মেচেদা (পূর্ব মেদিনীপুর), 25 মার্চ : এতদিন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহকে তুই সম্বোধন করে বলতে শোনা গিয়েছে ৷ তার সমালোচনা করলেও, তৃণমূল নেত্রীকে কোনওদিনই অসম্মান করে কোনও কথা বলেনি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ কিন্তু, আজ প্রথমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুই করে সম্বোধন করলেন অমিত শাহ ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদার জনসভা থেকে শাহ বলেন, ‘‘দিদি তোর খেলায় আমরা ভয় পাই না ৷’’
আজ প্রথম দফার নির্বাচন কেন্দ্রগুলিতে শেষ প্রচারের দিন ছিল ৷ তার আগে গোটা জঙ্গলমহলে প্রচারের ঝড় তুললেন বিজেপির শীর্ষ নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ তেমনি মেচেদার জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নানা ইস্যুতে নিশানা করলেন তিনি ৷ যেখানে আমফান দুর্নীতি থেকে সিন্ডিকেট রাজ এমনকি, মমতার ‘খেলা হবে’ স্লোগানকেও নিশানা করলেন শাহ ৷ আর সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুই সম্বোধনে বিঁধলেন তিনি ৷ এদিন অমিত শাহ বলেন, ‘‘দিদি বলে খেলা হবে ৷ দিদি কি বিজেপিকে ভয় দেখাতে চাইছে? দিদি, আমরা তোর খেলায় ভয় পাই না ৷’’
এদিনের জনসভায় অমিত শাহ অভিযোগ করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্য়মন্ত্রী হওয়ার পর আর দিদি নেই ৷ তিনি মুখ্য়মন্ত্রী হওয়ার আগে বাংলার মানুষের দিদি ছিলেন ৷ ভোটে জিতে দিদি ভাইপোর পিসি হয়ে গিয়েছেন ৷ আর তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার উন্নয়নের বদলে, ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী করতে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন শাহ ৷ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে এদিন সিন্ডিকেট ও মাফিয়া রাজ নিয়েও তৃণমূলকে নিশানা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৷ তাঁর অভিযোগ , জঙ্গলমহলের অধিকাংশ মানুষ আজ তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত ৷ কারণ সবকিছুতে ভাইপোর তোলাবাজি আর সিন্ডিকেট রাজ চলছে ৷
পাশাপাশি বিজেপির ইস্তেহারে উল্লেখিত এইমস হাসপাতালের একটি জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া অঞ্চলে হবে বলে এদিন জানান অমিত শাহ ৷ যেখানে জঙ্গলমহল থেকে উপযুক্ত দাম দিয়ে সরকার সাধারণ মানুষের থেকে জমি কিনবে বলে এদিন প্রতিশ্রুতি দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৷ সেই সঙ্গে বন্দর এলাকার উন্নয়ন থেকে মৎস্যজীবী ও কৃষকদের জন্য 3 লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বীমার কথাও উল্লেখ করেন ৷
আরও পড়ুন : ভোটের পারদ বাড়িয়ে বাকযুদ্ধে শাহ-মমতা
পাশাপাশি শেষ দফার প্রচারে অনুপ্রবেশকেও একটা বড় ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেছেন অমিত শাহ ৷ নাম না করলেও, ঘুরিয়ে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগের বিষয়টিকে তুলে ধরলেন তিনি ৷ শাহর অভিযোগ জঙ্গলমহল শুধু নয়, গোটা বাংলার মানুষের অধিকারে ভাগ বসিয়েছে এই অনুপ্রবেশকারীরা ৷ সে জীবিকা হোক বা খাদ্য সংস্থান, এমনকী বাসস্থানের ক্ষেত্রেও অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার মানুষের অধিকারকে খর্ব করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি ৷ আর এর পিছনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত রয়েছে বলে তোপ দাগেন শাহ ৷ তাই এই অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াতে বিজেপির সরকারই একমাত্র উপায় বলে এদিন দাবি করেন অমিত শাহ ৷