 13 জুলাই থেকে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন 72 বছরের মহেশ্বর সরেন ৷ কাশীপুরের মালঞ্চডি গ্রামের বাসিন্দা তিনি ৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ মহেশ্বরের তিন ছেলে ৷ তাঁদের মধ্যে বড় এবং ছোট ছেলে শ্রমিকের কাজ করেন ৷ কর্মসূত্রে খড়্গপুরে থাকেন তাঁরা ৷ তাই বৃদ্ধ মহেশ্বর থাকতেন মেজো ছেলে শ্রীকান্ত সরেন ও তাঁর স্ত্রী নমিতা সরেনের সংসারে ৷
আরও পড়ুন : স্ত্রীকে পুঁতে দিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি, সাতদিন পর ধরা পড়ল দুর্গন্ধে
ছেলে-বউমার সঙ্গে সম্পর্ক খুব একটা মধুর ছিল না বৃদ্ধের ৷ সূত্রের খবর, গত সোমবার (12 জুলাই, 2021) নমিতার সঙ্গে ঝামেলা হয় মহশ্বরের ৷ স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে বাবার সঙ্গে সেই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন শ্রীকান্তও ৷ অভিযোগ, এরপরই রাগের মাথায় বাবাকে ধরে লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করেন তিনি ৷ সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধের পক্ষে এই মার সহ্য করা সম্ভব ছিল না ৷ ফলে ছেলের হাতে মার খেয়েই প্রাণ দিতে হয় তাঁকে ৷
ঘটনার সময় মহেশ্বরের বড় এবং ছোট ছেলে বাড়িতে ছিলেন না ৷ প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বাবাকে খুন করার পর ভয় পেয়ে যান শ্রীকান্ত ৷ এরপর দেহটি প্রথমে বস্তায় ভরেন তিনি ৷ তারপর সাইকেল দেহ তুলে প্রায় 1 কিলোমিটার উজিয়ে পৌঁছে যান দ্বারকেশ্বরের তীরে ৷ সেখানেই বালি খুঁড়ে বাবার দেহ কবর দেন শ্রীকান্ত ৷
এদিকে, বাড়িতে ফিরে বাবাকে দেখতে না পেয়ে সন্দেহ হয় শ্রীকান্তর বড় ও ছোট ছেলের ৷ মেজো ভাইকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর কথায় একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে ৷ তাছাড়া, ঘরের নানা জায়গায় রক্তের ছোপও চোখ এড়ায়নি শ্রীকান্তের দাদা ও ভাইয়ের ৷ তাঁরা দেখেন, গোবর লেপে রক্তের দাগ লুকোনোর চেষ্টা করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : পরকীয়া সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে খুন
এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন মহেশ্বরের বড় ও ছোট ছেলে ৷ কাশীপুর থানায় বাবার নামে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁরা ৷ তদন্তে নেমে সন্দেহ হয় পুলিশেরও ৷ শ্রীকান্ত ও নমিতাকে চেপে ধরতেই প্রকাশ্যে চলে আসে গোটা ঘটনা ৷ খুন করে দেহ লোপাটের কথা স্বীকার করেন দম্পতি ৷ এরপর শুক্রবার শ্রীকান্তকে নিয়েই দ্বারকেশ্বরের তীরে পৌঁছয় পুলিশ ৷ বালি খুঁড়ে বৃদ্ধ মহেশ্বর সরেনের দেহ উদ্ধার করে তারা ৷ গ্রেফতার করা হয় তাঁর কীর্তিমান ছেলে ও ছেলের বউকে ৷