কাঁথি (পূর্ব মেদিনীপুর), 22 মার্চ: তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) ও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা (Bengal Minister Shashi Panja)-সহ জাগোবাংলার সম্পাদকের বিরুদ্ধে বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি মহাকুমা আদালতে মামলা দায়ের করলেন সৌমেন্দু অধিকারী (Soumendu Adhikari) । রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাইয়ের দাবি, 72 ঘণ্টার মধ্যে নোটিশের উত্তর না দেওয়ায় মামলা দায়ের করা হল । বুধবার সকালে কাঁথি আদালতে উপস্থিত হন সৌমেন্দু অধিকারী ।
সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, "আমার দাদা শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন । তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাকে 72 ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়ার জন্য নোটিশ করেছিলাম । কোনও উত্তর দেননি তাঁরা । তাই আদালতে মামলা দায়ের করলাম। আইনিভাবে মামলার মোকাবিলা করব ।’’
সৌমেন্দুর আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কাঁথি দেওয়ানি আদালতে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে । রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও জাগোবাংলা (Jagobangla) পত্রিকার সম্পাদকের নামে মামলা দায়ের হয়েছে । তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে । কুণাল ঘোষের আইনজীবী নোটিশ পাঠিয়েছিলেন, এমন উত্তর পাইনি বলে মামলা দায়ের হল ।’’
বস্তুত, সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে স্কুলের গ্রুপ-সি কর্মীর বেশ কয়েকজনের চাকরি যায় ৷ সেই তালিকায় পূর্ব মেদিনীপুরের 455 জনের চাকরি বাতিল হয় । কাঁথি ও এগরা মহাকুমা 55 জনের চাকরি বাতিল হয় । 13 মার্চ তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ নিজের ফেসবুকে দাবি করেছিলেন যে ওই চাকরিহারাদের নাম সুপারিশ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ তাই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের আওতায় শুভেন্দুকেও আনা উচিত ৷
পরদিন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র জাগোবাংলার প্রথম পাতায় ‘গ্রেফতার চাই শুভেন্দু অধিকারীর’ এই শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপা হয় । তাতেও বক্তব্য ছিল কুণালের । এই প্রতিবেদনের জেরে বিরোধী দলনেতার মানহানি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সৌমেন্দু অধিকারী ৷ এরপর আইনজীবী মারফত কুণাল ঘোষকে আইনি নোটিশ পাঠান তিনি । পাশাপাশি জাগোবাংলা কর্তৃপক্ষকেও নোটিশ পাঠানো হয় । 72 ঘণ্টার মধ্যে বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রমাণ দাখিলের কথা উল্লেখ করা হয় ওই নোটিশে । তা না হলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয় ।
পালটা 15 মার্চ কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন । তিনি দাবি করেন, শুভেন্দু অধিকারীর সুপারিশে 55 জনের চাকরি হয়েছিল । ওই 55 জনের অন্যতম সঞ্জীব শুকুল বিরোধী দলনেতার অত্যন্ত কাছের লোক । পালটা সৌমেন্দু অধিকারীর আইনজীবী মারফত নোটিশ পাঠান রাজ্যের মন্ত্রীকে ।
সৌমেন্দু অধিকারীর দাবি, শশীর এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কল্পনাপ্রসূত । এতে শুভেন্দু অধিকারীর মানহানি হয়েছে । আইনি নোটিসে এই মিথ্যে বিবৃতির জন্য শশী পাঁজাকে 72 ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার কথা বলা হয়েছে ও সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে মিথ্যে বিবৃতি সংশোধন করার কথাও বলা হয় । অন্যথায় আইনানুগ পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ।
যদিও এই বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে জেলা নেতৃত্বদের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি । রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা ও তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর মানহানির অভিযোগ নিয়ে কুণালকে আইনি নোটিশ সৌমেন্দুর