পুরুলিয়া, 14 মে : লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাওড়া থেকে ফিরে এসেছেন । কিন্তু, পরিবার ও আশপাশের বাসিন্দাদের কথা ভেবে ঘরে ফেরেননি । গ্রামের অদূরে "নির্মল বাংলা"-র এক পরিত্যক্ত শৌচালয়েই কোয়ারানটিনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বান্দোয়ানের কুচিয়া গ্রামের মহাদেব সিং ৷ খাবার থেকে প্রয়োজনীয় সবকিছু দূর থেকেই দিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা ৷ আর এভাবেই কাটিয়ে দিলেন ছ'দিন ৷
কয়েকমাস আগে হাওড়ায় শ্রমিকের কাজ করতে যান মহাদেব সিং ৷ এরপর লকডাউন জারি হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় কাজ ৷ যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় ৷ দিন যত যায় সমস্যা ততই বাড়তে থাকে ৷ টাকা পয়সাও প্রায় শেষ হয়ে যায় ৷ উপায় না পেয়ে গত বুধবার এক বন্ধুর সাইকেলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন ৷ গত শুক্রবার বান্দোয়ানের কুচিয়া গ্রামে পৌঁছান ৷ তবে বাড়িতে যাননি ৷ আশ্রয় নেন নির্মল বাংলার পরিত্যক্ত শৌচাগারে ৷ কারণ বাড়িতে দুটি মাত্র মাটির ঘর । যেখানে থাকেন বাবা-মা , দুই বোন , স্ত্রী ও এক মেয়ে ৷
মহাদেব সিং বলেন, "প্রায় 6 দিন ধরে নির্মল বাংলার এই শৌচালয়ে কোয়ারানটিনে থাকতে হচ্ছে ৷ কারণ বাড়িতে থাকার ঘর নেই ৷ দুটি মাত্র ঘর রয়েছে ৷ সেখানে পরিবারের 6 সদস্য থাকেন ৷ বাড়িতে থাকলে সমস্যা হতে পারে পরিবারের সদস্যদের ও গ্রামবাসীদের ৷ তাই সচেতনতার কথা ভেবে গ্রামের অদূরে এই ফাঁকা মাঠের পরিত্যক্ত শৌচালয়েই কোয়ারানটিনে রয়েছি ৷ " তিনি আরও বলেন, " প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিস বাড়ির লোকেরাই দূর থেকে দিয়ে যায় ৷ তা দিয়েই দিন কাটাচ্ছি ৷ তবে ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর এবিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ৷ "
মহাদেববাবুর বাবা রবিন সিং বলেন, "ছেলের এই অবস্থা দেখে সত্যিই কষ্ট হয় ৷ কিন্তু কিছু উপায়ও নেই ৷ ছেলের যা যা দরকার পড়ে আমরা দূর থেকে দিয়ে আসি ৷ কেউই সেখানে যান না ৷ প্রশাসন যদি ছেলের জন্য কিছু ব্যবস্থা করে তাহলে খুবই উপকৃত হতাম ৷ "