জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার, 22 জানুয়ারি: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের মামলায় সঞ্জয় রায়কে আমরণ কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদালত ৷ সেই রায়ের পর আরও এক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিল আদালত ৷ নাবালিকা ভাইঝিকে যৌন নির্যাতনের মামলায় এই সাজা দিয়েছেন জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিন্টু সুর ৷
পকসো আদালতের বিশেষ সরকারি আইনজীবী দেবাশিস দত্ত জানান, নির্যাতিতা নাবালিকার বাবা 2021 সালের 14 জুন জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ৷ ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগে ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর মেয়েকে তাঁর ভাই দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে ৷ সেই অত্যাচারের জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে তাঁর মেয়ে ৷
প্রায় আড়াই বছর পর এই মামলার সাজা ঘোষণা হল আজ, বুধবার ৷ দেবাশিস দত্ত জানান, আসামিকে আমরণ কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ পাশাপাশি 50 হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে ৷ নির্যাতিতাকে সাহায্য হিসেবে 4 লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত ৷
নাবালিকার যৌন নির্যাতনে 7 বছরের কারাদণ্ড: জলপাইগুড়ি বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিন্টু সুর এদিন আরও একটি যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত মামলার রায় দেন ৷ পকসো আদালতের বিশেষ আইনজীবী দেবাশিস দত্ত জানান, জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় এই মামালাটি দায়ের হয় 2016 সালের 5 অক্টোবর ৷ অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার মা ৷
পুলিশের কাছে নির্যাতিতার মা অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন বাড়ির সামনে তাঁর মেয়ে খেলছিল ৷ প্রতিবেশী এক যুবক তাঁর মেয়েকে নিজের বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ করে ৷ প্রায় ন’বছর পর এই মামলার সাজা ঘোষণা হল ৷ আসামিকে 7 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক ৷ এখানেও নির্যাতিতাকে সাহায্যের জন্য চার লক্ষ টাকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
আইনজীবী দেবাশিস দত্ত জানান, আসামির বাড়িতে চারজন ছোট শিশু রয়েছে ৷ তাদের দেখার কেউ নেই ৷ সেই কারণে কম সাজা দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল আসামির তরফে ৷ তাই আদালত আসামিকে সর্বনিম্ন সাজা দিয়েছে ৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে জানান, এই বছরের একদিনে দু’টি মামলায় সাজা ঘোষণা হল । 2025 সালে চারটি মামলায় সাজা ঘোষণা হল ।
কোচবিহারে নাবালিকা ধর্ষণে 20 বছরের কারাদণ্ড: এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় এক ব্যক্তিকে 20 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও 20 হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিল মাথাভাঙা আদালত । বুধবার মাথাভাঙার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক রাজেশ তামাং এই সাজা ঘোষণা করেন । জরিমানা অনাদায়ে আরও 6 মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত । পাশাপাশি নির্যাতিতার পরিবারকে 5 লক্ষ টাকা সাহায্য করার নির্দেশ আদালত দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার সরকারি আইনজীবী আবু ফাত্তাহ হক ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, 2018 সালে মাথাভাঙা-2 ব্লকের ঘোকসাডাঙ্গায় গ্যাসের কানেকশন দেওয়ার নাম করে পবিত্র অধিকারী নামে ওই আসামি এক নাবালিকাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে নদীর পাড়ে ধর্ষণ করে । পরদিন ওই নির্যাতিতার পরিবারের তরফে পবিত্র অধিকারীর নামে ঘোকসাডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করে ।
অভিযোগ দায়ের হতেই পুলিশ অভিযুক্ত পবিত্র অধিকারীকে গ্রেফতার করে । 2018 সালের পর থেকে অভিযুক্ত জেল হেফাজতেই ছিল । দীর্ঘ ছ’বছর ধরে মামলা চলার পর বুধবার সাজা ঘোষণা হল ৷