বানতলা, 2 ফেব্রুয়ারি: বানতলায় লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার ট্যানারিতে বর্জ্য পরিষ্কার করতে নেমে প্রাণ গেল তিনজন শ্রমিকের ৷ রবিবার বানতলার চর্মনগরীর ভিতরে চামড়ার বর্জ্য মিশ্রত নিকাশি ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে । সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞার পরও এই ঘটনা কীভাবে ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷
সূত্রের খবর, চামড়া ধোওয়ার রাসায়নিক মিশ্রিত জল জমেছিল ওই ট্যাঙ্কে । কেএমডিএ-এর উদ্যোগে তা পরিষ্কারের কাজ চলছিল । বর্জ্য মিশ্রিত তরলে পড়ে যান হাসি শেখ, ফারজেম শেখ ও সুমন সর্দার নামে তিনজন শ্রমিক ৷ প্রথম দু'জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদে ৷ আর সুমনের বাড়ি উত্তর 24 পরগনায় বলে জানা গিয়েছে ।
ঘটনাস্থলে গিয়েছে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ । পুলিশের অনুমান, চামড়ার বর্জ্যের গন্ধে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজন শ্রমিকের । স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অনেক দিন ধরেই অপরিষ্কার অবস্থায় পড়ে রয়েছে ট্যাঙ্কটি । এই ট্যাঙ্কে মূলত চামড়া ধোওয়ার জল এসে জমে । সেখানে নামতেই এই বিপদ ঘটে । সূত্রের খবর, ট্যাঙ্কে নেমে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন ওই তিনজন শ্রমিক । তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ৷
কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার অফিসার ইনচার্জ দীপঙ্কর বিশ্বাস জানান, "ইতিমধ্যেই তিনজন শ্রমিককে আমরা উদ্ধার করেছি । ময়নাতদন্তের জন্য দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে । প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ম্যানহোলের মধ্যে বিষাক্ত গ্যাস থাকার কারণে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই তিনজন শ্রমিকের ।"
বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ ওঠে, পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না করেই শ্রমিকদের নামানো হয় এই ধরনের ম্যানহোল বা ট্যাঙ্কে । তাতে প্রাণের ঝুঁকি থাকে । কলকাতা-সহ দেশের 6টি শহরে ম্যানহোলে শ্রমিক নামিয়ে কাজ করানো নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট । ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং পুরোপুরি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । বিশেষ ক্ষেত্রে কোনও সাফাই কর্মীকে দিয়ে এই কাজ করাতে হলে বেশকিছু নির্দেশিকা মানতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷ প্রশ্ন উঠছে, আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, কোনও নির্দেশিকা না মেনে, কীভাবে লেদার কমপ্লেক্সে এই শ্রমিকদের নিকাশি নালায় নামানো হয়েছিল ?