পুরুলিয়া, 9 এপ্রিল: কুস্তাউরের পর এবার পুরুলিয়ার মুরি রেল শাখার কোটশিলা রেল স্টেশনে 'রেল রোকো' অন্দোলনে সামিল হয় আদিবাসী কুড়মি সমাজ । যার জেরে রবিবার দুপুর থেকে ওই শাখায় রেল চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে । যদিও কয়েক ঘণ্টার মধ্য়ে কুস্তাউর থেকে আন্দোলন প্রত্য়াহার করে নিলেও কোটশিলা থেকে আন্দোলন প্রত্যাহার করতে নারাজ কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন।
আদিবাসী কুড়মি সমাজের পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল কোটশিলা রেল স্টেশনে রেল রোকো আন্দোলনে নামবে তারা। সেই মতো সেখানে এদিন জমায়েত হন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। এরই মধ্যে কুস্তাউরে রেল রোকো আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাতো। কিন্তু কোটশিলায় উপস্থিত কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন আন্দোলন প্রত্যাহার করতে রাজি হননি বলেই খবর। শেষমেষ এদিন দুপুর থেকে কোটশিলা রেল স্টেশনেও অবরোধ চলতে থাকে।
সেখানে উপস্থিত কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজনদের সঙ্গে আলোচনাতেও বসেন অজিত প্রসাদ মাহাতো। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার পর এই অবরোধ আন্দোলনকে সমর্থন করেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, "মানুষের আবেগকে ধরে রাখা যায় না। এখানে মানুষ জমায়েত হয়েছেন। তারা আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। সিআরআই রিপোর্টের উপর কমেন্ট জাস্টিফিকেশন পাঠানোর নামে দ্বিচারিতা ও টালবাহানা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার । এই দাবিকে সামনে রেখেই মানুষ এখানে রেল অবরোধ আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। এখানে আন্দোলন চলছে, চলবে।"
তফশিলি উপজাতির মর্যাদা-সহ বেশ কয়েকটি দাবিতে কুড়মি সম্প্রদায়ের পাঁচ দিনের দীর্ঘ রেল অবরোধের ফলে ইতিমধ্য়ে কমপক্ষে 500টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে ৷ এদিন পুরুলিয়া জেলার কুস্তাউর স্টেশন থেকে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হলেও, এক ঘণ্টার মধ্যে ফের কোটশিলায় শুরু হয় আন্দোলন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কুস্তাউরে আন্দোলন তুলে নেওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে পুরুলিয়া জেলার কোটশিলা স্টেশনে দুপুর সাড়ে 12টা নাগাদ নতুন করে রেল অবরোধ শুরু হয়। অন্য়দিকে, খেমাসুলির এক কুড়মি নেতা জানিয়েছেন, রাত 1টা থেকে ভোর 5টা এবং সকালে 10টা থেকে বিকেল 3টে পর্যন্ত অবরোধ শিথিল করা হবে। অজিত মাহাতো বলান, "আমাদের দাবি এখনও মানা হয়নি ৷ রাজ্য়ের মুখ্য সচিবের সঙ্গে সোমবার আমাদের বৈঠক হওয়ার কথা ৷ সেই বৈঠকের সিদ্ধান্তের উপরই সম্পূর্ণভাবে অবরোধ তুলে নেওয়া হবে কি না, তা নির্ভর করবে ৷"
আরও পড়ুন: 'মানুষ আসবে মানুষ যাবে, চেতলায় নতুন ফিরহাদ তৈরি হবে', ববির মন্তব্যে জল্পনা
প্রসঙ্গত, দুটি রেলওয়ে স্টেশনে অবরোধের ফলে 5 এপ্রিল থেকে প্রায় 500টি এক্সপ্রেস এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে ৷ যার ফলে কয়েক হাজার যাত্রীকে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে ৷ নয়াদিল্লি-ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস, হাওড়া-পুনে দুরন্ত এক্সপ্রেস, হাওড়া-আমেদাবাদ এক্সপ্রেস-সহ গত পাঁচ দিনে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সংযোগকারী সুপার ফাস্ট এবং এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে।