পুরুলিয়া, ৭ জুন : সম্প্রতি লকডাউন শিথিল হয়েছে৷ তবু, ভাগ্যের তালা খোলেনি পুরুলিয়ার হোটেল ও লজ ব্যবসায়ীদের । একদিকে কোরোনা আবহে দেখা নেই পর্যটকদের । অন্যদিকে বন্ধ বিয়ে, অন্নপ্রাশনের মতো সামাজিক অনুষ্ঠান । ফলে হোটেল ও লজ বুকিংও বন্ধ রয়েছে দু'মাসের বেশি সময় ধরে । সব মিলিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পুরুলিয়ার হোটেল ও লজ ব্যবসায়ীরা । বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা কেউ কেউ ব্যবসা গোটানোর কথা পর্যন্ত ভাবছেন৷ যদিও প্রশাসন পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছে৷
কোরোনার জেরে দু'মাসের বেশি সময় ধরে চলছে লকডাউন৷ সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই অন্যতম অস্ত্র৷ যার ফলে সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী বন্ধ হয় যাবতীয় হোটেল ও লজ৷ সম্প্রতি লকডাউন শিথিল হলেও একইরকম অন্ধকারে পুরুলিয়ার হোটেল ও লজ ব্য়বসায়ীরা৷ প্রকৃতি অপার সম্ভার নিয়ে অপেক্ষা করলেও কোরোনা আতঙ্কে দেখা নেই পর্যটকদের ৷ অন্য়দিকে, বিয়ে ও অন্নপ্রাশনের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানের ভাড়া হচ্ছে না৷ অথচ কর্মীদের বেতন, বিদ্যুতের বিল, হোটেলের লাইসেন্স রিনিউ করা সহ সমস্ত খরচ খরচ বহন করতে হচ্ছে হোটেল ও লজ মালিকদের । অনেকেই ব্যাঙ্ক-লোন নিয়ে হোটেল ও লজ ব্যবসা শুরু করেন৷ এদিকে ঋণ শোধ দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা । বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে বলে জানাচ্ছেন হোটেল ও লজের মালিকরা । কোরোনা-আতঙ্ক কাটিয়ে কবে সবকিছু ফের স্বাভাবিক হবে, সেদিকে তাকিয়ে তাঁরা ।
পুরুলিয়ার বান্দোয়ান এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী মহাদেব ব্যানার্জি, পুরুলিয়া শহরের এক হোটেল ব্যবসায়ী গোপাল কুমার লাটার বক্তব্য মোটামুটি এক৷ তাঁদের কথায়, লোকডাউনের রেশ এখনও কাটেনি । অন্যান্য বছর এই সময় পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা থাকে পুরুলিয়া । কিন্ত, কোরোনা-আবহে পর্যটকশূন্য জেলা ।
তাঁরা আরও জানান, বন্ধ রয়েছে বিয়ে, অন্নপ্রাশনের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানগুলিও । ফলে খাঁ খাঁ করছে হোটেল, লজ ও রেস্তরাঁগুলি । অথচ কর্মীদের বেতন, বিদ্যুতের বিল, হোটেল লাইসেন্স রিনিউ করার খরচ, সবটাই বহন করতে হচ্ছে । এরকম চলতে থাকলে হোটেল ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে । কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বুঝতে পারছি না।
ব্যবসায়ীরা চূড়ান্ত হতাশায় ভুগলেও আশ্বস্ত করছেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়৷
তিনি বলেন, "জেলার হোটেল, লজ ব্যবসায়ীদের পাশে রয়েছি আমরা । কোরোনা আবহে পরিস্থিতি খারাপ থাকায় পর্যটকেরা আসছেন না জেলায় । একইসঙ্গে সামাজিক অনুষ্ঠানগুলি বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা । কিন্তু, বেশিদিন এমন চলবে না । পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পর্যটকদের স্বাগত জানানো হবে l বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে, প্রচার চালানো হবে । পুরুলিয়া জেলার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও হোটেল ব্যবসা আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলেই আমাদের আশা ।"