পূর্বস্থলী, 21 জুন : প্রেমিকা মেসেজ করেছিল, "তুমি যদি আমাকে ভালোবাসো তাহলে আমার জন্য মরো । " আর এই মেসেজ পাওয়ার পরেই চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হল এক যুবক । এমনই অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার । মৃত যুবকের নাম সুজিত দাস (২৬) । তাঁর বাড়ি পূর্বস্থলী থানার যজ্ঞেশ্বরপুর গ্রামে । আজ সকালে স্থানীয় বেলেরহাট স্টেশন সংলগ্ন রেললাইনের ধার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর তিনেক ধরে স্থানীয় এক যুবতির সঙ্গে সুজিতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল । গতকাল বিকেলের দিকে সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সুজিতের প্রেমিকা তাঁকে মেসেজ করে সে আর সুজিতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় না । এই ঘটনা জানার পর সুজিত তাঁর পরিবারকে ঘটনার কথা জানান । এরপর সুজিত এবং সুজিতের মা বারবার যুবতির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন । কিন্তু সে কোনওরকম উত্তর দেয়নি ।
এরপর গতকাল রাতে যুবতি সুজিতকে ডেকে পাঠায় । মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সুজিত বাড়ি ফেরার পরে যুবতি তাঁকে মেসেজ করে বলে, যদি তাকে সত্যি ভালোবাসে, তাহলে সুজিত যেন মৃত্যুকে বেছে নেয় । সুজিতের পরিবারের অভিযোগ, এরপরই আজ ভোরের দিকে রেললাইনে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন সুজিত ।
সুজিতের দিদি কাকলি কুণ্ডু বলেন, "ভাই মাকে বলে মেয়েটার সঙ্গে আমার রিলেশন আছে। মেয়েটাকে ফোন করছি মেয়েটা ফোন তুলছে না। এরপর মা গতকাল বিকালে যুবতির বাড়িতে যায় । কিন্তু মেয়েটার মা বাবা আমার মাকে পাত্তা দেয়নি। ফলে মা ফিরে চলে আসে। এদিকে মেয়েটা আমার মাকে জানায় আমি স্টেশনে নেমে আপনার ছেলেকে ফোন করব। এরপর কী হয়েছে আর জানি না । পরে ভাইয়ের ফোনে মেয়েটি মেসেজ পাঠায়, আমাকে যদি ভালোবাসো তাহলে তুমি মরো । এরপরই ভাই চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় । আমরা মেয়েটির কঠিন শাস্তি চাই । এমন কী মেয়েটির বাড়ি আমার ভাইয়ের টাকা দিয়ে করা হয়েছে । সেই বাড়ি ও যেন পুলিশ সিল করে দেয় ।"
সুজিতের বন্ধু ভৈরব কুণ্ডু বলেন, রাতের দিকে মেয়েটি সুজিতকে ফোন করে দেখা করতে বলে। সুজিত রাতেই তার সঙ্গে দেখা করতে যায়। পরে সুজিত বাড়ি ফেরার পরে মেয়েটি তাকে মেসেজ করে জানায়, তোর মতো ছেলের আমার প্রয়োজন নেই । তুই মরে গেলে আমি খুশি হই। তুই যদি সত্যিই ভালোবেসে থাকিস তাহলে তুই মরে যা। এরপরেই সুজিত সুইসাইড নোটে লিখে যায়, 'ওই মেয়েটিকে আমি খুব ভালবাসতাম । ওকে আমি ছাড়তে পারলাম না । তাই আমি মরে গেলাম ।