পুরুলিয়া, 14 ডিসেম্বর : উন্নয়নের ফলে নষ্ট হয়েছে ঝিলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ৷ আর তাই জেলার সাহেব বাঁধ ঝিল থেকে মুখ ফিরিয়েছে পরিযায়ী পাখিরা ৷ প্রতিবার শীতের শুরুতে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে এই ঝিলে আসে তারা ৷ তবে, এবার সেভাবে নজরে এল না তারা ৷ রেড ক্রাস্টেড পচার, গার্ডওয়াল, নর্দান সিলভারের দেখা মিললেও সংখ্যাটা খুবই কম ৷
পুরুলিয়ার নিবারণ সাহেব ঝিল বা সাহেববাঁধ ঝিলের উন্নয়নের ফলে নষ্ট হয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ৷ ঝিলের ধারে লাগানো নিয়ন আলো ৷ ঝিলে চলছে শিকারা ভ্রমণ ৷ বাঁধের পাড়ে গড়ে উঠেছে বহুতল, গ্যারাজ ৷ আর এই উন্নয়নের জন্য কেটে ফেলা হয়েছে অনেক বড় বড় গাছ ৷ এসব কারণেই কমেছে পরিযায়ী পাখির আসা ৷ আগে সাহেব বাঁধে 40টিরও বেশি প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসত ৷ কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে এসে শীতের শেষ পর্যন্ত থাকত তারা ৷ পাখি চিনতে ও দেখতে তৈরি হয়েছিল ওয়াচ টাওয়ারও ৷ তবে এখন পরিযায়ীদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়ে আছে ওয়াচ টাওয়ারও ৷
শিক্ষিকা মল্লিকা মাহাত বলেন, "দিন দিন সাহেববাঁধ ঝিলের পাড়ে গড়ে উঠেছে বহুতল ৷ গাড়ির আওয়াজ, কোলাহল পরিবেশের কারণে পাখিদের আনাগোনা খুবই কমেছে ৷ আগে এই ঝিলের পাড়ে দেখা মিলত বহু প্রজাতির পরিযায়ী পাখির ৷ কিন্তু, বর্তমানে পাখিদের উপস্থিতি নগন্য ৷ তার উপর ঝিলে শিকারা চলার কারণে পাখিদের অসুবিধা হচ্ছে ৷ ফলে সৌন্দর্যও কমছে ঝিলের ৷"
এবিষয়ে পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সাহেব বাঁধ ঝিলের চারপাশে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে পড়েছে ৷ চারপাশে রেস্তরাঁ, আলো, কোলাহল, গাড়ির হর্ন সবকিছুতেই অস্বস্তি বোধ করে পাখিরা ৷ সকলের উচিত প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা ৷ ঝিলের চারপাশে গাছ লাগিয়ে পাখিদের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা উচিত ৷ তাহলেই পাখিদের আনাগোনা বাড়বে ৷ নাহলে, এরপর পরিযায়ীদের আনাগোনাই বন্ধ হয়ে যাবে ৷"