হলদিয়া, 25 জুলাই: পশ্চিমবঙ্গে একুশের ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence)-এর ঘটনায় সিবিআই (CBI)-এর সামনে হাজিরা এড়ালেন তৃণমূল কংগ্রেসের তিন দাপুটে নেতা ৷ এঁরা হলেন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম-1 সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহের (Abu Taher), শেখ খুশনবি ও শেখ আমানুর ৷ রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (Central Bureau of Investigation) তরফে তাঁদের নোটিশ পাঠানো হয় ৷ তাতে বলা হয়, সোমবার সকাল 11টায় সংশ্লিষ্ট তিন নেতাকে হলদিয়া টাউনশিপে সিবিআই-এর অস্থায়ী কার্যালয়ে হাজিরা দিতে হবে ৷ প্রসঙ্গত, বিজেপি-র অভিযোগ, একুশের ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন হন দলের কর্মী তথা নন্দীগ্রামের বাসিন্দা দেবব্রত মাইতি ৷ সেই ঘটনাতেই সোমবার তিন তৃণমূল নেতাকে তলব করা হয়েছিল ৷
দেবব্রত মাইতির পরিবারের সদস্যদের দাবি, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরই তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয় ৷ এর জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকেই দায়ী করেছেন তাঁরা ৷ এই ঘটনায় ইতিমধ্য়েই 12 জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই ৷ সূত্রের দাবি, তদন্তের কাজেই আবু তাহের-সহ অন্যদের জেরা করতে চান কেন্দ্রীয় গোয়ন্দারা ৷ সেই কারণেই সোমবার তাঁদের ডেকে পাঠানো হয় ৷
ঘটনা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে আবু তাহের বলেন, "নোটিশ পেয়েছি ৷ কিন্তু যাব না ৷ কারণ, আমি গোপন সূত্রে খবর পেরেছি, সিবিআই আধিকারিকরা হলদিয়া নিম্ন আদালতে আমাদের গ্রেফতারি পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করেছেন ৷ আগেও এভাবে জিজ্ঞাসাবাদের অজুহাতে ডেকে পাঠিয়ে 12 জনকে গ্রেফতার করেছেন ওঁরা ৷ এখন তাঁদের জেলে ভরে রাখা হয়েছে ৷ আমি কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলাম ৷ কিন্তু, সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি ৷ ওঁরা জিজ্ঞাসাবাদের নাম করে ডেকে আমাদেরও গ্রেফতার করতে পারেন ৷ সেই কারণেই আমি সিবিআই-এর কাছে হাজিরা দেব না ৷ আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করব ৷ এগুলি সবই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ৷ দেবব্রত মাইতি মারা গিয়েছেন জানি ৷ কিন্তু, তাঁকে আমি চিনি না ৷ তাঁর বাড়ি কোথায় তাও জানি না ৷"
এদিকে, এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতার মুখে এমন সব কথা শুনে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না স্থানীয় বিজেপি নেতা ও কর্মীরা ৷ যদিও প্রকাশ্য়ে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না ৷ দলের সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি (তমলুক) প্রলয় পাল যেমন বলেন, "এটি বিচারাধীন বিষয় ৷ তাই এ নিয়ে কোনও কথা বলব না ৷ তা উচিতও হবে না ৷ আমরা চাই, আইন আইনের পথে চলুক ৷ যদি তিনি (আবু তাহের) কোনও অন্য়ায় না-করেন থাকেন, তাহলে তাঁর সিবিআই-এর সামনে হাজিরা দেওয়া উচিত ৷ আর যদি তিনি হাজিরার নির্দেশ এড়িয়ে যান, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা উচিত ৷ বিজেপি পরিকল্পিতভাবে কিছুই করছে না ৷ বিজেপি আইনের দ্বারস্থ হয়েছে ৷ আইন যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, বিজেপি তা মাথা পেতে নেবে ৷"