হলদিয়া , 11 ফেব্রুয়ারি : হলদিয়ায় মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলদিয়ার ভবানীপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর ও সিভিক ভলান্টিয়র । গতকাল তাদের গ্রেপ্তার করে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয় । বিচারক তাদের 14 দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন ।
গতবছর ভবানীপুর থানায় বেআইনি মদের ব্যবসার অপরাধে ওই মহিলার স্বামীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল । সে কারণে মামলা সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য তিনি ভবানীপুর থানায় হাজির হয়েছিলেন ওই মহিলা । অভিযোগ, সেই সময় সাহায্য করার অজুহাতে তাঁর ফোন নাম্বার নেন ভবানীপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর মুকুল মল্লিক । অভিযোগ, এরপর থেকে ওই মহিলাকে ফোনে হুমকি দিতে শুরু করে মুকুল ৷ মহিলার অভিযোগ, স্বামীকে আরও বড় মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে মুকুল ।
মহিলার আরও অভিযোগ, তাঁকে কোয়ার্টারে আসতে বাধ্য করেন অভিযুক্ত আধিকারিক । অভিযোগ, তিনি তা অস্বীকার করলে সিভিক ভলান্টিয়র গৌরহরি দাস অধিকারীকে দিয়ে জোর করে ভয় দেখিয়ে তাঁকে কোয়াটারে তুলে আনা হয় । আর সেখানেই দিনের পর দিন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চলতে থাকে । ওই মহিলা যাতে কোনওভাবেই কারও কাছে মুখ না খুলতে পারে তার জন্য সমস্ত ঘটনার ছবি মোবাইলে ভিডিয়ো রেকর্ড করে রাখতেন পুলিশ অফিসার মুকুল মল্লিক । মুখ খুললেই সেই ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিত । দিনের পর দিন নিজের উপর ঘটে যাওয়া এই অত্যাচারের কথা চেপে রাখতে না পেরে তাঁর স্বামীকে জানায় । তারপরই পাঁচ মাস আগে তারা ওই পুলিশ আধিকারিক ও সিভিক ভলান্টিয়রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন । থানায় অভিযোগ হওয়ার পর থেকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় । প্রমাণ পাওয়ার পর গতকাল ওই দু'জনকে ভবানীপুর থানার দেভোগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় । গতকাল তাদের দু'জনকেই হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে মুকুল মল্লিককে পাঁচ দিনের পুলিশি হেপাজত এবং গৌর হরি দাস অধিকারীকে 14 দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন । আজ অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার মুকুল মল্লিকের হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষা করা হবে।
এই বিষয়ে হলদিয়ার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তন্ময় মুখার্জি জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত মুকুল মল্লিককে আদালতের কাছে সাত দিনের পুলিশ-হেপাজত চাওয়া হলে বিচারক পাঁচদিনের হেপাজত মঞ্জুর করেন । আজ ধৃতের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে । যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেখানে ঘটনার সাথে আধিকারিকের জড়িত থাকার একাধিক প্রমাণ মিলেছে । যে কারণে তাকে গতকাল গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হয় ।