রামনগর (পূর্ব মেদিনীপুর), 19 জুলাই : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে একটি কার্টুন । ক্যাপশনে লেখা, 'পুঁতেছিলাম ঘাস ,ফিরে এল বাঁশ' । সোশাল মিডিয়ায় এই ছবি ফরওয়ার্ড করেন এক সরকারি আধিকারিক । নাম প্রদীপকুমার হীরা । বিষয়টি নজরে আসতেই তাঁকে শোকজ় করেন BDO মনোজ কাঞ্জিলাল । ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর 2 নম্বর ব্লকের ।
প্রদীপবাবু রামনগর 2 নম্বর ব্লকের সাব অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়র । সম্প্রতি তিনি ওই কার্টুন নিজের সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন । দ্রুত সেই পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে । তা নজরে আসে BDO-র । ব্যবস্থা নেন তিনি । বিষয়টি জানান কাঁথি মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য ও জেলাশাসক পার্থ ঘোষকে । সোমবার শোকজ় করা হয় প্রদীপবাবুকে । জানতে চাওয়া হয়, 'একজন সরকারি আধিকারিক হয়েও কী করে এরকম পোস্ট করেন ?' বুধবার এর জবাব দেন প্রদীপকুমার হীরা । লেখেন, "কার্টুনটি আমার আঁকা নয় । একজন পাঠিয়েছিল । আমি ফরওয়ার্ড করেছি । মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে কিছু লিখিনি ।"
চলতি বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিম পোস্ট করায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন হাওড়ার দাশনগর অঞ্চলের BJP যুব মোর্চা নেত্রী প্রিয়াঙ্কা শর্মা । ৯ মে ফেসবুকে একটি মিম পোস্ট করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা । তাঁর বিরুদ্ধে দাশনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিভাস হাজরা । এর ভিত্তিতে প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেপ্তার করে দাশনগর থানার পুলিশ । পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি ছাড়া পান ।
2012 সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁর "অপরাধ" ছিল তিনি তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টের টাইমলাইনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি কার্টুন পোস্ট করেছিলেন। এজন্য পুলিশ অম্বিকেশবাবুকে গ্রেপ্তার করেছিল। একই অভিযোগে পুলিশ অম্বিকেশবাবুর বন্ধু সুব্রত সেনগুপ্তকেও গ্রেপ্তার করেছিল। এই ঘটনায় রাজ্য মানবাধিকার কমিশন অম্বিকেশবাবু ও সুব্রতবাবুকে 50000 টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকারকে। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই নির্দেশ মানেনি। তারপর বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অম্বিকেশবাবু। মামলায় তিনি জেতেন। অম্বিকেশবাবু ও সুব্রতবাবুকে মোট 75000 টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকারকে ।